রাতে ভাল ঘুম আসে না? বিছানায় শুধু এপাশ-ওপাশ করেন? একটি ঘরোয়া টোটকাই এই সমস্যা দূর করতে পারে। একটি প্রাচীন এবং সহজ উপায় হল জিরে দুধ—শতাব্দীপ্রাচীন এক ঘরোয়া পানীয়, যা আজকাল ওয়েলনেস মহলে আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গরম দুধ সব সময় রাতের ঘুমের আগে খাওয়া হলেও, তাতে জিরে মেশালে এর সুবিধা আরও বেড়ে যায়—বিশেষ করে হজম ঠিক রাখা, মানসিক চাপ কমানো এবং গভীর ঘুম নিশ্চিত করতে।
কিন্তু কী কারণে এটি এত কার্যকর? এবং এটি কি আপনার রাতের রুটিনের অংশ হতে পারে? আসুন জেনে নিই জিরে দুধের স্বাস্থ্যগত গুণাবলী।

এক গ্লাস গরম দুধে জিরের বীজ বা গুঁড়ো মিশিয়ে তৈরি। ভারত এবং মধ্যপ্রাচ্যের কিছু অঞ্চলে শতাব্দী ধরে খাওয়া হলেও, সম্প্রতি ওয়েলনেসপ্রেমীদের মধ্যে এটি আবার জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, বিশেষ করে হজম ঠিক রাখা, শান্ত মন এবং গভীর ঘুম নিশ্চিত করার জন্য।

জিরেতে আছে মেলাটোনিন, একটি হরমোন যা ঘুম–জেগে থাকার চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও এতে রয়েছে থাইমোকুইনোন, একটি যৌগ যা ক্লিনিকাল ট্রায়ালে ঘুমের গুণমান উন্নত করতে সহায়ক হিসাবে দেখা গেছে।
২০২৪ সালে ফ্রন্টিয়ার্স ইন নিউট্রিশনস জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে কালো জিরের নির্যাস (BCO-5) ঘুমের মান উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে, মোট ঘুমের সময় বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে যারা অপ্রতুল বা অগভীর ঘুমের সমস্যায় ভুগছিল, তাদের জন্য এটি উপকারী প্রমাণিত হয়েছে।

অন্যদি কে, দুধে থাকে ট্রিপ্টোফ্যান, একটি অ্যামাইনো অ্যাসিড যা সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন তৈরি করতে সাহায্য করে—যা ঘুম নিয়ন্ত্রণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট ড. মাইকেল ব্রিউস, যাকে ‘দ্য স্লিপ ডক্টর’ বলেছেন। গরম দুধের ট্রিপ্টোফ্যান উপাদান ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে।
জিরে এবং দুধ একত্রিত হয়ে তৈরি করে একটি মিশ্রণ, যা নার্ভাস সিস্টেম এবং হজম ব্যবস্থার উপর কাজ করে। এই জন্য এটি রাতের রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।

জিরেতে আছে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেশিয়াম, যা পেশী এবং নার্ভ রিল্যাক্স করতে সাহায্য করে। এটি নার্ভাস সিস্টেমকে শান্ত করে, চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। গরম দুধ এর সঙ্গে মিশে মানসিক শান্তি দেয়, মস্তিষ্ককে ঘুমের জন্য প্রস্তুত করে এবং সহজেই স্ট্রেস হ্রাস করে।

জিরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যেমন ফ্ল্যাভোনয়েড এবং পলিফেনল, যা ফ্রি র‍্যাডিক্যালের সঙ্গে লড়াই করে এবং প্রদাহ কমায়। এটি লিভারের কার্যক্রম এবং ডিটক্সিফিকেশনকেও সহায়তা করে। দুধ ভিটামিন বি, ডি, ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিন সরবরাহ করে, যা ঘুমের সময় রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এবং কোষের মেরামত বাড়ায়