আজকাল ওয়েবডেস্ক: বয়স ৫২। কিন্তু শরীর তো সুস্থ। তাই সিদ্ধান্ত নিতে অসুবিধা হয়নি। সংবাদমাধ্যমে এমনটাই জানান ক্রিস্টি স্মিট। নিঃসঙ্কোচে নিজের নাতনিকে নিজের গর্ভে ধারণ করেন ক্রিস্টি।
2
17
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা ক্রিস্টি সম্প্রতি শিরোনামে উঠে এসেছেন নিজের মেয়ে-জামাইয়ের সন্তান জন্ম দেওয়ার পর।
3
17
একটি মার্কিন সংবাদসংস্থার খবর অনুযায়ী, ক্রিস্টি ২২ এবং ২৪ বছর বয়সে তাঁর প্রথম দুই সন্তানের জন্ম দেন। দুই সন্তানের জননী ক্রিস্টির সেই অর্থে সন্তান প্রসবে তেমন কোনও সমস্যা হয়নি।
4
17
কিন্তু তাঁর কন্যা হেইডি মায়ের মতো ভাগ্যবতী নন। ২০১৫ সালে জন ল্যাম্প্রস নামের এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় হেইডির। সংসার সুখের হলেও কিছুদিন পরই দেখা দেয় সমস্যা।
5
17
জন ও হেইডি দু’জনেই শিশু পছন্দ করতেন। তাই দেরি না করে বিয়ের পরেই বাবা মা হওয়ার চেষ্টা শুরু করেন দু’জন। কিন্তু পাঁচ বছর কেটে গেলেও সন্তানের মুখ দেখতে পাননি তাঁরা।
6
17
অবশেষে সুখবর আসে ২০২০ সালে। প্রথমবার অন্তঃসত্ত্বা হন হেইডি। কিন্তু হেইডি যখন প্রথমবার স্ক্যান করতে যান তখন চিকিৎসকেরা এমন কথা বলেন যা তিনি কল্পনাও করেননি।
7
17
হেইডি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, স্ক্যানে দেখা যায় তাঁর ‘ইউটেরাইন ডাইডেলফিস’ রয়েছে। অর্থাৎ একটি নয়, দু’টি ইউটেরাস রয়েছে। এবং একই সঙ্গে দু’টি ইউটেরাসে রয়েছে দু’টি ভ্রূণ! অর্থাৎ তাঁর গর্ভে রয়েছে যমজ সন্তান!
8
17
বিষয়টি এতোই বিরল যে প্রতি ৩০ লক্ষ নারীর ক্ষেত্রে গড়ে একজনের দেহে মাত্র এই লক্ষণ দেখা যায়। স্বাভাবিক ভাবেই যমজ সন্তানের খবরে পরিবারে খুশির জোয়ার আসে।
9
17
কিন্তু সেই খুশি বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ১০ সপ্তাহের মাথায় পরীক্ষা করে দেখা যায় একটি শিশুর কোনও হৃদস্পন্দন নেই। এখানেই শেষ নয় ২৪ সপ্তাহের মাথায় আসে দ্বিতীয় ধাক্কা। দেখা যায় দ্বিতীয় সন্তানও মারা গিয়েছে গর্ভেই।
10
17
শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে। দুই সন্তানকে হারিয়ে মানসিক ভাবে একেবারে ভেঙে পড়েন হেইডি। উপরন্তু চিকিৎসকেরা জানান, এই অবস্থায় তাঁর আর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার চেষ্টা করা অনুচিত। তাতে তাঁর নিজেরই প্রাণ সংশয় হতে পারে।
11
17
হেইডি যখন মা হওয়ার সব আশা ছেড়ে দিতে বসেছেন, তখনই চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেন, আইভিএফ পদ্ধতির মাধ্যমে মা হওয়ার কথা ভাবতে পারেন তিনি।
12
17
এই পদ্ধতিতে মায়ের ডিম্বাণু এবং বাবার শুক্রাণু কোনও সুস্থ ধাত্রী মায়ের জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। সেখানেই ভ্রূণ থেকে সন্তান আসে।
13
17
এই অবস্থায় সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসেন শাশুড়ি ক্রিস্টি। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, মেয়ের কষ্ট আর সহ্য করতে পারছিলেন না তিনি। তাই এমন সিদ্ধান্ত।
14
17
তিনিই প্রস্তাব দেন, ধাত্রী মা যদি কাউকে হতেই হয় তবে তিনি সেই দায়িত্ব নিতে তৈরি। শাশুড়ির প্রস্তাবে মানা করেননি জামাইও।
15
17
এর পর চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়। ক্রিস্টি যেহেতু পঞ্চাশ পেরিয়ে গিয়েছেন তাই চিকিৎসকেরা কিছুটা দ্বিধায় ছিলেন। কিন্তু ক্রিস্টির বিভিন্ন অঙ্গ পরীক্ষা করে দেখা যায়, তাঁর শরীর মাতৃত্বের জন্য প্রস্তুত।
16
17
এর পরেই আইভিএফ পদ্ধতিতে মেয়ে জামাইয়ের সন্তান নিজের গর্ভে স্থাপন করেন শাশুড়ি। ন’মাসের মাথায় ফুটফুটে কন্যার জন্ম দেন তিনি।
17
17
পেশায় স্কুল শিক্ষিকা ক্রিস্টি জানিয়েছেন, কিছু লোক বাঁকা নজরে দেখলেও, তাঁর পরিবার এই যাত্রায় তাঁর পাশে ছিল। সন্তান প্রসবের খবর পেয়ে আনন্দে ফেটে পড়েন তাঁর স্বামীও। নাতনিকে খুবই আদর যত্ন করেন দাদু।