আজকাল ওয়েবডেস্ক: 'মিটিং না করো, কিন্তু অনুরোধ করছি ভেতরে এসো। অন্তত এক কাপ চা খেয়ে যাও।' দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেও জুনিয়র ডাক্তাররা আলোচনার জন্য ভেতরে না ঢোকার পর বাইরে এসে তাঁদের অনুরোধ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ ছাড়াও এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্বরাষ্ট্র সচিব নন্দিনী চক্রবর্তী ও রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজিব কুমার, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
গত বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক ভেস্তে গিয়েছিল তাঁদের 'লাইভ স্ট্রিমিং'-এর শর্তের জন্য। যা মানতে রাজি হয়নি রাজ্য সরকার। কারণ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিচারাধীন বিষয় তাই রাজ্য সরকার লাইভ স্ট্রিমিং-এর অনুমতি দিতে পারে না। এরপর শনিবার কালিঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জুনিয়র ডাক্তারদের ফের বৈঠকের সময় স্থির হয়। চিঠিতে জুনিয়র ডাক্তাররা শর্ত হিসেবে লাইভ স্ট্রিমিং-এর বিষয়টি না রাখলেও কালিঘাটে পৌঁছনোর পর জুনিয়র ডাক্তাররা দাবি করেন, হয় লাইভ স্ট্রিমিং অথবা গোটা বৈঠক ভিডিও রেকর্ডিং করতে হবে। যেটা দু'তরফই করবে। এর জন্য তাঁরা সঙ্গে করে দু'জন ভিডিওগ্রাফার নিয়ে যায়। কিন্তু রাজ্য সরকার তাঁদের দুই ভিডিওগ্রাফারকে ঢুকতে দেয়নি বলেই জানা গিয়েছে।
ফলে বাসভবনে না ঢুকে বাইরে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেই দাঁড়িয়ে থাকেন জুনিয়র ডাক্তাররা। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও তাঁরা ভেতরে না ঢোকায় শেষপর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী বৃষ্টি মাথায় নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। জুনিয়র ডাক্তাররা তাঁকে জানান, যাদের প্রতিনিধি হিসেবে তাঁরা এসেছেন তাঁদের জন্যই এই ভিডিও রেকর্ডিং। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ভিডিও রেকর্ডিং করা হবে। তাঁর কথায়, 'আমরা গোটা বৈঠক রেকর্ডিং করে রাখব। এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে সেই রেকর্ডিং তোমাদের দেব। আমরা বৈঠকের 'মিনিটস' তৈরি করে দেব। যেখানে তোমাদের এবং আমাদের দু'পক্ষের সাক্ষর থাকবে।'
কিছুটা অভিমানের সুরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'যদি বৈঠক করতে তোমরা রাজি নাই থাকো তাহলে চিঠি দিলে কেন? তোমরা আমার সঙ্গে কথা বলবে বলেই আমি দুই ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছি। এত অসম্মান কেন করছ? তোমাদের বা আমাদের কারোর চিঠিতেই তো লাইভ স্ট্রিমিং-এর কথা ছিল না।'
জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, 'হাত জোড় করে বলছি মিটিং না করো কিন্তু ভিজ না। তোমাদের বসার জন্য ব্যবস্থাও করা আছে। যদি মিটিং করতে ইচ্ছে না করে অন্তত এক কাপ চা খেয়ে যাও। আমি আন্দোলন করা লোক। আন্দোলনকে মর্যাদা দিতে জানি বলেই আমি ছুটে গেছিলাম।'
