আজকাল ওয়েবডেস্ক: যে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি। তালিকায় থাকতে পারে বিমান ছিনতাই, থাকতে পারে সন্ত্রাসী হামলা। সেই পরিস্থিতিতে আশু কর্তব্য কী? কীভাবে সামাল দেওয়া যাবে সবদিক। তা বোঝাতেই চলল বিশেষ মহড়া। রাত থেকে ভোর পর্যন্ত। ১৮-১৯ জুলাই রাত থেকে ভোর পর্যন্ত কলকাতা বিমানবন্দরে মহড়া চলল।
জানা গিয়েছে, টানা সাতঘণ্টা ধরে চলে এই মহড়া। যেখানে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছে সিআইএসএফ এবং এনএসজি। কীভাবে ঘটতে পারে বিপদ, সেই ;পরিস্থিরিতে কীভাবে মোকাবিলা, একে একে হাতে কলমে অনুষ্ঠিত হয় সবটা। নিরাপত্তা হুমকির ক্ষেত্রে প্রস্তুতি মূল্যায়ন করার জন্য বিমানবন্দরের বিভিন্ন অংশীদার এবং নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে এই মহড়াটি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পরিকল্পনা করা হয়েছিল এবং সেভাবেই ধাপে ধাপে সম্পন্ন করা হয় গোটা প্রক্রিয়াটি।
আরও পড়ুন: গ্রেপ্তার করেছিলেন কেজরিওয়াল-হেমন্ত সোরেনকে, চাকরি জীবন শেষের বহু আগেই যা করে বসলেন এই অফিসার
হাইজ্যাক-বিরোধী মহড়ার অংশ হিসাবে, ১৮ জুলাই রাত ৯টা ৩৪ মিনিটে একটি A320 বিমানের ক্রু এবং ৭৫ জন ডামি যাত্রী নিয়ে একটি সিমুলেটেড হাইজ্যাক দৃশ্যকল্প অর্থাৎ বিমান ছিনতাই হবে পরিস্থিতি মোকাবিলা কীভাবে তার মহড়া শুরু হয়। মহড়ার অংশ হিসেবে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (ATC) ‘হাইজ্যাক করা’ বিমান থেকে একটি জরুরি ফোন পায়। অবিলম্বে অ্যারোড্রোম কমিটি দ্রুত বৈঠকে বসে পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, কী হতে চলেছে পরিবর্তী পদক্ষেপ। তারপরেই বিমানটিকে আইসোলেশন বে-তে নিয়ে যাওয়া হয় রানওয়ে থেকে সরিয়ে। ডামি বিমান ছিনতাইকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন আইবি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিনিদিরা এবং সিআইএসএফ-এর কুইক রেসপন্স টিম। ন্যাশন্যাল সিকিউরিটি গার্ডের কাউন্টার হাইজ্যাল টাস্ক ফোর্স সক্রিয় হয়ে কাজ শুরু করে। একে একে দেখানো হয়, কীভাবে ছিনতাইকারীদের সঙ্গে ভেস্তে যায় আলোচনা এবং তার পরেও কীভাবে উদ্ধার করা হয় ওই বিমানের যাত্রীদের কর্মীদের এবং বিমানটিকে। ওই মহিড়া চলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টায় বেশি সময় ধরে।

বিমান ছিনতাইয়ের মহড়ার পরে, আরও একটি বিষয়ে মহড়া হয়। রাত ন’টা নাগাদ সন্ত্রাসবিরোধী মহড়া শুরু হয়। AAI-এর অপারেশনাল অফিসগুলিতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী হামলার মহড়া। অর্থাৎ এই ঘটনা ঘটলে, তৎক্ষণাৎ পরপর কোন কোন কর্তব্য পালন করতে হবে মুক্তি পাওয়ার জন্য। দেখানো হয় তা। মহড়ায় ১২ জন কর্মীকে পণবন্দী করা হয় এবং ডামি অফিসের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। রাজ্য পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (STF) এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং প্রবেশের চেষ্টা করে কিন্তু প্রচণ্ড প্রতিরোধ এবং সিমুলেটেড হতাহতের সম্মুখীন হয়।
হাইজ্যাকের দৃশ্যপটের সমাপ্তির পর, পণবন্দীদের সংকট মোকাবেলায় NSG টাস্ক ফোর্সকে মোতায়েন করা হয়। STF-এর কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্যও সংগ্রহ অর্থাৎ ব্রিফিংয়ের পর, NSG দল একটি সমন্বিত কৌশলগত অভিযান পরিচালনা করে, তাতে ছ’ জন মহড়া সন্ত্রাসীদের নিষ্ক্রিয় করে সমস্ত পণবন্দীদের সফলভাবে উদ্ধার করে। এই অভিযান ১৯ জুলাই ভোর ৪টা ২৫ মিনিটে শেষ হয়।
এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া জানাচ্ছে, এই মহড়াগুলির লক্ষ্য ছিল বেসামরিক বিমান চলাচল সুরক্ষার সঙ্গে জড়িত উচ্চ-স্তরের পরিস্থিতিতে প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা, আন্তঃসংস্থা সমন্বয় এবং সঙ্কট ব্যবস্থাপনা প্রোটোকল যাচাই করা।
