আজকাল ওয়েবডেস্ক: সাম্প্রতিককালে বিয়ের অনুষ্ঠানে সবাইকে নিমন্ত্রণ করার প্রচলন অনেকটাই বদলে গিয়েছে। খরচ কমাতে অনেকেই এখন আর আত্মীয়-পরিজনদের নিমন্ত্রণ করেন না। বদলে এমন এক কৌশল অবলম্বন করেন, যা সাধারণত আমন্ত্রিতরা আস্তে ধীরে বুঝতে পারেন। সম্প্রতি এমনই এক ঘটনায় পড়েন এক যুবতী। খবর সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি তাঁর এক সহকর্মীর কাছ থেকে বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র পেয়ে অনুষ্ঠানে যান। কিন্তু অনুষ্ঠানে গিয়ে জানতে পারেন, অতিথি তালিকায় তাঁর নাম নেই। এরপর নিমন্ত্রণপত্রটি ভালো করে দেখার পর তিনি চমকে যান।
সাধারণত বিয়ের নিমন্ত্রণ পাওয়া আনন্দের বিষয়। বিশেষ করে যখন সেটা প্রথমবারের মতো হয়। কিন্তু ওই যুবতীর জন্য দিনটি হয়ে দাঁড়ায় চরম অপমানের। কারণ, তাঁকে বিয়ের অনুষ্ঠানের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। প্রশ্ন হল কিন্তু কেন?
যুবতী জানিয়েছেন, সম্প্রতি তিনি এক সহকর্মীর বিয়েতে অংশ নেন। অনুষ্ঠানটি গির্জায় আয়োজিত হয়েছিল। বিয়ের অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে উপভোগ করছিলেন সবাই। যুবতী কনে’র সঙ্গে ছবি তোলার পরিকল্পনা করেছিলেন এবং অনুষ্ঠানের ভোজেও অংশ নেওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। কিন্তু টেবিল পরিকল্পনায় নিজেদের নাম খুঁজে না পেয়ে অবাক হন যুবতী ও তাঁর আরেক সহকর্মী। পরে ‘মাস্টার অব সেরিমনি’ এসে তাঁদের নিমন্ত্রণপত্র দেখতে চান এবং স্পষ্টভাবে তাঁদের জানান, তাঁরা কেবল গির্জার অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যার পানীয় অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রিত ছিলেন, ডিনারের জন্য নয়।
নিমন্ত্রণপত্রে অত্যন্ত ছোট অক্ষরে উল্লেখ ছিল, যে তাঁরা ভোজে নিমন্ত্রিত নন। চূড়ান্ত অপমানিত হয়ে দুই সহকর্মী তৎক্ষণাৎ চুপচাপ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। পরে তাঁরা জানতে পারেন, কনে কেবল অফিসের সহকর্মীদের নিমন্ত্রণ করেন কারণ তাঁর বস সেটি চেয়েছিলেন বলে।
ওই যুবতী সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে অভিজ্ঞতার কথা জানান। তিনি বলেন, 'আমরা ভেবেছিলাম আমরা ওর বন্ধু, কিন্তু বাস্তবে আমাদের শুধু নিয়ম রক্ষা করতে ডাকা হয়েছিল।'
তাঁরা তখনও পার্টির পোশাকেই ছিলেন। পরে তাঁরা একটি স্থানীয় ক্যাফেতে গিয়ে বেকন রোল ও চা খান। এরপর নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যান। হোস্টেস তাঁদেরকে পরে সন্ধ্যার পার্টির জন্য আবার অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছে দেন। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তাঁরা পুনরায় সেখানে ফিরে গেলে দেখেন, বাকিরা ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠানে মদ্যপান করে মাতাল। সেখানে তাঁরা একমাত্র 'সন্ধ্যার অতিথি'।
যুবতী জানান, তাঁদের চারপাশে তখন অস্বস্তিকর পরিবেশ। বিশেষ করে কিছু পুরুষ অতিথির ‘অতিরিক্ত ঘনিষ্ঠ আচরণে’ তাঁরা শেষমেশ অনুষ্ঠান ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে অসহায় হয়ে একটি স্থানীয় বারে যান যুবতী ও তাঁর সহকর্মী। সেখানে অতিথিপরায়ণ কিছু স্থানীয় মানুষ তাঁদের সময়টা আনন্দময় করে তোলেন।
ওই যুবতী তাঁর অভিজ্ঞতায় আরও বলেন, 'স্থানীয়রা আমাদের দিনটা বাঁচিয়েছেন। তাঁরা নিশ্চিত করেছেন যে স্কটল্যান্ডে দিনের শেষে অতিথিদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হয় না।' এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, 'এখন আমি প্রতিটি বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র খুব ভালো করে পড়ি। যদি শুধু সন্ধ্যার অনুষ্ঠানের জন্য ডাকা হয়, আমার সমস্যা নেই। তবে সেটা যেন স্পষ্ট করে বলা হয়।'
তবে শেষ পর্যন্ত কনেকে এক মোক্ষম জবাবও দেন তাঁরা। 'আমরা প্রত্যেকে ৫০ পাউন্ড করে উপহারের খামে রেখেছিলাম এবং কনের রেজিস্ট্রি থেকে দামী বিছানার সেট কিনেছিলাম। কিন্তু অপমানিত হওয়ার পর খাম থেকে টাকা তুলে নিই এবং কেবল উপহারটাই দিই।'
আরও পড়ুনঃ ভয়াবহ হড়পা বানের তাণ্ডব উত্তরকাশীতে! নিখোঁজ শ'য়ে শ'য়ে মানুষ, চলছে উদ্ধারকাজ
ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ পেতেই ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। একজন বিদ্রুপ করে বলেন, 'কাউকে বিয়েতে ডেকে খাওয়াতে না পারা খুবই অভদ্রতা। কাউকে পুরো দিন আমন্ত্রণ জানাও, অথবা শুধু সন্ধ্যার জন্য। এই অর্ধেক-অর্ধেক ব্যাপারটা কোনওভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।'
