আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাতের অন্ধকারে যেন কেঁপে উঠল দিল্লি। শেষ হল ছ'বছরের দৌরাত্ম্য। অবশেষে দিল্লি পুলিশের এনকাউন্টারে নিকেশ হল সিগমা গ্যাংয়ের চার কুখ্যাত সদস্য। রোহিনী এলাকায় গতকাল রাত প্রায় দুটো বেজে ২০ মিনিটে পুলিশের বিশেষ বাহিনী ঢুকে পড়ে সিগমা গ্যাং-এর ঘাঁটিতে। পালানোর চেষ্টা করতেই শুরু হয় এক ভয়ঙ্কর গুলির লড়াই। মাত্র কয়েক মিনিটের এই সংঘর্ষে মৃত্যু হয় গ্যাং-এর চার কুখ্যাত সদস্যের — রঞ্জন পাঠক, বিমলেশ মাহতো, মনীষ পাঠক এবং অমন ঠাকুর। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, এই চারজন বিহারের বিভিন্ন জেলায় একাধিক হত্যাকাণ্ড এবং ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিল। দীর্ঘ ছ'বছর ধরে এই সিগমা গ্যাং সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীদের জন্য আতঙ্কের আরেক নাম ছিল। পুলিশের দাবি, তারা বিহারের নির্বাচনের আগে বড় ধরনের অপরাধমূলক কাজ চালানোর পরিকল্পনা করছিল। বিহারের নির্বাচনের আগে দিল্লি পুলিশের এনকাউন্টারে খতম হল চার কুখ্যাত গ্যাংস্টার। 

 

দিল্লি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে সিগমা গ্যাংয়ের ঘাঁটিতে ঢুকে গ্যাংস্টারদের ধরার চেষ্টা করে পুলিশ। পালিয়ে যাওয়ার জন্য তারা শূন্যে গুলি ছুড়তে শুরু করে। এরপর পুলিশের এনকাউন্টারে চারজনেই জখম হয়। রাতেই রোহিনী এলাকায় ড. বাবা সাহেব আম্বেদকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। সেখানে চার গ্যাংস্টারকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। 

আরও পড়ুন: তিন ঘণ্টাতেই সর্বনাশ! বাংলার তরুণীকে গণধর্ষণ, বেঙ্গালুরুর বাড়ি থেকে সর্বস্ব লুটেও নিল পাঁচ অভিযুক্ত, শিউরে ওঠা কাণ্ড

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রঞ্জন পাঠক ও বিমলেশ মাহতোর বয়স ২৫ বছর এবং মনীষ পাঠকের বয়স ৩৩ বছর, অমন ঠাকুর ২১ বছরের। গত ছ'বছর ধরে বিহারে একাধিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত এই চারজন। বিশেষত সুপারি কিলার হিসেবে কাজ করেছে এরা। ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে এদের বিরুদ্ধে। বছরের পর বছর সিগমা গ্যাংয়ের সদস্যদের ভয়ে তটস্থ থাকতেন স্থানীয়রা। 

 

পাঠকের বিরুদ্ধে আটটি অপরাধের মামলা দায়ের হয়েছিল আগেই। এর মধ্যে বিহারের সীতামারহি ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে পাঁচটি হাই প্রোফাইল খুনের মামলা রয়েছে। রঞ্জন পাঠক সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশকে খোলা হুমকিও দিয়েছিল। একাধিক অডিও বার্তায় ওপেন চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিল পুলিশের দিকে। একাধিক অডিও বার্তা খতিয়ে দেখার পর পুলিশ জানিয়েছে, বিহারের নির্বাচনের আগেই বড়সড় অপরাধমূলক কাজ চালানোর পরিকল্পনা করেছিল এই চারজন। 

 

দিল্লি পুলিশ সূত্রে আরও জানা, প্রায় সাত বছর ধরেই অপরাধমূলক কাজে সক্রিয় ছিল সিগমা গ্যাং। বিহার পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে দিল্লিতে এসেই ঘাঁটি তৈরি করেছিল। গত কয়েকদিন ধরেই ওই এলাকায় নজরদারি চালাচ্ছিল পুলিশ। পরিকল্পনামাফিক গতকাল রাতে ঘাঁটিতে ঢুকে পড়ে পুলিশ। এনকাউন্টারের পরেই এলাকায় কড়া পাহারায় রয়েছে পুলিশ বাহিনী। ইতিমধ্যেই ফরেন্সিক টিম এসে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শুরু করেছে।