আজকাল ওয়েবডেস্কঃ আজকাল রাতে ঘুম না আসার সমস্যায় ভোগেন অসংখ্য মানুষ। ব্যস্ত জীবনযাপন, দুশ্চিন্তা বাড়ার ফলে অল্প বয়সেই জাঁকিয়ে বসছে অনিদ্রার সমস্যা। সারাদিন পরিশ্রমের পরও রাতে দু'চোখের পাতা এক হয় না। কিন্তু সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুমের বিকল্প নেই। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি। সারাদিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমোনোর পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু অনেকের নিয়মিত ৬ ঘণ্টারও কম ঘুম হয়। যার ফলে ইদানীং অল্প বয়সে থাবা বসাচ্ছে বিভিন্ন মারাত্মক অসুখ বিশেষ করে চোখের উপর বড় প্রভাব পড়ছে। 

•    চোখে শুষ্কতা এবং জ্বালাপোড়াঃ যদি আপনি নিয়মিত পর্যাপ্ত না ঘুমান তাহলে চোখের জল শুকিয়ে যেতে পারে।  যার ফলে চোখে শুষ্কতা,,  লালভাব এবং চুলকানি হতে পারে। পরবর্তীকালে চোখের গুরুতর সমস্যা হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। 

•    চোখ কুঁচকে যাওয়া (মায়োকিমিয়া)ঃ কখনও আপনার চোখের পাতায় হঠাৎ কুঁচকে যাওয়া অনুভব করেছেন? মায়োকিমিয়ার এটি সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে একটি। সাধারণতচ চোখ অতিরিক্ত ক্লান্ত থাকলে এমনটা হতে পারে। এটি যদিও তেমন বিপজ্জনক নয়, তবে স্বাভাবিকও নয়। চোখ কুঁচকে যাওয়া সাধারণত ক্লান্তি, মানসিক চাপ এবং ঘুমের অভাবের কারণে হয়।

 

আরও পড়ুনঃ রোজই ৪-৫ ঘণ্টায় ঘুম ভেঙে যায়? জানেন টানা তিন রাত কম ঘুমালে শরীরে হানা দেয় কোন মারণ রোগ?

 

 

* চোখ তলায় কালি এবং চোখ ফুলে যাওয়াঃ ঘুমের ঘাটতির সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক লক্ষণগুলির মধ্যে একটি হল চোখের তলায় কালি এবং চোখ ফুলে যাওয়া। পর্যাপ্ত না ঘুমালে চোখের নীচের রক্তনালীগুলোতে প্রভাব পড়ে। যার ফলে জায়গাটি কালো দেখায়। অনিদ্রায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাধারণত চোখ ফুলে যায়। 

*  ঝাপসা দৃষ্টি ও মনোযোগে অভাবঃ দীর্ঘক্ষণ কাজের পর চোখের বিশ্রাম প্রয়োজন। একটি ভাল ঘুমের রুটিনই চোখের সুস্থতা বজায় রাখে। পর্যাপ্ত ঘুম ছাড়া চোখের যে কোনও বস্তুর উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করতে অসুবিধা হয়, দৃষ্টিশক্তিতেও প্রভাব পড়ে। এক নাগাড়ে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের পেশি শিথিল হয় না। ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। 

* চোখের সংক্রমণের ঝুঁকিঃ চোখের জলে নুন, লিপিড এবং প্রোটিন থাকে। যা চোখকে ব্যাকটেরিয়া এবং ধুলোর মতো বহিরাগত উৎসেচক থেকে রক্ষা করে। তাই যদি আপনার পর্যাপ্ত ঘুম না হয়, তাহলে চোখ ঠিক মতো অশ্রু তৈরি করে না। অর্থাৎ আপনার চোখ জীবাণুর সংস্পর্শে বেশি আসে। ফলে কনজাংটিভাইটিসের মতো মারাত্মক চোখের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। 

•আলোর প্রতি সংবেদনশীলতাঃ ক্লান্ত চোখ আলোর প্রতি বেশি সংবেদনশীল থাকে। দীর্ঘদিন ঘুমের ঘাটতি হলে উজ্জ্বল আলোযুক্ত ঘরে বসতে কিংবা ফোনের স্ক্রিন বা কম্পিউটার মনিটর দেখতে অসুবিধা হতে পারে। 

কীভাবে চোখ ভাল রাখবেন

* টানা ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট কম্পিউটার কিংবা ল্যাবটপে কাজ করার পর ৫-১০ মিনিটের বিরতি নিন। এক-আধ ঘণ্টা বাদে বাদে হাতের তালুতে ২-৩ মিনিট দুটি চোখ চেপে ধরে রাখুন। ২০ মিনিট অন্তর মনিটর থেকে চোখ সরিয়ে দূরের কিছুর দিকে অন্তত ২০ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকুন। এই সময়ে চোখের পলক যেন ২০ বার পড়ে।
* মাঝে মাঝে চোখে-মুখে ঠান্ডা জলের ঝাপটা দিন। কোনও সমস্যা হলে খানিকক্ষণ চোখ বন্ধ রাখুন।
* ঘুমের সমস্যা থাকলে শোওয়ার দু-ঘণ্টা আগে টিভি, ল্যাপটপ, মোবাইল ব্যবহার করবেন না। মোবাইল বা ল্যাপটপের স্ক্রিন থেকে যে নীল আলো বেরোয়, তাতে অনেক সময়ে ঘুমের ব্যাঘাত হয়।

চোখের যে কোনও গুরুতর সমস্যা অনুভব হলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।