আজকাল ওয়েবডেস্ক: মন্দিরের অদূরে কাশতে কাশতে ভুলবশত প্রস্রাব করে ফেলেছিলেন এক দলিত বৃদ্ধ। কিন্তু স্থানীয় যুবকের সন্দেহ হয়, তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই প্রস্রাব করেছেন। এর জেরেই চরম শাস্তি দেওয়া হল তাঁকে। জোর করে মন্দির চত্বরে জিভ দিয়ে চেটে দিতে বাধ্য করা হল বৃদ্ধকে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার দীপাবলিতেই নির্যাতনের শিকার হন ৬০ বছরের ওই বৃদ্ধ। মন্দির সংলগ্ন এলাকায় প্রস্রাব করার অভিযোগ মন্দিরের সামনেই রাস্তা জিভ দিয়ে চেটে দিতে জোর করা হয়েছিল তাঁকে।
দলিত বৃদ্ধের নাতি পুলিশকে জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই বয়সজনিত কারণে অসুস্থতায় ভুগছেন ওই বৃদ্ধ। মন্দিরের পাশে কাশতে কাশতে ভুলবশত প্রস্রাব করে ফেলেন। কিন্তু অভিযুক্তের দাবি ছিল, ইচ্ছাকৃতভাবেই তিনি মন্দির চত্বরে প্রস্রাব করেছেন। এর জেরেই কড়া শাস্তি দেওয়া হয় তাঁকে। মন্দিরের সামনের রাস্তা জিভ দিয়ে চেটে দিতে জোর করা হয়। এর জেরেই আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন বৃদ্ধ। শ্বাসকষ্টের সমস্যায় বর্তমানে শয্যাশায়ী তিনি।
রামপাল রাওয়াত নামের ওই বৃদ্ধ জানিয়েছেন, 'সেদিন সন্ধ্যায় কাকোরি এলাকায় শীতলা মাতা মন্দিরের অদূরেই দাঁড়িয়ে আমি জল খাচ্ছিলাম। কিন্তু স্বামী কান্তের অভিযোগ, আমি সেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে প্রস্রাব করেছি। আমি যে জায়গায় ছিলাম, সেখান থেকে ৪০ মিটার দূরে ছিল ওই মন্দির। তা সত্ত্বেও আমাকে হেনস্থা করা হয়।'
পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘটনার পরেরদিন বৃদ্ধ থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযুক্ত স্বামী কান্তকে সেদিন গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এই ঘটনাটি ঘিরে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দলিতদের উপর অত্যাচার ঘিরে সরব হয়েছেন রাজনীতিকরা।
প্রসঙ্গত, গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে এক দলিত নাবালক চরম নির্যাতনের শিকার হয়েছিল। ১২ বছরের দলিত নাবালককে চোরসন্দেহে বিবস্ত্র করে নির্মম অত্যাচার। তাকে প্রথমে বিবস্ত্র করা হয়। এরপর উলঙ্গ অবস্থায় নাচ করতে বাধ্য করে একদল ব্যক্তি। নাচতে নাচতে তাকে হাসতেও জোর করে তারা। কারণ, অভিযুক্তদের সন্দেহ হয়েছিল, ওই দলিত নাবালক তার চুরি করেছে। এই ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
নৃশংস ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের কোটায়। শনিবার রাতেই ঘটনাটি নজরে পড়ে পুলিশের। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিল নাবালক। সেখান থেকে কয়েকজন তাকে চেপে ধরে একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে আসে। এরপর বিবস্ত্র করে নাচ করতে বাধ্য করে। দলটির মধ্যে ছয়জন ছিল। উলঙ্গ অবস্থায় নাবালকের নাচের ভিডিও সমাজমাধ্যমেও ছড়িয়ে দেয় তারা। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও দেখেই পদক্ষেপ করে পুলিশ।
নাবালকের বাবাকে অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেয় পুলিশ। এরপর ছয়জনের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে পকসো ধারা সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। শনিবার মধ্যরাতেই অভিযুক্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, অভিযুক্তরা ওই অনুষ্ঠানে মিউজিকের দায়িত্ব ছিল। তাদের সন্দেহ হয়েছিল, কোনও একটি যন্ত্র থেকে তার চুরি করেছে ওই নাবালক। এরপরই তাকে অত্যাচার করে ছয়জন মিলে। সেই অত্যাচারের ভিডিও তুলে ছড়িয়ে দেয় সমাজমাধ্যমে।
