আজকাল ওয়েবডেস্ক: মানুষ এত নিষ্ঠুর হতে পারে? তান্ত্রিক রীতি পালনের জন্য নিজের পোষা কুকুরকে শ্বাস রোধ করে খুন করল তার মালিক। এরপর সেই কুকুরটির দেহ ঘাড় থেকে কেটে ফেলা হয়। ঘটনাটি বেঙ্গালুরুর একটি আবাসনের। বন্ধ ফ্ল্যাটের মধ্যে থেকে পচা দুর্গন্ধ বেরতেই পুরনিগমে খবর দেন প্রতিবেশীরা। পুর-কর্মীরা এসে ফ্ল্যাটের তালা ভাঙতেই তাজ্জব হয়ে যান। প্রকাশ্যে আসে নির্মম নৃশংতা।

পুলিশ জানিয়েছে, ত্রিপর্ণা পায়াক নামে পরিচিত মহিলা পোষা তিনটি কুকুর রয়েছে। সেগুলির মধ্যে ল্যাব্রাডর কুকুরটিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন এবং তার ঘাড় কেটে ফেলেন মালিক। এরপর তিনি কুকুরটির দেহটি একটি কাপড়ে মুড়ে, ফ্ল্যাটের সমস্ত জানালা এবং দরজা বন্ধ করে দেন এবং তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান। 

কয়েকদিন পরে, প্রতিবেশীরা ওই ফ্ল্যাটের কাছ থেকে পচা গন্ধ পেতে থাকেন। তারাই বেঙ্গালুরু পুর কর্তৃপক্ষকে (ব্রুহাট বেঙ্গালুরু মহানগর পালিকে) খবর দেন। পুর-কর্মীরা দরজা খুললে, তারা কুকুরটির গলায় কাটা দাগ-সহ পচা মৃতদেহ দেখতে পান।

বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে কিছু জিনিসপত্রও পাওয়া গিয়েছে। যা দেখে পুলিশের ধারণা তান্ত্রিক রীতি পালন করতে গিয়েই এই কুকুর-হত্যা করা হয়েছে।  পুলিশের দাবি ওই ফ্ল্যাটজুড়ে অনেক ধর্মীয় ছবি ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ছিল, যা ইঙ্গিত দেয় যে- কোনও ধরণের 'তান্ত্রিক' রীতি পালন করা হয়েছিল। 

এছাড়াও, পুর-কর্মীরা ওই ফ্ল্যাটের ঘরের ভেতর থেকে আরও দু'টি কুকুরকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। দেয়ালের সঙ্গে সেগুলি লিজ দিয়ে বাঁধা ছিল। অভিযোগকারী ডাঃ রুদ্রেশ কুমার বলেন, "কুকুর দু'টি বিএমপি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।" 

মৃত ল্যাব্রাডরের ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে যে, এই হত্যা চার দিন আগে করা হয়েছিল।

পুলিশ মহাদেবপুরা থানায় পশু নিষ্ঠুরতা এবং সংশ্লিষ্ট ধারায় ত্রিপর্ণা পায়াকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। এই ভয়াবহ অপরাধটির নেপথ্যে তান্ত্রিক রীতি পালনই দায়ী কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খতিয়ে দেখা হবে অভিযুক্ত মলিলার মানসিক অবস্থাও। 

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা।

এই ঘটনাটি শহরের পশু অধিকার এবং পোষ্য প্রাণীর নিরাপত্তা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। অনেক পশুপ্রেমী এবং তাদের সংগঠন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ক্ষোভ প্রকাশ উগরে দিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে।