আজকাল ওয়েবডেস্ক:  প্রাক্তন পূর্ব পাকিস্তানকে ফিরে পেতে চায় পাকিস্তান। ‘বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থেই’ নাকি দুই পাকিস্তানের পুনর্মিলন জরুরি। এমনই নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঘণিষ্ট বলে পরিচিত ইসলামাবাদের পত্রিকা ‘দ্য ক্যাচলাইন’-এ। সাংবাদিক তাবাসসুম মোয়াজ্জাম খান লিখেছেন ‘পূর্ব পাকিস্তানকে’ নিয়ে ৫৪ বছর পর হিসেব নিকেশের সময় এসেছে। তাঁর সাফ কথা, ‘পূর্ব পাকিস্তান’কে ফিরে আনতে হবে। এই নিবন্ধ প্রকাশের পরই আওয়ামী লিগ পাকিস্তানিদের এধরনের মনোভাবের কড়া সমালোচনা করেছে। তাদের মতে, মহম্মদ ইউনূসের আমলে বাংলাদেশ মোটেই সুরক্ষিত নয়। ইউনূস বিদেশিদের কাছে দেশ বিক্রি করছেন বলেও অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে ঘণিষ্ঠতা বাড়ছে বাংলাদেশের। মঙ্গলবারই ঢাকায় নিযুক্ত নতুন পাকিস্তানি হাইকমিশনার ইমরান হায়দার রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের কাছে নিজের পরিচয় পত্র পেশ করেছেন। চলতি মাসেই পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বাংলাদেশে আসছেন। নতুন করে সখ্যতার মাঝেই পাকিস্তানি পত্রিকায় ‘বাংলাদেশ দখলের’ খবর অনেকের মধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। একাত্তরে পরাজয় এখনও মেনে নিতে পারেনি পাকিস্তান। তাই তাঁরা বাংলাদেশকে অশান্ত করতে চাইছে বলে অভিযোগ। এদিকে, বাংলাদেশে অশান্তি বাড়ছে। সাম্প্রতিক সময়ে বরগুনা সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের গ্রন্থাগারে আগুন লাগায় বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থকরা, স্থানীয় সূত্রের খবর তেমনটাই। এই লাইব্রেরিতে আওয়ামী লিগ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রচুর বই ছিল বলে জানা গিয়েছে। অভিযোগ, ইউনূসের প্রচ্ছন্ন মদতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকেই ধ্বংস করছে এনসিপি ও জামায়াত। পাকিস্তানপন্থীরাও বেশ সক্রিয়। আওয়ামী লিগের তরফে-এর বদলা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দেশে ফিরে তিনি এর বিচার করবেন। সব মিলিয়ে টালমাটাল ওপার বাংলার পরিস্থিতি।

আরও পড়ুন: ভারতকে সতর্ক করতে গিয়ে মুখ পুড়ল ইউনূস সরকারের! আওয়ামী লিগ ইস্যুতে মোক্ষম জবাব এদেশের

নিজেদের টালমাটাল পরিস্থিতিতে আবার ভারতকে সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল ইউনূস সরকার। বুধবার বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক দাবি করেছে,  ভারতের শহরগুলিতে আওয়ামী লীগের অফিস খোলা হয়েছে। আর এই ঘটনা ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে। কয়েকঘণ্টাতেই জবাব দিয়েছে ভারত। ভারত সরকার জানিয়েছে যে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যদের এদেশে কোনও বাংলাদেশ বিরোধী কার্যকলাপের বিষয়ে তারা অবগত ছিল না। 

বুধবার ভারতের বিদেশমন্ত্রক জানায়, 'ভারতে আওয়ামী লিগের সদস্যদের দ্বারা বাংলাদেশ বিরোধী কোনও কার্যকলাপ বা ভারতীয় আইনের পরিপন্থী কোনও কর্মকাণ্ড সম্পর্কে ভারত সরকার অবগত নয়। সরকার ভারতের মাটি থেকে অন্য দেশের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কার্যকলাপ পরিচালনার অনুমতি দেয় না।বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রেস বিবৃতি তাই ভুল। ভারত আশা করে, জনগণের ইচ্ছা এবং ম্যান্ডেট নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অবাধ, সুষ্ঠু এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হবে।'

বুধবারের এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ বিদেশ মন্ত্রক দাবি করে কলকাতায় এবং দিল্লিতে অফিস খুলেছে সে দেশে নিষিদ্ধ আওয়ামী লিগ। বিবৃতিতে লেখা হয়, 'এই ঘটনা ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক বিশ্বাস এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার দ্বারা পরিচালিত সু-প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক বজায় রাখার ঝুঁকিও তৈরি করবে এবং বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি রূপান্তরেও গুরুতর প্রভাব ফেলবে।'