যে কোনও বয়সে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য হাঁটা খুবই উপকারী। অনেক দিন ধরেই এই ১০ হাজার স্টেপ হাঁটার লক্ষ্য বেশ জনপ্রিয়। দিনে ১০ হাজার পা হাঁটলেই রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল সহ বিভিন্ন ক্রনিক রোগের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব, এমন ধারণা প্রচলিত রয়েছে। কিন্তু নতুন গবেষণা জানাচ্ছে, এই ধারণা সব ক্ষেত্রে সঠিক নয়। বরং, কারও কারও ক্ষেত্রে এতটা হাঁটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়স, শারীরিক ক্ষমতা, এবং স্বাস্থ্য সমস্যার ওপর নির্ভর করে হাঁটার পরিমাণ নির্ধারণ করা উচিত।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁটা নিঃসন্দেহে একটি ভাল অভ্যাস, কিন্তু ১০,০০০ ধাপ কোনও জাদুকরী সংখ্যা নয়। আসলে প্রতিদিন ১০,০০০ পা হাঁটার ধারণাটি কোনও বৈজ্ঞানিক গবেষণা থেকে আসেনি। এটি মূলত ১৯৬০-এর দশকে জাপানের একটি পেডোমিটার অর্থাৎ স্টেপ মাপার যন্ত্র কোম্পানির প্রচারাভিযান থেকে জনপ্রিয় হয়। সেই সময় ‘ম্যানপো-কেই’ নামে একটি যন্ত্র বাজারে আনা হয়, যার অর্থ ‘১০,০০০ পা মিটার’। তখন থেকেই এই সংখ্যাটি একটি লক্ষ্য হিসেবে মানুষের মনে গেঁথে যায়। কিন্তু এখনকার গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৬,০০০ থেকে ৮,০০০ ধাপ হাঁটলেও অনেক স্বাস্থ্যগত উপকার পাওয়া যায়, বিশেষত বয়স্কদের ক্ষেত্রে।
কারা প্রতিদিন ১০,০০০ পা হাঁটা এড়িয়ে চলবেন
১. হৃদরোগে আক্রান্ত বা অস্থিতিশীল হার্টের রোগীরাঃ কার্ডিওলজিস্টদের মতে, যাদের হার্টের সমস্যা আছে, তাঁদের এতটা হাঁটা বিপজ্জনক হতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রমে হৃদযন্ত্রে চাপ পড়ে, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
২️. যাদের পায়ের রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়ঃ এই ধরনের রোগে আক্রান্তরা বেশি হাঁটলে পায়ে ব্যথা, টান বা জ্বালাপোড়া অনুভব করতে পারেন। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘক্ষণ হাঁটা এড়িয়ে চলা উচিত।
৩️. জয়েন্ট বা হাড়ের সমস্যায়ঃ অস্টিওআর্থরাইটিস বা হাড়ের ব্যথায় ভুগলে অতিরিক্ত হাঁটা হাঁটুর ও গোড়ালির ওপর অতিরিক্ত চাপ ফেলে। যা ব্যথা আরও বাড়াতে পারে।
৪️. সম্প্রতি অপারেশন বা গুরুতর আঘাত লাগলেঃ অপারেশনের পর দ্রুত হাঁটা ক্ষত নিরাময়ের প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া ফেরক এতটা হাঁটা শুরু করা উচিত নয়।

কীভাবে নিরাপদে হাঁটবেন
*নিজের শরীরের সহনশক্তি অনুযায়ী হাঁটার পরিমাণ ঠিক করুন।
*শুরুতে কম হাঁটুন। ধীরে ধীরে সময় ও স্টেপ বাড়ান।
*হাঁটার আগে ও পরে হালকা স্ট্রেচিং করুন।
*পায়ে আরামদায়ক জুতো ব্যবহার করুন।
*শরীরের সংকেত বুঝুন। অর্থাৎ অস্বস্তি বা ব্যথা অনুভব হলে সঙ্গে সঙ্গে বিশ্রাম নিন।
