সংবাদ সংস্থা মুম্বই: একপ্রকার ইতিহাস গড়লেন দীপিকা পাড়ুকোন। বলিউডের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি এ বার পৌঁছে গেলেন হলিউড ‘ওয়াক অফ ফেম’-এ ।আর তা একমাত্র ভারতীয় মহিলার পরিচয় নিয়েই। হ্যাঁ, এই গর্বের জায়গাটিতেই দীপিকার নাম জুড়ল এমিলি ব্লান্ট, টিমোথি শ্যালামে, র্যা চেল ম্যাকঅ্যাডামস, রামি মালেকদের মতো তাবড় তাবড় বিশ্ববিখ্যাত হলিউডের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের সঙ্গে। বলাই বাহুল্য, বিশ্বদরবারে এই সম্মান ভারতীয় সিনেমার এক অনন্য স্বীকৃতি।
২০২৬ সালের ‘ওয়াক অফ ফেম ইডাকটিস’-দের তালিকায় দীপিকার নাম চূড়ান্ত হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় হলিউড বুলেভার্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা করা হয়। দীপিকার পাশাপাশি তালিকায় আছেন এমিলি ব্লান্ট, মারিও কোটিয়ার, ডেমি মুর, স্ট্যানলি টুচি, ক্রিস কলম্বাস, টিমোথি শ্যালামে সহ আরও অনেকে।
হলিউডে দীপিকার পরিচিতি মূলত XXX: দ্য রিটার্ন অফ জেন্ডার কেজ ছবির মাধ্যমে। কিন্তু আজকের এই স্বীকৃতি শুধুই ওই একটি ছবির জন্য নয়, বরং বিশ্ব সিনেমায় তাঁর স্থিতিশীলতা, স্টারডম ও সাংস্কৃতিক প্রভাব-এর স্বীকৃতিস্বরূপ।হলিউড বুলেভার্ডের ওয়াক অফ ফেম হল সেই রাস্তাটি, যেখানে ২৭০০-রও বেশি তারকা-নামের খোদাই মাটি গেঁথে আছে। একজন ‘তারকা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলেই তবেই এই তালিকায় নাম ওঠে। নিছক জনপ্রিয়তা নয়, প্রয়োজন প্রভাব, দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং গ্লোবাল কনট্রিবিউশন।
প্রতি বছর হলিউড চেম্বার অফ কমার্স-এর একটি সিলেকশন প্যানেল ২০০-৩০০ মনোনয়নের মধ্যে থেকে বেছে নেয় কিছু নাম। এবং সেই নামগুলি-ই ওয়াক অফ ফেমের জন্য চূড়ান্ত হয়। অনেকেরই ধারণা, টাকা দিলেই নাকি ‘ওয়াক অফ ফেম’-এ নাম ওঠে। সেটি একদমই ভুল!
নাম চূড়ান্ত হওয়ার পর যে টাকা দিতে হয় (85,000 ডলার বা আনুমানিক ৭৩ লক্ষ টাকা), সেটি কেবল স্টারটি তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণের খরচ—কোনও ‘বিক্রি’ নয়! এবং এই টাকা দিতে হয় স্রেফ একবার-ই।
দীপিকার এই প্রাপ্তি শুধু তাঁর একার নয়— গোটা দেশের, বিশেষ করে ভারতীয় মহিলাদের স্বপ্নপূরণের এক শক্তিশালী বার্তা। বলিউড পেরিয়ে এসে আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার যে রাস্তাটা তিনি তৈরি করেছেন, তা ভবিষ্যতের বহু শিল্পীকে অনুপ্রাণিত করবে। দীপিকার অনুরাগীদের মতে, বলিউড থেকে হলিউডের পাথরখচিত পথে দীপিকার এই ‘তারকা’ অর্জন নিছক ফ্রেমে বাঁধানোর মত ঘটনা নয়—এটি এক সংস্কৃতির জয়, এক মহিলার লড়াই, আর এক দেশের মুখ হয়ে ওঠার কাহিনি।
‘ওয়াক অফ ফেম’-এর তারাটি এখন শুধু দীপিকার নামই বহন করছে না—বহন করছে সম্ভাবনার ছাপ, ভারতের প্রতিভার আলোকরেখা।
