আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্ত্রীর পোশাক বা রান্নার দক্ষতা নিয়ে কটু মন্তব্য গুরুতর নিষ্ঠুরতা বা হয়রানি নয়। একটি মামলায় এমনই মন্তব্য বম্বে হাইকোর্টের। এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া এফআইআর শুনানির পর তা খারিজ করে দেয় বিচারপতি বিভা কঙ্কনওয়াড়ি এবং সঞ্জয় এ দেশমুখের সমন্বয়ে গঠিত বম্বে হাইকোর্টের ঔরঙ্গাবাদ বেঞ্চ। উচ্চ-আদালত বলেছে, 'স্ত্রী সঠিক পোশাক পরেননি এবং ভাল খাবার রান্না করতে পারেননি বলে প্রশ্ন তোলা বা কটুক্তি গুরুতর নিষ্ঠুরতা বা হয়রানির কাজ বলা যাবে না।'
আদালত উল্লেখ করেছে, "যখন সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দেয়, তখন মনে হয় সবকিছুই অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে। যখন বিয়ের আগে সবকিছু প্রকাশ করা হয়েছিল এবং অভিযোগগুলি সর্বজনীন বা ভারতীয় দণ্ডবিধির (আইপিসি) ধারা ৪৯৮-এ এর অধীনে বিবেচনা করা নিষ্ঠুরতার ধারণার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, তখন স্বামী এবং তাঁর পরিবারকে বিচারের মুখোমুখি হতে বলা হলে হল, আইনের অপব্যবহার করা।"
এছাড়াও উল্লেখ করা হয়, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৮এ ধারা (ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৮৫ ধারা) একজন মহিলার বিরুদ্ধে তাঁর স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির আত্মীয়দের দ্বারা সংগঠিত অপরাধার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এটি জামিন অযোগ্য এবং আপোষহীন অপরাধ, যার অর্থ পুলিশ অভিযুক্তকে ওয়ারেন্ট ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে পারে। কিন্তু এক্ষেত্রে তেমন কিছুই ঘটেনি।
২০২২ সালের মার্চে বিয়ে হয়েছিল ওই ব্যক্তির। এই ব্যক্তির আগেও একটা বিয়ে ছিল। ২০১৩ সালে প্রথম বিয়ে ভেঙে যায়, পারস্পারিক সম্মতিতে বিচ্ছেদ ঘটেছিল। তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর অভিযোগ, বিয়ের দেড় মাস পরেও তাঁর সঙ্গে সঠিক আচরণ করা হয়নি। তাঁর আরও দাবি, স্বামীর শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতার কথা তাঁকে বিয়ের আগে জানায়নি শ্বশুরবাড়ির পরিবার।
আদালত প্রমাণ যাচাই করে স্ত্রীর দাবির মধ্যে অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিয়ের আগে দম্পতির মধ্যে চ্যাটের মাধ্যমে যেসব কথোপকথন হয়েছিল, তা চার্জশিটের অংশ ছিল। তা প্রমাণ করে যে, স্বামী স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছিলেন যে তিনি কী ট্যাবলেট খেতেন। আদালত এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, স্ত্রী তাঁর স্বামীর অসুস্থতা সম্পর্কে জানতেন এবং বিয়ের আগে তার চিকিৎসার কথা তাকে জানানো হয়েছিল।
স্ত্রী দীপাবলির আশেপাশে একটি ফ্ল্যাট কেনার জন্য ১৫ লক্ষ টাকা দাবি করার অভিযোগও করেছিলেন। তবে আদালত এই দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে, উল্লেখ করে যে স্বামীর ইতিমধ্যেই একটি ফ্ল্যাট ছিল।
হাইকোর্ট পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলিকে "সর্বজনীন" এবং নির্দিষ্ট বিবরণের অভাব বলে মনে করেছে। এটি উল্লেখ করেছে যে, স্ত্রীর বক্তব্য ছাড়া চার্জশিটে অন্য কোনও প্রমাণ ছিল না এবং তদন্তকারী আধিকারিক দম্পতির প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করেননি।
