আজকাল ওয়েবডেস্ক: ধর্ষণের মতো ঘৃণ্য কাজে বিভিন্ন দেশে কঠিন থেকে কঠিনতর সাজার নিদান রয়েছে। ভারতেও অপরাধ প্রমাণে যাবজ্জীবন কারদণ্ড বা ফাঁসির সাজার কথা বলা রয়েছে সংবিধানে। উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগর জেলার একটি মর্মান্তিক ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় তুলেছে। যেখানে একটি গ্রাম পঞ্চায়েত ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে এক তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে অদ্ভুত শাস্তি দিয়েছে। পঞ্চায়েতের নিদান, ওই ব্যক্তিকে সকলের সামনে দু'বার জুতোপেটা করা আদেশ দিয়েছিল পঞ্চায়েত। সেই ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর ফলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

ঘটনাটি ঘটেছে চারথাওয়াল থানা এলাকার একটি গ্রামে। ২৬ বছর বয়সী তরুণীর অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৫ মার্চ যখন তিনি গ্রামের বাইরে ঘুঁটে তৈরি করছিলেন, তখন জাট সম্প্রদায়ের তিরথপাল নামে ৬০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি তাঁকে জোর করে একটি টিউবওয়েলের কাছে একটি ঘরে টেনে নিয়ে যান এবং ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তরুণী হাতের কাছে থাকা কাস্তে ব্যবহার করে সেখান থেকে পালাতে সক্ষম হন। পরিবারের লোকজনকে গোটা ঘটনার কথা জানান। 

সব জানার পর তরুণীর পরিবার স্থানীয় পুলিশের দ্বারস্থ হয় এবং দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়। তবে, দ্রুত পুলিশি হস্তক্ষেপের পরিবর্তে, বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য গ্রাম প্রধানের বাড়িতে একটি পঞ্চায়েত ডাকা হয়। অনেককে হতবাক করে পঞ্চায়েত তিরথপালকে শাস্তি হিসেবে পাঁচ বার জুতোপেটা করার নির্দেশ দেয়। ওই তরুণীর পরিবারের দাবি, অভিযুক্তের কাকা হস্তক্ষেপে শাস্তি কমিয়ে আনা হয়। যার ফলে মাত্র দু'বার জুতোপেটা করা হয় ওই ব্যক্তিকে।

এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেন। এর পরেই বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, পঞ্চায়েত সদস্যদের উপস্থিতিতে অভিযুক্তকে জুতো দিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। ভাইরাল হওয়া ক্লিপটি ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। অনেকেই মামলাটিতে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা এবং এত তুচ্ছ শাস্তি দিয়ে একটি ফৌজদারি বিষয় সমাধানে পঞ্চায়েতের প্রচেষ্টার সমালোচনা করেছেন।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর, পুলিশের ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা বিষয়টিতে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ধর্ষণের চেষ্টার সঙ্গে সম্পর্কিত গুরুতর অভিযোগে তিরথপালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে। তবে, ভুক্তভোগীর পরিবার এখনও সন্দেহ প্রকাশ করছে। তাদের আশঙ্কা, সামাজিক চাপে মামলাটি দমিয়ে দেওয়া হতে পারে।