আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে শুরু হচ্ছে এক বিশাল যৌথ সামরিক মহড়া। জানা গিয়েছে, এই মহড়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ত্রিশূল’ (Ex Trishul)। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, ৩০ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে এই ত্রিস্তরীয় মহড়া, যেখানে ভারতীয় সেনা, নৌবাহিনী ও বায়ুসেনা একসঙ্গে অংশ নেবে।
এই মহড়াকে কেন্দ্র করে ভারত সরকার ইতিমধ্যে একটি NOTAM (Notice to Airmen) জারি করেছে। অর্থাৎ ওই নির্দিষ্ট সময়কালে সীমান্তবর্তী এলাকায় বিমান চলাচলে বিশেষ বিধিনিষেধ থাকবে।
স্যাটেলাইট ইমেজারি বিশ্লেষক ড্যামিয়েন সাইমন তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট করে সীমান্ত বরাবর NOTAM জোনের ছবি প্রকাশ করে একে ‘অস্বাভাবিকভাবে বৃহৎ পরিসরের অপারেশন এলাকা’ বলে উল্লেখ করেছেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মহড়ার জন্য সংরক্ষিত আকাশসীমা ২৮,০০০ ফুট পর্যন্ত বিস্তৃত থাকবে। যা সাম্প্রতিক বছরগুলির মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম যৌথ সামরিক অনুশীলন হতে চলেছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, এই মহড়া ভারতের ‘যৌথতা (Jointness)’, ‘আত্মনির্ভরতা (Aatmanirbharta)’ ও ‘উদ্ভাবন (Innovation)’ এই তিন স্তম্ভের ওপর নির্ভর করে গঠিত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘JAI Vision’-এর প্রতিফলন ঘটাবে।
India has issued a notification for a Tri-Services Exercise along its western border with Pakistan, the chosen area & scale of activity are unusual
— Damien Symon (@detresfa_)
Date | 30 October- 10 November 2025 pic.twitter.com/IsDdLs0x0kTweet by @detresfa_
দক্ষিণ কমান্ডের সেনারা এই মহড়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবেন। তাঁদের নেতৃত্বে নানা ধরনের ভৌগোলিক অঞ্চলে জটিল অপারেশন চালানো হবে — যেমন ক্রীক ও মরু অঞ্চলে আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ, সৌরাষ্ট্র উপকূলে উভচর অভিযান, এবং ইন্টেলিজেন্স, সার্ভেইল্যান্স অ্যান্ড রিকনিসান্স (ISR), ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার (EW) ও সাইবার সক্ষমতা-র সমন্বয়ে বহুস্তরীয় মহড়া।
প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর (PIB) বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই মহড়া দেশীয় প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহারের ওপর জোর দেবে। পাশাপাশি, আত্মনির্ভর ভারতের প্রতিফলন ঘটিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে নতুন কৌশল, ট্যাকটিক্স ও অপারেশনাল প্রক্রিয়াকে আরও নিখুঁত করার সুযোগ এনে দেবে এই অনুশীলন।
পিআইবি জানিয়েছে, দীপাবলি উৎসবের মাঝেও দক্ষিণ কমান্ডের সেনারা সীমান্তে সক্রিয় ছিলেন এবং ‘অভিযান ত্রিশূল’-এর প্রস্তুতির জন্য কঠোর প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন। প্রসঙ্গত, এই মহড়া শুরু হচ্ছে এমন সময়ে, যখন পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের পারদ আবারও চড়ছে।
চলতি বছরের ৭ মে ভারত ‘অপারেশন সিঁদুর’ পরিচালনা করেছিল। ভারতের প্রিসিশন স্ট্রাইক কার্যত গুঁড়িয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানের সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলি। এর উদ্দেশ্য ছিল ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও সন্ত্রাসী হামলার জবাব দেওয়া।
প্রতিরক্ষা মহলে মনে করা হচ্ছে, ‘অভিযান ত্রিশূল’ শুধু একটি মহড়াই নয়, বরং পাকিস্তান সীমান্তে ভারতের কৌশলগত প্রস্তুতি, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং তিন বাহিনীর সমন্বিত শক্তি প্রদর্শনেরও এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।
