পড়শি রাজ্যে ভয়ঙ্কর পথ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন অভিনেতা জয়জিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। সপরিবারে। অভিনেতার কথায়, “এক চুলের জন্য বেঁচে গিয়েছি। কী হয়েছিল আর কী হতে পারত ওই এক মুহূর্তে, তা ভাবলে এখনও শিউরে উঠছি।” জয়জিৎ তাঁর মা-বাবা ও ছেলে যশোজিৎকে নিয়ে পুরী,ভাইজ্যাক বেড়াতে গিয়েছিলেন। যার ছবি তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পেজে দেখা গিয়েছে। ঘুরতে গিয়ে অনেক ছবি শেয়ার করেছেন অভিনেতা। মাঝেমাঝেই সপরিবারে হইহই করে ঘুরতে বেড়িয়ে পড়েন তিনি। ভাইজ্যাক রোড ট্রিপ প্রায় শেষ করে যখন কলকাতামুখী হয়েছেন, তখনই ওই ভয়ংকরে গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন অভিনেতা!

 
 এইমুহূর্তে দক্ষিণ কলকাতায় নিজের বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছেন তিনি। জানালেন, সুস্থ আছে তাঁর ছেলে, বাবা-মা। আজকাল ডট ইন-কে অভিনেতা রবিবার সকালে ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে খানিক ক্লান্ত গলায় জানালেন গোটা বিষয়টি। “সত্যি বলছি মারাই যেতাম। নেহাৎ চালক হিসেবে আমি যথেষ্ট ভাল বলেই বেঁচে গিয়েছি। যা ঝড়ঝাপটা গিয়েছে, আমার গাড়িটার উপর দিয়েই। আমি প্রায়শই রোড ট্রিপ করি। সপরিবারে। নিজেই গাড়ি চালাই। এবারও তার অন্যথা হয়নি। তো যাই হোক, ভুবনেশ্বর চড়িয়েছি প্রায় ঘন্টাখানেক হয়ে গিয়েছে। তখনই হাইওয়ের উপর এই দুর্ঘটনাটা হয়। তখন সকাল ১০টা হবে। আমার গাড়ি আর একটি লরি দুটোই খুব গতিতে চলছিল। হঠাৎ লরিটা  বাঁ দিক থেকে ওভারটেক করে এমনভাবে চেপে দেয় যে আমার গাড়ির সামনের  ডান দিকের চাকার অ্যাক্সেলটা ভেঙে যায়! স্বভাবতই ডান চাকাটা ডিভাইডারে লেগে পুরো ঘুরে গিয়েছিল! গাড়ি উলটে যায়নি, আমার ভাগ্য। আর হলে? ওখানেই…! আজ পর্যন্ত কারও কোনও অপকার করিনি, ক্ষতি করিনি তাই হয়ত উনি বাঁচিয়ে দিয়েছেন।” বলতে বলতে থেমে যান অভিনেতা ।

 
 আরও বলেন, “কলকাতায় ফিরতে কিন্তু কম ঝঞ্ঝাট পোহাতে হয়নি। কলকাতায় যেখান থেকে গাড়ি এনেছিলাম তাঁদের তরফে ভুবনেশ্বরে গাড়ির ডিলারদের যোগাযোগ করলাম। সেখান থেকে ভ্যান পাঠিয়ে আমার গাড়িটাকে মেরামতের জন্য নিয়ে যাওয়া হল। কাগজপত্রে সইসাবুদ ওরকম অবস্থার মধ্যে...প্রচুর সময় লাগল। আমার পরিবার তখন রাস্তার পাশে একটি গাছের ছায়ায় বসে। খাবার জন্য জলটুকু পর্যন্ত নেই সেখানে। যাই হোক, এবার তো বাড়ি ফিরতে হবে। হাওড়া পুলিশে আমার এক বন্ধু রয়েছে, নাম সুদীপ। তাঁকে সমস্যার কথা বললাম। সে খড়্গপুরের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করল। সেখান থেকে যোগাযোগ করা হল ভুবনেশ্বরের রেলে। শেষমেশ আরপিএফ জওয়ানদের জন্য রেলের যে গাড়ি থাকে, তাতে কোনওরকমে আমাদের জায়গা করে দেওয়া হয়েছিল। তাতে চেপেই রবিবার সকালে কলকাতায় পৌঁছলাম। কলকাতায় আমার সেই পুলিশ-বন্ধু গাড়ি ঠিক করে রেখেছিল, অতীত করেই বাড়ি ঢুকলাম। সত্যি বলছি , পুলিশ পাশে না থাকলে বিপদ আরও বাড়ত। খুব সাহায্য পেয়েছি পুলিশের তরফে। ওঁরা পাশে না থাকলে ভোগান্তি আরও বাড়ত, বিপদ যে কত কী হতে পারত। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই পুলিশকর্মীদের।”
 
 প্রসঙ্গত, এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে একটি পোস্ট করেছিলেন জয়জিৎ। যেখানে তিনি লেখেন, 'যা বুঝলাম আমার নামের আগে লেট লাগতে লেট আছে। অ্যাক্সিডেন্টের পোস্টটা মুছে দিয়েছিলাম তার কারণ প্রচুর ফোন আসছিল আমাদের ভালবাসার মানুষদের থেকে। তখন অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল। সব্বাইকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা।' এই পোস্ট দেখে অনেকেই অভিনেতাকে নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তবে জয়জিৎ সকলকে আশ্বস্ত করে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে তিনি ও তাঁর পরিবার ভাল আছেন।
