আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়ায় গত কয়েক ঘণ্টায় ঝড়ের গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে একটি ভিডিও।  ওই ভিডিও, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিনের একটি বক্তব্যের অংশ। তাতে 'আমার ভাই...' বলে তিনি যে মন্তব্য করেছেন, বিপত্তি সেখানেই। ছেলের নামের বদলে বাবার নাম বলে বেশ চর্চায় তিনি। 

কী ঘটেছে? জানা গিয়েছে, ভরা সমাবেশে রাহুল গান্ধীর কথা বলতে গিয়ে স্ট্যালিন বলে ফেলেন, 'আমার ভাই রাজীব গান্ধী'। ব্যাস তারপর থেকেই বক্তব্যের ওই অংশটুকুই ভাইরাল হয় তুমুল গতিতে। এই সপ্তাহে বিহারে নির্বাচনমুখী 'ভোটার অধিকার' সমাবেশে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীকে 'রাজীব গান্ধী', তাঁর বাবা এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বলে উল্লেখ করে বসেন। 

কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া ব্লক আয়োজিত একটি সমাবেশে স্ট্যালিন বক্তব্য রাখছিলেন। ইন্ডিয়া ব্লক বিগত দিনে নির্বাচন কমিশনের বিহারের ভোটার তালিকার 'বিশেষ নিবিড় পুনর্বিবেচনার' প্রতিবাদ করছে ব্যাপকভাবে।  অনলাইনে ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া একটি ভিডিওতে, তামিলনাড়ুর নেতা রাহুল গান্ধীকে 'ভোটার অধিকার' সমাবেশের একজন আয়োজক হিসেবে স্বীকার করার মাধ্যমে তার বক্তৃতা শুরু করেন। কিন্তু ভুল বশত নাম অন্য বলে ফেলেন। বিরোধী দলের নেতারা ইতিমধ্যেই এই ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট শুরু করেছেন। কেউ কেউ তাঁকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি। 

 

আরও পড়ুন: দু্র্যোগের ছায়া সরছেনা হিমাচল থেকে! প্রবল বৃষ্টিতে জনজীবন থমকে, মৃতের সংখ্যা ৩১০ ছাড়াল, ক্ষয়ক্ষতি কয়েক লাখ 

ভোটমুখী বিহারে ভোটাধিকার যাত্রা করছেন রাহুল গান্ধী। রবিবার আরারিয়ায় এক সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে গান্ধী অভিযোগ করেন যে, নির্বাচন কমিশনের মদতে পরিচালিত এসআইআর অনুশীলন ভোট চুরির একটি প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতি। তিনি বলেন, 'সরকারি খাতের ইউনিটগুলিকে বেসরকারিকরণের পর নরেন্দ্র মোদি সরকার এখন নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় এসআইআরের মাধ্যমে দরিদ্রদের ভোট চুরি করতে চায়।'


একইসঙ্গে রাহুল বলেন, এসআইআর সংবিধান বিরোধী। বিহারের মানুষ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি এবং তার শরিক দলগুলিকে জবাব দেবে। বিরোধী শিবির, ইন্ডিয়া জোট যে এই এসআইআর মানবে না কোনওভাবে, এদিন তাও সাফ জানান রাহুল। 

বিহারের  ২৫টি জেলা জুড়ে ভোটাধিকার যাত্রা করবেন রাহুল। এর আগেই তিনি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করেছেন। অভিযোগ ভোট চুরির। তথ্য-সহ প্রমাণ দেখিয়েছেন।  তাঁর ঘণ্টাখানেকের বক্তব্যে একেবারে শোরগোল দেশের রাজনীতিতে। ১৩ আগস্ট তিনি দাবি করেন, বিহারের খসড়া তালিকায়  উল্লিখিত মৃত ব্যক্তিদের সঙ্গে বসেছিলেন চা চক্রে। দিনকয়েক আগেই বিহারে খসড়া ভোতার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তাতে ৬৫ লক্ষ মানুষ বাদ পড়েছেন তালিকা থেকে। তাদের মধ্যে ২২ লক্ষের বেশি ভোটার মৃত, তথ্য তেমনটাই। ওই মৃত ভোটার তালিকার কয়েকজন, অর্থাৎ যাঁরা মৃত হিসেবে ঘোষিত, তাঁদের কয়েকজনের সঙ্গে চা-চক্রে বসেছিলেন কংগ্রেস নেতা। নিজেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন রাহুল। তাতে লিখেছেন, জীবনের নানা মজার এবং অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতার মধ্যে এটি অন্যতম। কারণ এর আগে মৃত ভোটারদের সঙ্গে চা খাওয়ার সুযোগ হয়নি তাঁর। তিনি নির্বাচন কমিশনকেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন এই কারণে। 

 

অন্যদিকে, এই ভোটাধিকার যাত্রা থেকেই আরজেডি নেতা, তেজস্বী যাদব, মঙ্গলবার নওয়াদায় রাহুল গান্ধীর পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, 'আগামী লোকসভা ভোটে রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর জন্য একজোট হয়ে কাজ করব।' রাহুল কী বললেন একথা শুনে? বললেন না কিছুই। কেবল হাসলেন। সৌজন্যমূলক হাসি।  কী বলেছেন তেজস্বী যাদব? তিনি এদিন বলেন, নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন সরকার 'খট্টারা' হয়ে গেছে এবং এটিকে জরুরিভাবে প্রতিস্থাপন করা দরকার। তরুণদের এখন সুযোগ পাওয়া উচিত। বিহারের জন্য আমাদের একটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তরুণরা সংকল্প নিয়েছে যে তারা এই পুরনো এবং সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবে এবং পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনের পরে রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিশ্চিত করবে।'