আজকাল ওয়েব ডেস্কঃ সময়ের আগেই হঠাৎ বড় হয়ে যাচ্ছে ছেলেমেয়েরা। শরীরে ও মনেও দেখা দিচ্ছে তার লক্ষণ। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, আট বছর বয়সেই কন্যা সন্তানের ঋতুস্রাব হয়ে যাচ্ছে।যাকে প্রিকশাস পিউবার্টি।বদলে যাচ্ছে ঋতুচক্রের সময় ও ধরন।বয়ঃসন্ধিতে প্রবেশের আগেই কেন হচ্ছে এমন? কারণ হতে পারে অনেক।
 ক্ষতিকর রাসায়নিকের অত্যধিক প্রভাব এর অন্যতম একটি কারণ।রাসায়নিক আসতে পারে সুগন্ধি, ঘর পরিষ্কার করার সামগ্রী, কাপড় কাচার সাবান, শৌচাগার কিংবা আসবাব পরিষ্কার করার সামগ্রী থেকে।এই সব রাসায়নিক মস্তিষ্কে ও স্নায়ুতন্ত্রেও প্রভাব বিস্তার করে।ফলে হরমোনের ভারসাম্যই নড়বড়ে হয়ে যায়।যার মারাত্মক প্রভাব পড়ছে জননতন্ত্রেও।সুগন্ধি, ডিটারজেন্ট অথবা নরম পানীয়ে ব্যবহৃত রাসায়নিক হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জন্য দায়ী। চিকিৎসা পরিভাষায় যার নাম এন্ডোক্রিন ডিসরাপশন।
 
 শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলি এর জন্য অনিয়মিত হয়ে যায়।যদি কোনও কারণে এই হরমোনগুলির নিঃসরণে সামঞ্জস্য না থাকে, তখনই বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। পুরুষ ও স্ত্রী যৌন হরমোন অর্থাৎ টেস্টোস্টেরন, ইস্ট্রোজেন, প্রোজেস্টেরনের ভারসাম্য নষ্ট হয়, তার প্রভাব পড়বে জননতন্ত্রের উপরেও।এখন যে সুগন্ধিগুলি তৈরি হয় তাতে কিছু পরিমাণে ফেরোমন মিশিয়ে দেওয়া হয়।সে কারণেই গন্ধের প্রতি আকর্ষণ জাগে দিনের পর বড়দের সঙ্গেএই সুগন্ধি শিশুরাও মাখতে থাকে, সুতরাং সময়ের আগেই তাদের হরমোনগুলির ক্ষরণ শুরু হয়ে যায় এবং স্বাভাবিকভাবেই বয়ঃসন্ধি সময়ের আগে চলে আসে।
ঘর পরিষ্কার করার সামগ্রীর মধ্যে ‘কোয়াট্স’ নামক একটি রাসায়নিক থাকে, স্যানিটাইজ়ার, শিশুদের জন্য তৈরি ওয়াইপ্স ও বিভিন্ন প্রসাধনীতেও এই উপাদান থাকে।রোজকার জীবনে এইসব জিনিসকে আমরা খুব বেশি এড়িয়ে চলতে পারিনা।তবে কিছু ভাল অভ্যাস আপনার কন্যা সন্তানের অসময়ে ঋতুস্রাব হওয়াকে রুখে দিতে পারে।
 
 শিশুদের জীবনযাপন ঠিক নেই, বাইরের ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড খাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে ফলে শরীরে মেদ জমছে।ওবেসিটির কারণে ফ্যাট সেলের মাত্রা বেড়ে গিয়ে ‘লেপটিন’ নামক হরমোনটির পরিমাণ শরীরে বেশি থাকে। মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে হরমোন নিঃসৃত হয়ে ডিম্বাশয়ে পৌঁছতে লেপটিন হরমোন ইন্ধন জোগায়। সুতরাং যদি আট বছর বয়সে ওবেসিটির জন্য শরীরে ফ্যাট ও অ্যাডিপোস সেল বেশি থাকলেই সঠিক সময়ের আগে মেয়েদের বয়ঃসন্ধি দেখে দিচ্ছে। তাই রোজের ডায়েটে রাখুন সুস্থ থাকার জন্য অপরিহার্য শাকসব্জি, ফলমূল ও হোল গ্ৰেইন জাতীয় খাবার।
ছোট থেকেই খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন ঠিক রাখা অপরিহার্য।সারাক্ষণ মোবাইল নিয়ে বসে থাকা, ঘরে বসে পড়াশোনা, খেলাধুলা কম, মনে অতিরিক্ত চাপ, ওজনবৃদ্ধি যেগুলিতে প্রায় অধিকাংশ শিশুই আজকাল অভ্যস্ত। এই সব বিষয় থেকে দূরে রাখতে হবে।কন্যাকে বেশি মানসিকভাবে শান্ত রাখুন।সাঁতার, নাচ ও পছন্দমতো খেলাধুলো করতে দিন।ছয়মাস অন্তর মেয়ের উচ্চতা ও ওজন পরীক্ষা করে দেখুন।বেশি চাপ, চিন্তা অল্প বয়স থেকেই চাপিয়ে দেবেন না। খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখুন। সকলের সঙ্গে মিশতে দিন।
