আজকাল ওয়েবডেস্ক: মহিলা ব্রিগেড গড়ল জইশ। নেতৃত্বে মাসুদ আজহারের বোন। পাকিস্তানের মদতপুষ্ট জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদ (জেএম) এই প্রথম তাদের মহিলা শাখা খোলার কথা ঘোষণা করল। নতুন এই শাখাটির নাম দেওয়া হয়েছে 'জামাত-উল-মুমিনাত'। রাষ্ট্রপুঞ্জের চোখে সন্ত্রাসবাদী তথা জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের নামে জারি করা একটি চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। সূত্রের খবর, গত বুধবার, ৮ অক্টোবর, পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুরের মারকাজ উসমান-ও-আলি ঘাঁটিতে নতুন এই বাহিনীতে সদস্য নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জইশের প্রচারমাধ্যম 'আল-কালাম মিডিয়া'র প্রচার করা চিঠি অনুযায়ী, জামাত-উল-মুমিনাত সংগঠনটি মহিলা ব্রিগেড হিসেবে কাজ করবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের খবর উল্লেখ করে তারা জানিয়েছে, এই শাখার নেতৃত্বে থাকবেন মাসুদ আজহারের বোন সাদিয়া আজহার। গত ৭ মে ভারতীয় বাহিনীর চালানো 'অপারেশন সিঁদুর'-এ জইশের মারকাজ সুভানাল্লা ঘাঁটিতে সাদিয়ার স্বামী ইউসুফ আজহার নিহত হয়েছিলেন।
জানা গিয়েছে, নিয়োগের জন্য মূলত জইশ কমান্ডারদের স্ত্রী এবং বাহাওয়ালপুর, করাচি, মুজফ্ফরাবাদ, কোটলি, হরিপুর ও মনসেহরার বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠরতা অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল মহিলাদের নিশানা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, 'অপারেশন সিঁদুর'-এর সময় ভারতীয় সেনা দক্ষিণ পঞ্জাবের বাহাওয়ালপুরে জইশের সদর দপ্তরে হামলা চালিয়েছিল। ওই হামলার পরেই জইশ কমান্ডার ইলিয়াস কাশ্মীরি গত মাসে প্রকাশিত একটি ভিডিওয় দাবি করেছিল যে, হামলায় মাসুদ আজহারের পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন।
এত দিন পর্যন্ত জিহাদী ভাবধারায় পুষ্ট জইশ সশস্ত্র জিহাদ বা লড়াইয়ের ময়দানে মহিলাদের যোগদানে নিষেধাজ্ঞা জারি করে রেখেছিল। কিন্তু পহেলগাম হামলা এবং 'অপারেশন সিঁদুর'-এর পর তারা এই নীতিতে বদল এনেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, মাসুদ আজহার এবং তার ভাই তালহা আল-সইফ যুগ্ম ভাবে জইশের সাংগঠনিক কাঠামোতে মহিলাদের অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। এর জেরেই এই নতুন মহিলা ব্রিগেড তৈরির পথ প্রশস্ত হয়েছে।
এত দিন ইসলামিক স্টেট (আইএস), বোকো হারাম, হামাস এবং এলটিটিই-র মতো সংগঠন মহিলা আত্মঘাতী বোমারু ব্যবহার করলেও, জইশ, লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি) বা হিজবুল মুজাহিদিন (এইচএম) সেই পথে হাঁটেনি।
'অপারেশন সিঁদুর'-এর পর জইশ, হিজবুল এবং লস্করের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে তাদের ঘাঁটি সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে বলে খবর। ভেঙে পড়া পরিকাঠামো পুনর্গঠনের মরিয়া চেষ্টায় পাকিস্তানের মদতপুষ্ট হ্যান্ডলাররা এখন সাধারণ মানুষের কাছে চাঁদা চাইছে বলে জানা গিয়েছে।
