আজকাল ওয়েবডেস্ক: গ্রীক সৌন্দর্যের স্বর্ণ অনুপাত বা 'গোল্ডেন রেশিও'-র নিরিখে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর মুখের অধিকারী হিসেবে উঠে এলেন হলিউড অভিনেত্রী অ্যাম্বার হার্ড। ২০১৬ সালে লন্ডন-ভিত্তিক বিউটি সার্জেন ড. জুলিয়ান ডি সিলভা একটি গবেষণার মাধ্যমে দাবি করেন, অ্যাম্বারের মুখের গঠন প্রায় ৯১.৮৫% নির্ভুল ‘গোল্ডেন রেশিও’-র সঙ্গে, যা প্রাচীন গ্রীকরা সৌন্দর্যের নিখুঁত মাপকাঠি হিসেবে মেনে নিতেন। ড. ডি সিলভা এই গবেষণায় অ্যাম্বারের চোখ, নাক, ঠোঁট, থুতনি, চোয়াল এবং মুখের সামগ্রিক গঠন মিলিয়ে মোট ১২টি মুখাবয়বীয় বিন্দু বিশ্লেষণ করেন। মুখের বিভিন্ন অনুপাত ডিজিটাল ফেস ম্যাপিং প্রযুক্তির সাহায্যে মাপা হয়। গবেষণায় দেখা যায়, অ্যাম্বারের মুখের কাঠামো এতটাই সুষম যে, তা প্রায় ৯২% পর্যন্ত মিল খায় সৌন্দর্যের আদর্শ স্বর্ণ অনুপাত ‘ফাই’ (Phi – 1.618)-এর সঙ্গে।
এই গবেষণা থেকে আরও উঠে এসেছে যে, কিম কার্দাশিয়ানের ভ্রু, স্কারলেট জোহানসনের চোখ, এবং এমিলি রাতাজকৌস্কির ঠোঁট— সৌন্দর্যের নিরিখে সেরা। পুরুষদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর মুখের স্বীকৃতি পেয়েছেন রবার্ট প্যাটিনসন, যাঁর স্কোর ৯২.১৫%। ড. ডি সিলভা ইউএস উইকলিকে বলেন, “প্রাচীন গ্রিকরা আবিষ্কার করেছিলেন যে প্রকৃতির বিভিন্ন স্তরে এই অনুপাত বিদ্যমান। হাজার হাজার বছর ধরে এটি সবচেয়ে আকর্ষণীয় মুখাবয়বের গোপন সূত্র হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।”
আরও পড়ুন: খালি পেটে লেবু জল: আদৌ কি সবার জন্য উপকারী? কী বলছেন চিকিৎসকরা জেনে নিন
তবে এই সৌন্দর্যের বৈজ্ঞানিক স্বীকৃতির মাঝেই ব্যক্তিগত জীবনের বিতর্কে জর্জরিত অ্যাম্বার হার্ড। প্রাক্তন স্বামী জনি ডেপের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ এনে ২০১৮ সালে Washington Post-এ একটি প্রবন্ধ লেখেন অ্যাম্বার। সেই সূত্রে জনি ডেপ তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন এবং ৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। পাল্টা অ্যাম্বারও ১০০ মিলিয়নের মামলা করেন। আদালতের রায়ে জনিকে ১০ মিলিয়ন ডলার ও শাস্তিমূলক ৫ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় (যা পরে কমিয়ে ৩.৫ মিলিয়ন ডলারে নামিয়ে আনা হয়)। তবে অ্যাম্বার ২ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ পান।
আইনি লড়াই শেষে আর্থিক সংকটে ভুগছেন অ্যাম্বার। TMZ-র রিপোর্ট বলছে, সম্প্রতি নিউ ইয়র্কের হ্যাম্পটনে একটি ডিসকাউন্ট স্টোরে বোন হুইটনির সঙ্গে কেনাকাটার সময় তাঁকে দেখা যায়। প্রসঙ্গত, ড. ডি সিলভার গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞান ও সৌন্দর্যবোধের মেলবন্ধন ঘটানো। তাঁর মতে, এটি নিছক বিনোদনের জন্য নয়, বরং প্লাস্টিক সার্জারি ও প্রসাধন বিজ্ঞানের অগ্রগতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক মাপকাঠি। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করেন, সৌন্দর্য কোনও নির্দিষ্ট অনুপাত দিয়ে নির্ধারিত হয় না—মানুষের সংস্কৃতি, অনুভব ও দৃষ্টিভঙ্গিই সৌন্দর্যের আসল ব্যাখ্যা। তবুও, ‘বিজ্ঞানসম্মত সৌন্দর্য’-র এই মাপকাঠিতে অ্যাম্বার হার্ডের মুখ নিঃসন্দেহে এক যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত।
