সংবাদ সংস্থা মুম্বই: হলিউডে পাড়ি দিলেন বিদ্যুত জামওয়াল! অভিনয়ের পাশাপাশি দুর্ধর্ষ সব স্টান্ট, অ্যাকশনে আগেই দর্শকমন জয় করেছেন, এবার সেই ফাইটিং স্পিরিট নিয়ে পা রাখলেন আন্তর্জাতিক ছবির বাজারে। জনপ্রিয় ভিডিও গেম সিরিজ ‘স্ট্রিট ফাইটার’-এর লাইভ অ্যাকশন রিমেক ছবিতে ‘ঢালসিম’ চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে—এই খবর সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে অনুরাগীদের মধ্যে।
বিদ্যুতের এন্ট্রির খবরে সিলমোহর দিয়েছে মার্কিন বিনোদন সংবাদমাধ্যম। ৪৪ বছর বয়সি এই বলিউড তারকা এবার হয়ে উঠবেন ধ্যানী, শক্তিশালী এবং আগুন-নিঃসরণকারী যোগী ধালসিম, যাঁর উপস্থিতি গেম দুনিয়ায় বরাবর এক সম্মানের নাম।
‘স্ট্রিট ফাইটার’-এর স্টারকাস্ট যেন রীতিমতো হলিউডের মার্শাল আর্ট মেলা!
অ্যান্ড্রু কোজি – রিউ (Ryu)
নোয়া সেন্টিনিও – কেন (Ken)
ক্যালিনা লিয়াং – চান-লি (Chun-Li)
ডেভিড ডাস্টম্যালচিয়ান – এম. বাইসন (M. Bison)
জেসন মোমোয়া – ব্ল্যাঙ্কা (Blanka)
অরভিল পেক – ভেগা (Vega)
অ্যান্ড্রু শুল্জ – ড্যান হিবিকি (Dan Hibiki)
রোমান রেইন্স – আকুমা (Akuma)
বিদ্যুত জামওয়াল – ধালসিম (Dhalsim)
জল্পনা চলছে যে, বিশ্বখ্যাত ডব্লিউ ডব্লিউ ই (WWE) তারকা কোডি রোডস-কে দেখা যেতে পারেন গিল (Guile) চরিত্রে। যদিও এখনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি।পরিচালনায় আছেন কিতাও সাকুরাই, যিনি ব্যাড ট্রিপ এবংআর্ডভার্ক-এর জন্য পরিচিত। অর্থাৎ, এখানে মার্শাল আর্ট আর পপ-কালচারের এক দুর্দান্ত মেলবন্ধন হতে চলেছে।

‘স্ট্রিট ফাইটার’ গেমিং দুনিয়া থেকে গ্লোবাল কাল্ট ফ্র্যাঞ্চাইজি। ক্যাপকম-এর এই লিজেন্ডারি ফাইটিং গেম প্রথম প্রকাশ পায় ১৯৮৭ সালে। এর মূল ভিত্তি ছিল এক আন্তর্জাতিক মার্শাল আর্ট প্রতিযোগিতা, যার পেছনে ছিল রহস্যময় ও দুষ্টু চরিত্র এম. বাইসন। এখনও পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ৫৫ মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে এই গেমের।
১৯৯৪ সালে হলিউড অ্যাকশন তারকা জঁ ক্লদ ভ্যান ডাম-কে নিয়ে তৈরি হয় প্রথম ‘স্ট্রিট ফাইটার’ ছবিটি, যা সমালোচকদের পছন্দ না হলেও বক্স অফিসে মোটামুটি সফল (৮২০ কোটি টাকা যায়) হয়েছিল। এবার আসছে এই ক্লাসিক গেমের আধুনিক, স্টার-স্টাডেড লাইভ অ্যাকশন রূপান্তর।
আরও পড়ুন: ‘আশিকি ৩’ ছবিতে আদিত্য-শ্রদ্ধাকে ফিরিয়ে আনছেন? বড় ঘোষণা করলেন পরিচালক মোহিত সুরি!
বিদ্যুত জামওয়াল শুরু করেছিলেন বলিউডে ২০১১ সালে ‘ফোর্স’ ছবির খলনায়ক হিসেবে, যেখানে তিনি জন আব্রাহামের বিপরীতে এক দুরন্ত অ্যাকশন প্যাকড চরিত্রে নজর কেড়েছিলেন। এরপর ‘কম্যান্ডো’ ট্রিলজি তাঁকে বলিউডের অন্যতম ‘ অ্যাকশন হিরো’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। বাস্তব মার্শাল আর্ট চর্চা, স্টান্টে পারদর্শিতা এবং নিজের চেষ্টায় তৈরি করা শরীর তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে রেখেছে। তিনি শেষবার স্ক্রিনে এসেছিলেন ‘ক্র্যাক: জিতেগা তো জিয়েগা’ ছবিতে, যেখানে ছিলেন এমি জ্যাকসন, অর্জুন রামপাল ও নোরা ফতেহিও। ছবিটি যদিও বক্স অফিসে ব্যর্থ হয়েছিল, কিন্তু বিদ্যুতের পারফরম্যান্স প্রশংসিত হয়।
কেন ‘ধালসিম’ চরিত্রের জন্য বিদ্যুতই পারফেক্ট চয়েস? ধালসিম একাধারে আধ্যাত্মিক, শারীরিকভাবে ফিট, এবং মানসিকভাবে দুর্দান্ত ব্যালান্সড—যা বিদ্যুতের বাস্তব জীবনের সঙ্গে মেলে।তাঁর কালার্ড বেল্টস সহ ট্রেনিং, ক্যালিস্টেনিকস অভিজ্ঞতা, এবং কোরিওগ্রাফড অ্যাকশন স্টাইল তাঁকে এই চরিত্রের জন্য আদর্শ করে তোলে।ধালসিমের আত্মসংযম এবং বিস্ফোরণ—এই দ্বৈততা বিদ্যুতের অভিনয়েও স্পষ্ট।
‘স্ট্রিট ফাইটার’ ছবিতে বিদ্যুতের ধালসিম হয়ে ওঠা শুধু তাঁর ক্যারিয়ারের মোড় নয়, বরং ভারতীয় অ্যাকশন তারকাদের বিশ্বমঞ্চে স্বীকৃতির এক বড় মুহূর্ত। নেটপাড়ায় তাঁর অনুরাগীদের কথায়- “ভারতের একজন স্টান্ট কিং এবার আগুন ছড়াতে চলেছেন আন্তর্জাতিক মার্শাল আর্ট আঙিনায়।”
