আজকাল ওয়েবডেস্ক: শরীরের গঠন নিয়ে প্রায়ই খোঁটা শুনতে হয়। তাও আবার কাছের বন্ধুর থেকে। ছিপছিপে, রোগা গড়নের জন্য দিনরাত কথা শোনাতেন তিনি। মজার ছলে এমন সব কথা বলতেন, যা সবার সামনে শুনে অপমানিত বোধ করত দুই বন্ধু। কখনও কখনও নীরবেই চোখের জল ফেলত। কিন্তু প্রতিবাদ করত না। শরীরের গড়ন নিয়ে বন্ধুর টিকা টিপ্পনি মুখ বুজেই সহ্য করে নিতে। অবশেষে ধৈর্য্য হারিয়ে চরম পদক্ষেপ করল দুই বন্ধু। 

 

শরীরের গড়ন নিয়ে খোঁটা দেওয়ার জন্য ওই কাছের বন্ধুকে খুন করল তারা। তাও আবার পিটিয়ে, ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে। দিনের পর দিন দেহটি যথাস্থানে পড়ে ছিল। অবশেষে সেই দেহের সন্ধান পেল পুলিশ। পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত দুই তরুণকে। তাদের বর্তমানে জেল হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে গুরুগ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তরুণের নাম কর্ণ। ২০ বছর বয়সি তরুণ গুরুগ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। চলতি মাসের শুরুর দিকে নৃশংসভাবে খুন করা হয় তাঁকে। তাঁর দেহের সন্ধান আরও বেশ কয়েকদিন পর পায় পুলিশ। ততক্ষণে দেহটি পচাগলা অবস্থায় ছিল। 

 

আরও পড়ুন: এক বউকে নিয়ে দুই ভাইয়ের সংসার! টিটকিরিকে পাত্তাই দিচ্ছেন না, বরং কী কী সুবিধা জানিয়ে দিলেন তাঁরা

 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, কর্ণ নামের তরুণকে খুনের অভিযোগে আকাশ ও শিব কুমার নামের দুই তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দীর্ঘ জেরায় অভিযুক্ত দুইজনেই জানিয়েছে, খুনের ঘটনাটি ঘটেছে ২ থেকে ৩ আগস্ট রাতের মধ্যে। খুনের ঘটনাটি ঘটেছে স্কুলের মধ্যে। সেদিন রাতে স্কুলে ঢুকেছিল আকাশ ও শিব। একটি ঘরের মধ্যে ছিল কর্ণ। 

 

কর্ণের সুঠাম শরীর। নিয়মিত শরীরচর্চা করতেন তিনি। এদিকে আকাশ ও শিবের শরীরের গড়ন রোগা, ছিপছিপে। রোগা বলেই দুই বন্ধুকে খোঁটা দিতেন কর্ণ। প্রায়ই সকলের সমানে ইয়ার্কি, ঠাট্টা করতেন। যা শুনে অপমানিত বোধ করত দুজনেই। সেদিন রাতেও রোগা শরীরের জন্য ঠাট্টা করেছিলেন কর্ণ‌। তারপরেই মেজাজ হারিয়ে ফেলে দুই বন্ধু। 

 

প্রথমে ভারী পাথর দিয়ে কর্ণের মাথায় আঘাত করে তাঁকে অজ্ঞান করে দেয়। অচৈতন্য অবস্থায় কর্ণ লুটিয়ে পড়ার পর, কাঁচি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ মারে তাঁকে। মৃত্যু নিশ্চিত হতেই, দেহটি টেনে হিঁচড়ে স্কুলের শৌচালয়ে রেখে দু'জনে পালিয়ে যায়। দিন কয়েক পর স্কুলে পৌঁছে রক্তের দাগ দেখতে পান স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সেই রক্তের দাগ দেখতে দেখতে সোজা পৌঁছে যান শৌচালয়ের কাছে। তখনই দেহটি দেখতে পান তিনি। 

 

তড়িঘড়ি পুলিশে খবর দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। দেহটি পচাগলা অবস্থায় ছিল। তাই দেখার পরেই শনাক্ত করা যায়নি। খুনের তিনদিন পর আকাশ ও শিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। দীর্ঘ জেরায় খুনের ঘটনাটি স্বীকার করে নেয় তারা। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। 

 

কী কারণে সেই রাতে স্কুলে তারা ঢুকেছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। খুনের নেপথ্যে আর কী কী কারণ ছিল তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে খুনে ব্যবহৃত পাথর ও কাঁচি উদ্ধার করেছে পুলিশ।