আজকাল ওয়েবডেস্ক: অবসরগ্রহণের পর বিচারপতিদের রাজনীতিতে যোগদান বিচারব্যবস্থা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করে। বিদেশে এক আলোচনাসভায় গিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন ভারতের প্রধান বিচারপতি বিআর গাভাই।


ব্রিটেনে সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি গাভাই। সেখানেই তিনি বলেন, ভারতে বিচারপতিদের অবসরের একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমা থাকে। যদি কোনও বিচারপতি অবসর গ্রহণের পরেই সরকারের অন্য কোনও পদ গ্রহণ করেন অথবা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য পদত্যাগ করেন, তা হলে তা তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে নীতিগত উদ্বেগের সৃষ্টি করে। জনসাধারণের নজরেও পড়ে এই ঘটনাগুলি।

 

তিনি আরও বলেন, একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজনৈতিক পদের জন্য নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন, সেটা বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা এবং নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। সন্দেহ সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, একে স্বার্থের সংঘাত বা সরকারের অনুগ্রহ অর্জনের প্রচেষ্টা হিসাবে দেখা যেতে পারে। তাই অবসর-পরবর্তী এই ধরনের কর্মকাণ্ড বিচার বিভাগের উপর জনগণের আস্থা কমাতে পারে।

 

অবসরের পরে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর রাজ্যসভায় মনোনয়ন নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছে। কর্মরত অবস্থায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির পদ ছেড়ে অভিজিৎ গাঙ্গুলি বিজেপি-তে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি বিজেপি সাংসদ। ফলে প্রধান বিচারপতি গাভাইয়ের এই মন্তব্য যে একেবারে ভুল নয় সেটি সকলের নজরে এসেছে। 

 

প্রধান বিচারপতি গাভাই ওই আলোচনাসভায় জানান, সরকার যখন বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিত, তখন এমনও হয়েছে, প্রধান বিচারপতি নিয়োগের সময় সিনিয়র বিচারপতিকে বাদ রেখে অন্যদের বেছে নেওয়া হচ্ছে। ভারতে দু’বার এই ঘটনা ঘটেছে। তাঁর মন্তব্য, ভারতে বিতর্কের অন্যতম বিষয় হল বিচারপতি নিয়োগে কার প্রাধান্য থাকবে। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট এবং হাই কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে নির্বাহী বিভাগেরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছিল। ওই সময়কালে দু’বার ভারতের প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে সিনিয়র বিচারপতিদের বাতিল করা হয়েছিল। যা সেই সময়ে প্রতিষ্ঠিত ঐতিহ্যের বিরোধী। 

 

প্রধান বিচারপতি গাভাইয়ের এই মন্তব্যের জেরে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে বিতর্ক। যদিও এই ধরণের ঘটনার নিদর্শন এর আগেও বহুবার দেখেছে দেশবাসী।