আজকাল ওয়েবডেস্ক: গুরগাঁওয়ের অভিজাত সুশান্ত লোক এলাকার বাসিন্দা, ২৫ বছর বয়সি টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদবকে নির্মমভাবে খুন করার ঘটনায় অভিযুক্ত বাবা দীপক যাদবের সম্পর্কে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, দীপক যাদব প্রতি মাসে ১৫ থেকে ১৭ লক্ষ টাকা আয় করতেন। এমনকি তাঁর নামে একাধিক সম্পত্তি, গুরগাঁওয়ে একটি বিলাসবহুল ফার্মহাউস এবং লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্রও রয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার সকাল প্রায় ১০টা ৩০ মিনিট নাগাদ। তখন রান্নাঘরে সকালের জলখাবার তৈরি করছিলেন রাধিকা।
ঠিক সেই সময় দীপক যাদব নিজের লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুক থেকে পরপর পাঁচ রাউন্ড গুলি চালান। যার মধ্যে তিনটি গুলি লাগে রাধিকার পিঠে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। রাধিকার কাকা কুলদীপ যাদব পুলিশকে জানান, গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে তিনি দৌড়ে ওপরে যান এবং দেখেন রাধিকা রান্নাঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, বাড়ির ড্রয়িং রুম থেকে বন্দুকটি উদ্ধার হয়েছে। ঘটনার পর কুলদীপ এবং তাঁর ছেলে পীযূষ রাধিকাকে তৎক্ষণাৎ নিয়ে যান হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: মায়ের জন্মদিনেই গুলিতে ঝাঁঝরা মেয়ে, বাবা-মেয়ের সম্পর্কের মাঝে এক যুবক? ভিডিওতেই লুকিয়ে সবটা!
তবে চিকিৎসকরা জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, দীপকের নামে গুরগাঁওয়ের বিভিন্ন স্থানে একাধিক ভাড়া দেওয়া সম্পত্তি রয়েছে, যেখান থেকে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা পান। গ্রামের সকলেই জানেন তিনি ধনী এবং প্রভাবশালী ব্যক্তি। পুলিশ দীপকের সমস্ত সম্পত্তি ও আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখছে। রাধিকা বর্তমানে রাজ্যস্তরের টেনিস খেলোয়াড়। সম্প্রতি, একাধিক প্রতিযোগিতায় জয়লাভ করেছিলেন তিনি। তবে টেনিস খেলার পাশাপাশি ইনস্টাগ্রামে রিল বানানোর প্রতি আসক্তি ছিল তাঁর। এদিনও সেই কারণেই রাধিকার সঙ্গে বচসা লাগে তাঁর বাবার। আর সেই ক্ষোভ থেকেই এই ঘটনা ঘটে বলে খবর সূত্রের। ঘটনাটি ঘটেছে গুরগাঁওয়ের সেক্টর-৫৭ অঞ্চলের একটি বাড়ির ভিতরে।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত বাবা নিজের লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র থেকে তাঁর মেয়েকে লক্ষ্য করে পাঁচ রাউন্ড গুলি চালান। যার মধ্যে তিনটি গুলি রাধিকার শরীরে গিয়ে আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাধিকার ইনস্টাগ্রামে রিল বানানো এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সক্রিয়তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অসন্তুষ্ট ছিলেন তাঁর বাবা। সেই ক্ষোভ থেকেই অভিযুক্ত ব্যক্তি এই চরম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তের পর অনুমান পুলিশের। ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত বাবাকে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় দীপক জানান, কাঁধে আঘাত পাওয়ার পর তার মেয়ে একটি অ্যাকাডেমি খোলেন। কিন্তু দীপক গ্রামের অর্থাৎ ওয়াজিরাবাদের লোকজন তাঁকে নানাভাবে উপহাস করতেন বলে জানিয়েছেন। তিনি মেয়েকে অ্যাকাডেমি বন্ধ করে দিতেও বলেছিলেন। কিন্তু মেয়ে তাতে রাজি হননি কোনওভাবেই। তাঁর দাবি, উপহাস, কটাক্ষে জেরবার হয়েই বেছে নিয়েছেন চরম পদক্ষেপ। এমনকি, খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঘটনায় সুশান্ত লোক এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। রাজ্যস্তরের টেনিস তারকার এমন মর্মান্তিক পরিণতি কার্যত হতবাক হয়ে গিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
