আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারত-পাক সংঘর্ষে কোন দেশের কী ক্ষতি হয়েছে, সংঘর্ষবিরতির পরেও এই আলোচনায় বিরতি নেই। প্রায় দিনই উঠে আসছে নিত্য নতুন তথ্য। এবার এক বড় প্রশ্ন। ভারত কি হামলায় পাক যুদ্ধবিমান এফ-১৬ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের পক্ষ থেকে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল মার্কিন বিদেশ দপ্তরকে। তাদের এই প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়ার কারণ? কারণ পাক যুদ্ধ বিমান এফ-১৬ আমেরিকার বানানো।

 

প্রশ্ন শুনে উত্তর কী এল জানেন? ওই সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, প্রশ্ন শুনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, 'আমরা আপনাকে পাকিস্তান সরকারের কাছে তাদের এফ-১৬ নিয়ে আলোচনা করার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি।' অর্থাৎ ৭ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ৮৮ ঘন্টা ধরে চলা তীব্র সংঘর্ষ, অপারেশন সিঁদুর অভিযানের সময় পাকিস্তান বিমানবাহিনী পরিচালিত এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের ক্ষতি সম্পর্কে নির্দিষ্ট প্রশ্নের উত্তর দিতে চায়নি মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক। সাফ গোটা ঘটনাটি ঠেলে দিয়েছেন পাকিস্তানের ঘাড়ে। বলেছেন, জানার হলে, সেখান থেকেই জানুন গিয়ে। 

 

আরও পড়ুন: জঙ্গিদের নজরে পুরীর জগন্নাথ মন্দির! দেওয়ালে লিখে দেওয়া হল মারাত্মক হুমকি, আতঙ্কে কাঁপছেন ভক্তরা...

 

তবে, মার্কিন বিদেশ মন্ত্রক এই বিষয়ে জবাব না দিলেও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তান পরিচালিত F-16 বিমানের অবস্থা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত থাকে, যাকে টেকনিক্যাল সাপোর্ট টিম (TST) বলা হয়, তারা পাকিস্তানের মার্কিন-নির্মিত F-16 বিমানের ব্যবহার পর্যবেক্ষণের জন্য 24/7 পাকিস্তানে মোতায়েন থাকে। এই টিএসটিগুলি ইসলামাবাদ এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে স্বাক্ষরিত বিস্তৃত শেষ-ব্যবহার চুক্তি অনুসরণ করে কাজ করে। অর্থাৎ বিমান ঠিকঠাক কাজ করছে কি না যাঁদের জ্ঞাত, তাঁরা বিমান গুঁড়িয়ে গিয়েছে কি না যুদ্ধে, তা জানেন না এটা হতেই পারে না। অর্থাৎ তাঁরা এড়িয়ে গিয়েছেন বিষয়টি। 

 

এর আগে বায়ুসেনা প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত সিং জানিয়েছিলেন, ভারতীয় বায়ুসেনা 'অপারেশন সিঁদুর'-এর সময় ছয়'টি পাকিস্তানি বিমান ধ্বংস করেছে। তিনি জানিয়েছিলেন, এর মধ্যে পাঁচটি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমান এবং একটি পাক সামরিক বাহিনীর বড় বিমান। বায়ুসেনা প্রধানের কথায়, 'অপারেশন সিঁদুর'-এর সময়ে ভারতের আকাশসীমা রক্ষার কাজে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে এস-৪০০ সুদর্শন চক্র। এই এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমই ছয়'টি পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানকে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। বায়ুসেনা প্রধান জানান, এখন পর্যন্ত ভূমি থেকে আকাশে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করার দিক থেকে এই প্রতিআক্রমণই সবচেয়ে বড় রেকর্ড।

শনিবার বেঙ্গালুরুতে এক অনুষ্ঠানে এয়ার চিফ মার্শাল অমরপ্রীত সিং বলেছেন, "আমাদের এয়ার ডিফেন্স দুরন্ত কাজ করেছে। রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ সিস্টেম, যেটা আমরা সম্প্রতি মোতায়েন করেছিলাম সেটা খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ওই সিস্টেমের শক্তি ওদের বিমানগুলিকে সত্যিই দূরে রেখেছিল। যেমন ওদের কাছে থাকা দূরপাল্লার গ্লাইড বোমাগুলির মতো অস্ত্রকে ওরা ব্যবহারই করতে পারেনি। কারণ এই সিস্টেমটাকে ওরা ভেদই করতে পারেনি।" তিনি বলেন, "অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান আমরা নিশ্চিত ভাবে ধ্বংস করেছি। এ ছাড়া একটি বড় (সামরিক) বিমান রয়েছে। প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে হামলা করা হয়েছিল।" 

বায়ুসেনা প্রধানের দাবি, যে বড় যুদ্ধবিমান ধ্বংস করা হয়েছিল তা ছিল একটি এয়ারবর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম। এই ধ্বংস পাকিস্তানের বায়ুসেনার উপর একটি বিরাট আঘাত।

এই ছয়'টি পাকিস্তানি বিমান ধ্বংসের সঙ্গেই আকাশপথে পাক সামরিক ঘাঁটিতে হামলার সময়েও বেশ কিছু পাক বিমানে ক্ষতি হয়েছে বলে জানান বায়ুসেনা প্রধান অমরপ্রীত। বিশেষ করে পাকিস্তানের জাকোবাবাদে সামরিক ঘাঁটির কথাও উল্লেখ করেছেন তিনি। সেখানে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের হ্যাঙ্গার ছিল। ওই হ্যাঙ্গারটির অর্ধেকই ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলে জানান বায়ুসেনা প্রধান। 

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও-তে জঙ্গি হামলার পর পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরে চিহ্নিত কিছু জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছিল ভারত। সেই আক্রমণেরই নাম দেওয়া হয়েছে 'অপারেশন সিঁদুর'। ভারতীয় বায়ুসেনার দাবি, ওই সময় পাকিস্তানের কোনও সামরিক ঘাঁটিতে হামলা হয়নি। কিন্তু ভারতের অভিযানের পরে পাকিস্তানি বাহিনী ভারতের উপর হামলা শুরু করে। জবাব দেয় ভারতও। ওই সংঘাত পরিস্থিতিতে অন্তত ছয়'টি পাকিস্তানি বিমান ধ্বংস করেছে বায়ুসেনা।