আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঢাকের বাদ্যি, চোখ ধাঁধানো আলো আর প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে মানুষের ঢল, দুর্গাপুজো মানেই এক বাঁধনছাড়া আবেগ। আর এই উৎসবের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হল দেদার খাওয়াদাওয়া। ফুচকা, রোল, বিরিয়ানি থেকে শুরু করে চাইনিজ, খাদ্যরসিক বাঙালির কাছে পুজোর চারটে দিন মানেই পেটপুজোর মহাযজ্ঞ। প্যান্ডেল হপিংয়ের সঙ্গী হিসেবে রাস্তার ধারের মুখরোচক খাবারের অমোঘ আকর্ষণ এড়ানো প্রায় অসম্ভব।
 
 কিন্তু উৎসবের এই আনন্দে অনেক সময়ই আমরা স্বাস্থ্যের কথা ভুলে যাই। অনিয়ন্ত্রিত খাওয়াদাওয়া, পরিচ্ছন্নতার অভাব এবং হজমের গোলযোগে পুজোর মধ্যেই অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আর পেট খারাপ মানেই পুজোর সব আনন্দ মাটি। তাই উৎসবের দিনগুলোতে বাইরে খাওয়ার সময় কয়েকটি সহজ নিয়ম মেনে চললেই এই বিড়ম্বনা এড়ানো সম্ভব।
 
 ১. স্থান নির্বাচন করুন সাবধানে
 
 যে কোনও দোকানে বা স্টলে খাওয়ার আগে তার পারিপার্শ্বিক পরিচ্ছন্নতা দেখে নিন। বিক্রেতার পোশাক, হাত এবং বাসনপত্র কতটা পরিষ্কার, সেদিকে নজর রাখুন। মাছি বা পোকামাকড়ের উপদ্রব রয়েছে, এমন জায়গা এড়িয়ে চলুন। জনপ্রিয় এবং বিশ্বস্ত দোকান থেকে খাওয়ার চেষ্টা করুন, যেখানে প্রতিদিন প্রচুর বিক্রি হয়। কারণ, বেশি বিক্রির জায়গায় খাবার টাটকা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
 
 ২. গরম খাবারই ভরসা
 
 বাইরে খাওয়ার সময় চেষ্টা করুন সদ্য রান্না করা গরম খাবার খেতে। উচ্চ তাপমাত্রায় জীবাণু নষ্ট হয়ে যায়, তাই গরম খাবার তুলনামূলকভাবে নিরাপদ। যেমন, আপনার সামনে ভেজে দেওয়া সিঙাড়া বা চপ অনেকক্ষণ আগে তৈরি করে রাখা স্যান্ডউইচের চেয়ে ভাল বিকল্প। রাস্তার কাটা ফল, সালাড বা রায়তা এড়িয়ে চলুন, কারণ সেগুলি কী ধরনের জলে ধোয়া হয়েছে বা কতক্ষণ ধরে রাখা আছে, তা জানার উপায় নেই।
 
 
৩. জল এবং পানীয় নিয়ে সতর্ক থাকুন
 
 পেটের রোগের অন্যতম প্রধান কারণ হল দূষিত জল। তাই বাইরে খাওয়ার সময় সবসময় সিল করা বোতলের জল কিনুন। কেনার আগে বোতলের সিল ঠিক আছে কি না, তা অবশ্যই পরীক্ষা করে নিন। রাস্তার ধারের বিভিন্ন শরবত, লস্যি বা আখের রস খাওয়ার ইচ্ছে হলেও নিজেকে সংযত রাখুন। কারণ, এই পানীয়গুলিতে ব্যবহৃত জল এবং বরফ জীবাণুর উৎস হতে পারে। সবচেয়ে ভাল হয়, বাড়ি থেকে জলের বোতল সঙ্গে নিয়ে বেরোনো।
 
 ৪. অতিরিক্ত খাবেন না
 
 পুজোর আনন্দে একসঙ্গে অনেক ধরনের খাবার খাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। বিরিয়ানির পরেই আইসক্রিম, আবার তার পরেই ফুচকা- এমনটা করলে হজমের সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক। চেষ্টা করুন একবারে অতিরিক্ত না খেতে এবং বিভিন্ন ধরনের ভারী খাবার একসঙ্গে না মেশাতে। গভীর রাতে খুব বেশি মশলাদার বা তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন।
 
 আরও পড়ুন: মধুচক্র চালানোয় অভিযুক্ত অভিনেত্রী অনুষ্কা দাস! সেক্স র্যাকেট থেকে উদ্ধার বাংলা সিরিয়ালের আরও ২ নায়িকা! তুলকালাম মহারাষ্ট্রে 
 
 ৫. ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা জরুরি
 
 বাইরে বেরোলে আমাদের হাতে নানা ধরনের জীবাণু লেগে থাকে। তাই খাওয়ার আগে অবশ্যই সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিন অথবা একটি ভাল মানের হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন। এই একটি ছোট অভ্যাস আপনাকে অনেক বড় অসুস্থতার হাত থেকে বাঁচাতে পারে।
 
 সবশেষে বলা যায়, দুর্গাপুজো মানেই মন খুলে আনন্দ করা। খাওয়াদাওয়া সেই আনন্দেরই একটি অংশ। তাই পুরোপুরি বন্ধ না করে, শুধু একটু বুদ্ধি খাটিয়ে আর সামান্য সতর্কতা অবলম্বন করলেই আপনি অসুস্থ না হয়েই পেটপুজো এবং প্যান্ডেল হপিংয়ের দ্বিগুণ আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন।
