আজকাল ওয়েবডেস্ক: দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলের বেওয়ারিশ কুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সাম্প্রতিক এই রায়ের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন সেলিব্রিটি, পশুপ্রেমী, পশু অধিকার কর্মী এবং রাজনৈতিক নেতারা তাদের আওয়াজ তুলেছেন।
দিল্লি-এনসিআর এলাকা থেকে সমস্ত বেওয়ারিশ কুকুর সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার ১১ আগস্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের উপর বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট তার রায় সংরক্ষণ করেছে। বিচারপতি বিক্রম নাথ, সন্দীপ মেহতা এবং এনভি আঞ্জারিয়ার তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে যে তারা ১১ আগস্টের একটি ভিন্ন বেঞ্চের আদেশের উপর একটি অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেবে।
এর আগে, ১১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট পথ কুকুরের আতঙ্কের প্রতি কঠোর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দিল্লি-এনসিআরকে আট সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত এলাকা থেকে পথকুকুর সরিয়ে ফেলা এবং স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত আশ্রয়কেন্দ্রে কুকুরগুলিকে রাখার নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন: পুতিনের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে বড় ঘোষণা ট্রাম্পের, ভারতের জন্য আদৌ স্বস্তির বার্তা?
ভারতে পথভ্রষ্ট কুকুর নিয়ে আলোচনা এখনও বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে। জনসাধারণের মধ্যে এই সিদ্ধান্তের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ ইঙ্গিত দিয়েছেন যে এটি প্রাণী অধিকারের লঙ্ঘন। কিন্তু ইতিমধ্যেই আরও একটি দেশ প্রায় ৩০ লক্ষ পথকুকুর হত্যার পরিকল্পনা করছে, যা বিশ্বব্যাপী ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। এমনকি এই নিধনযজ্ঞ শুরুও হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে।
২০৩০ সালের ফিফা বিশ্বকাপ মরক্কো, স্পেন এবং পর্তুগালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে। জানা গিয়েছে যে মরক্কো তার শহরগুলিকে পরিষ্কার এবং সুন্দর দেখানোর জন্য প্রায় ৩০ লক্ষ পথকুকুরকে হত্যা করার লক্ষ্য নিয়েছে। বিশ্বজুড়ে প্রাণী অধিকার গোষ্ঠী, পশুপ্রেমী এবং সমাজকর্মীরা এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন।

মরোক্কো সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা যখন ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন করবে তখন সেখানে প্রচুর মানুষ আসবেন। ফলে রাস্তাঘাট যাতে পরিষ্কার থাকে সেদিকে নজর রাখা তাদের প্রধান কাজ। তাই তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানকার মাঠগুলিকে ফিফার হিসাব অনুসারে তৈরি করতে শুরু করেছে। সেখানকার মিডিয়া জানিয়েছে ইতিমধ্যেই কুকুর নিধন যজ্ঞও শুরু হয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: নজিরবিহীন, শুনানি চলাকালীন আদালত কক্ষে ভাত ছুড়ে ফেললেন অভিযুক্ত! কালাজাদুর আশঙ্কা আইনজীবীদের
বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, কুকুরগুলিকে বিষ প্রয়োগ করে, গুলি করে, অথবা বৈদ্যুতিক শক দিয়ে হত্যা করা হয়। প্রায়শই, তাদের শারীরিকভাবে যন্ত্রণা দিয় আটকে রাখা হয়। একটি স্ট্র্যাপ আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয় এবং তারপরে কেবল তাদের নিচে ফেলে দেওয়ার চেয়ে আরও অমানবিকভাবে হত্যা করা হয়। কিছু এলাকায়, এমনকি তাদের ডুবিয়ে বা পুড়িয়ে মারা হয়েছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিশ্বব্যাপী প্রাণী কল্যাণ গোষ্ঠী এবং প্রাণী অধিকার কর্মীরা তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। বিশ্বব্যাপী একজন সুপরিচিত বন্যপ্রাণী এবং প্রাণী সংরক্ষণবাদী জেন গুডঅল বিষয়টি সম্পর্কে ফিফা মহাসচিব ম্যাটিয়াস গ্রাফস্ট্রোমকে একটি চিঠি লিখেছিলেন এই বিষয়ে।মরোক্কোতে এর আগেও বহু পথকুকুরকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এবার বিশ্বকাপ উপলক্ষ্যে সেই হত্যা বিরাট যজ্ঞে পরিনত হবে।
ফিফা বিশ্বকাপ নিয়ে গোটা বিশ্বে প্রতি বছরই ঝড় ওঠে। কোটি কোটি ফুটবল সমর্থকরা চিৎকার করে গলা ফাটান তাদের প্রিয় দলের জন্য। শুধু ফুটবল নয় গোটা বিশ্বের কাছে এটি একটি সংস্কৃতি যাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববাসী একসূত্রে চলে আসে। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলে ফুটবলকে এক করে চলে আসেন মাঠে। একবাস মিস করে গেলেই অপেক্ষা করতে হবে আরও চারটি বছর।
