আজকাল ওয়েবডেস্ক: গ্রামের মধ্যে বসে নিশ্চুপে দিনরাত তুকতাক। কালাজাদুর জেরে একের পর এক বাসিন্দাদের চরম পরিণতি! কেউ বা হারিয়েছেন প্রাণ। এবার তুকতাক করার অভিযোগে যুবকের উপর চরম প্রতিশোধ নিলেন গ্রামবাসীরা। গ্রামের মধ্যে যুবককে নৃশংসভাবে খুন করলেন তাঁরা। ঘটনাটি ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা গ্রামে ও জেলায়। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, কালাজাদু করার অভিযোগে যুবককে অপহরণ করেন কয়েকজন গ্রামবাসী। এরপর তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয়। খুনের পরেও রাগ কমেনি তাঁদের। যুবকের যৌনাঙ্গ কেটে বাদ দিয়ে দেন তাঁর। এরপর প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহটি ছুড়ে ফেলেন ড্যামের মধ্যে। তবে এতকিছুর পরেও শেষরক্ষা হয়নি। খুনের কয়েক ঘণ্টা পরেই দেহটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়েছে। যুবকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত গ্রামবাসীদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। কী কারণে খুন করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হয়েছে।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার গজপতি জেলায়। রবিবার পুলিশ জানিয়েছে, ৩৫ বছর বয়সি এক যুবককে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছে একদল যুবকের বিরুদ্ধে। তুকতাক করার অভিযোগে আরও চরম শাস্তি দিয়েছে তাঁকে। যুবককে খুনের পর তাঁর যৌনাঙ্গ কেটে বাদ দিয়ে দেয় তারা।
পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে গজপতি জেলার মোহনা থানার অন্তর্গত মালাসাদর গ্রামে। তুকতাক করার অভিযোগে ওই যুবককে কয়েকজন গ্রামবাসী ব্যাপক মারধর করেন। পিটিয়ে খুন করা হয়েছে যুবককে। এরপর তাঁর যৌনাঙ্গ কেটে বাদ দিয়ে দেন। মৃতদেহটি রাতেই হরভঙ্গি ড্যামে ফেলে দেন অভিযুক্তরা।
রবিবার সকালে সেই ড্যাম থেকেই যুবকের নিথর দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। জি উদয়গিরির সাব ডিভিশনাল পুলিশ অফিসার সুরেশ চন্দ্র ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, যুবকের মৃতদেহ উদ্ধারের পর ওই গ্রামের ১৪ জন বাসিন্দাকে পুলিশ আটক করেছে। সকলকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কেন যুবককে পিটিয়ে খুন করা হল তার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশকে কয়েকজন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী জানিয়েছেন, ওই যুবক গ্রামের মধ্যে নিশ্চুপে তুকতাক করতেন। অনেকেই তাঁর বিরুদ্ধে কালাজাদু করার অভিযোগ তুলেছেন। এর জেরেই বহু গ্রামবাসীর চরম পরিণতিও হচ্ছে। ঘটনার একদিন আগেই গ্রামের এক যুবতী হঠাৎ মারা যান। গ্রামবাসীদের সন্দেহ, ওই যুবক কালাজাদুর জেরেই যুবতীর মৃত্যু হয়েছে।
গ্রামবাসীদের যে ক্ষোভ বাড়ছে, তা টের পেয়েছিলেন ওই যুবক। তাঁর উপর যে হামলা হতে পারে, তাও সন্দেহ করেছিলেন। এই ভয়েই গঞ্জম জেলায় শ্বশুরবাড়িতে পরিবারকে নিয়ে চলে গিয়েছিলেন যুবক। সেখানে পৌঁছে শ্যালিকাকে অনুরোধ করেছিলেন, তাঁর পোষ্য, গবাদিপশুর যত্ন নিতে।
গত শনিবার ওই গ্রামেই পৌঁছন গোপাল নামের যুবক। বাড়িতে গিয়ে গবাদিপশু ফিরিয়ে নিতে গিয়েছিলেন। তখনই তাঁর উপরে হামলা চালান ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা। তাঁকে অপহরণ করে নির্জন একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। খুনের পর তাঁর যৌনাঙ্গ কেটে, মৃতদেহ ড্যামে ভাসিয়ে দেন।
