আজকাল ওয়েবডেস্ক: পাকিস্তানে গত কয়েক দিনে তিনটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর ফলে অনলাইন এবং কূটনৈতিক মহল জুড়ে জল্পনা ঝড় উঠেছে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হানার পর ভারতের  প্রত্যাঘাত এবং পাকিস্তানের পাল্টা আক্রমণের ফলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। যুদ্ধ-পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এমন সময় পাকিস্তানের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে এই ভূমিকম্পের ঘটনাটি একটাই প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। সকলকে আঁধারে রেখে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা করছে না তো পাকিস্তান?

গত সোমবার সে দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৪.৬। ১০ মে এক দিনে দুই বার ভূমিকম্প হয়। একটি ছিল ৪.৭ এবং অপরটি ৪ মাত্রার। যদিও ভূবিজ্ঞানী এবং আবহাওয়াবিদরা ভূমিকম্পের কারণ হিসেবে হিমালয়ান অঞ্চলের টেকটনিক প্লেটের নড়াচড়াকে দায়ী করেছেন। কিন্তু বারবার ভূমিকম্প এবং সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানের সময়ের ঘটনাবলী সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা তত্ত্বের ঝড় তুলেছে। 

একটি ভিডিও প্রকাশ করে একজন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, কিরানা হিলে পাকিস্তানের পরমাণু ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। সেই কারণে ৪ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।

?ref_src=twsrc%5Etfw">May 12, 2025

অন্য একজন লিখেছেন, "১৩ দিনে চারটি ভূমিকম্প। ৩০ এপ্রিল, ৫, ১০ এবং ১২ মে। প্রাকৃতিক ঘটনা না কি ভূগর্ভে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার লক্ষণ বা সামরিক কার্যকলাপের লক্ষণ? ভূমিকম্পের কেন্দ্র প্রায় সব একই।"

কয়েকজন এও দাবি করেছেন, এই কম্পনগুলি গোপন পারমাণবিক পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। তাদের যুক্তি, পাকিস্তান এর আগেও ভূগর্ভস্থে পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে, বিশেষ করে ১৯৯৮ সালে চাগাই পাহাড়ে। এই ধরনের পরীক্ষার ফলে প্রায়শই ভূমিকম্পের কার্যকলাপ রিখটার স্কেলে ধরা পড়ে।

জাতীয় ভূকম্পন কেন্দ্রের ডিরেক্টর ও পি মিশ্র যদিও এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়েছেন। সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি জানিয়েছেন, পরমাণু বিস্ফোরণের ধরণ আলাদা। অপরদিকে, প্রাকৃতিক ভূমিকম্পের দু'টি ধাপ থাকে। কিন্তু পারমাণবিক বিস্ফোরণের একটি স্বতন্ত্র তৃতীয় ধাপ আছে। এটি পারমাণবিক বিস্ফোরণের পরে ভূপৃষ্ঠের প্রতিধ্বনির কারণে ঘটে। সিসমোগ্রাফগুলি এটি স্পষ্টভাবে শণাক্ত করতে পারে।

প্রবীণ ভূকম্পবিদ এ কে শুক্লা জানিয়েছেন, সিসমোগ্রাফে পারমাণবিক বিস্ফোরণের রেকর্ড ভিন্নভাবে করা হয়। তিনি বলেন, "পূর্ববর্তী ভূমিকম্পগুলি বিভিন্ন স্থানে হয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চলে পারমাণবিক ঘাঁটি ছড়িয়ে থাকা সম্ভব নয়।"

পাকিস্তান ভারত এবং ইউরেশিয়ান টেকটোনিক প্লেটের মধ্যে সক্রিয় সীমানায় অবস্থিত। বালুচিস্তান, খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং গিলগিট-বালতিস্তানের মতো প্রদেশগুলি ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার মধ্যে পড়ে।

তবুও ভূমিকম্পের সময় দেখে অনেকেই ভ্রু কুঁচকেছেন। অনেকের ধারণা, কোনও রকম উত্তেজনা ছাড়াই নিজেদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করছে পাকিস্তান। অনেকে মনে করছেন, উত্তেজনার পরিবেশে প্রাকৃতিক ঘটনাগুলিকে কাকতালীয়ভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।