বলিউডের জনপ্রিয় কোরিওগ্রাফার ও পরিচালক ফারাহ খান নিজের পরিশ্রম আর প্রতিভার জোরে আজ ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সফল নাম। একের পর এক হিট কোরিওগ্রাফি এবং সিনেমা উপহার দিয়ে তিনি তৈরি করেছেন নিজের আলাদা জায়গা। কিন্তু সেই সাফল্যের পিছনে লুকিয়ে আছে কঠিন এক শৈশব আর অগণিত সংগ্রামের গল্প। সম্প্রতি সানিয়া মির্জার পডকাস্ট ‘সার্ভিং ইট আপ উইথ সানিয়া’-তে ফারাহ খোলামেলা ভাবে বললেন নিজের দারিদ্র্য, অনিশ্চয়তা এবং বলিউডে বহিরাগতদের প্রতি সহানুভূতির কথা।
ফারাহর কথায়, “আজও আমি অর্থ নিয়ে নিরাপত্তাহীন বোধ করি। আমার কাছে আর্থিক স্থিতি মানে মানসিক শান্তি। ছোটবেলায় দেখেছি, আমাদের বাবা খুব ধনী থেকে একেবারে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলেন। বহু বছর আমরা নুন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থায় বেঁচে ছিলাম। সেই কারণেই কাজ করার তাগিদটা আজও রয়ে গিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আজকাল সবাই নিজের একটা ‘স্ট্রাগল স্টোরি’ বানাতে চায়। অনেকেই যাদের আসলে তেমন কষ্টের অভিজ্ঞতা নেই, তারাও গল্প তৈরি করে। তবে আমি খুশি যে আমার সন্তানদের অন্তত এমন কোনও গল্প থাকবে না।”
সানিয়ার সঙ্গে কথোপকথনে ফারাহ খোলাখুলি বলেন, “আমি বুঝতে পারি, বাইরে থেকে আসা মানুষদের রাগটা কোথা থেকে আসে। তারা ভাড়ার টাকা জোগাড় করতে হিমশিম
খায়, তাই তারকাদের সন্তানদের ‘সংগ্রাম’ তাদের কাছে অনেকটাই তুচ্ছ মনে হয়। এই ক্ষোভটা বাস্তব।”
ছোটবেলায় নাচই ছিল ফারাহর একমাত্র আশ্রয়। কোনও প্রথাগত প্রশিক্ষণ না থাকলেও, বিদেশি মিউজিক ভিডিও দেখে নিজে নিজেই নাচ শিখেছিলেন তিনি। তারই ফল— ‘জো জিতা উওহি সিকন্দর’ (১৯৯২)-এর বিখ্যাত গান ‘পেহলা নশা’-র কোরিওগ্রাফি দিয়ে ফারহা পান প্রথম বড় সাফল্য। এরপর ‘এক পল কা জীনা’, ‘শিলা কি জওয়ানি’, ‘দেশি গার্ল’—এর মতো অসংখ্য হিট গানের সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে যায়।
পরিচালক হিসাবেও সমান সফল তিনি। ২০০৪ সালে ‘ম্যায় হুঁ না’ দিয়ে শুরু করে ‘ওম শান্তি ওম’ (২০০৭) এবং ‘হ্যাপি নিউ ইয়ার’ (২০১৪)-এর মতো ব্লকবাস্টার ছবি উপহার দিয়েছেন ফারাহ।
জীবনের উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতা আজও ফারাহকে মাটিতে রাখে। অর্থ, নিরাপত্তা আর সম্মানের জন্য লড়াই করা মানুষদের প্রতি তাঁর সহানুভূতি তাই স্বতঃসিদ্ধ। হয়তো সেই কারণেই ফারাহ কেবল সফল পরিচালক নন— মানুষ হিসাবেও তিনি একই রকম সফল।
