বলিউড অভিনেত্রী দিশা পটানির বরেলির বাড়িতে গুলিবর্ষণের ঘটনায় জড়িত পঞ্চম অভিযুক্তকে শুক্রবার অর্থাৎ ১৯ সেপ্টেম্বর পুলিশের এনকাউন্টারের পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই অভিযুক্ত গুলিবর্ষণের আগে দিশা পাটানির বরেলির বাড়ির রেকি করেছিল। পুলিশ জানিয়েছে, তার কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া ওই অভিযুক্তের নাম রামনিবাস ওরফে দীপক। সে রাজস্থানের বেওয়ার জেলার বাসিন্দা। তার সঙ্গী অনিল নিবাসী, হরিয়ানার সোনিপতের বাসিন্দা, তাকেও পুলিশ ধরেছে। অনিলের কাছ থেকে একটি পিস্তল এবং বেশ কয়েকটি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে।

বরেলির জঙ্গল এলাকার কাছে হওয়া এই এনকাউন্টারে অভিযুক্তের ডান পায়ে গুলি লাগে। পরে যখন পুলিশ তাকে থানায় নিয়ে যাচ্ছিল, তখন সে অনুনয় করতে থাকে, “আমি আর কখনো উত্তরপ্রদেশে আসব না স্যার। বাবাজির পুলিশের সামনে আর আসব না স্যর।”

উল্লেখ্য, গত ১২ সেপ্টেম্বর ভোররাতে দিশার বরেলির বাড়িতে অজ্ঞাত হামলাকারীরা একাধিক রাউন্ড গুলি চালায়। পরবর্তীতে গ্যাংস্টার গোল্ডি ব্রার এই হামলার দায় স্বীকার করে। সে দাবি করে, দিশা এবং তার বোন খুশবু পটানি সম্প্রতি সন্ত প্রেমানন্দ মহারাজ এবং অনিরুদ্ধাচার্যের বিরুদ্ধে যে মন্তব্য করেছিলেন, তা ‘সনাতন ধর্মকে অপমান করেছে’। সেই কারণেই এই হামলা চালানো হয়েছে বলে সে জানায়।

কয়েকদিন পর ঘটনাটির সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে আসে, যেখানে দেখা যায় একটি বাইক দিশার বাড়ির সামনে এসে থামে। এরপর বাইকে থাকা এক ব্যক্তি বন্দুক বার করে একাধিক রাউন্ড গুলি চালায়। তারপর দ্রুতগতিতে বাইক নিয়ে তারা সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

পুলিশ জানিয়েছে, আসল লক্ষ্য ছিলেন দিশার বাবা জগদীশ পাটানি, যিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার। তিনি বারান্দার একটি থামের আড়ালে লুকিয়ে গিয়ে অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন।

ঘটনার পরপরই পুলিশ একটি মামলা দায়ের করে এবং মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অবিলম্বে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে বুধবার পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে দুই অভিযুক্ত নিহত হয়। এই এনকাউন্টার যৌথভাবে পরিচালনা করে উত্তরপ্রদেশ এবং হরিয়ানার স্পেশাল টাস্ক ফোর্স এবং দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দু’জনের সরাসরি ভূমিকা ছিল দিশার বরেলির বাড়িতে গুলিবর্ষণের ঘটনায়। সংবাদমাধ্যমকে এক কর্মকর্তা বলেন, “বরেলির ফায়ারিং কাণ্ডে ওই দু’জনের সরাসরি হাত ছিল, যা হাই প্রোফাইল ব্যক্তিত্বদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনাটি ছিল এক ধরনের ভয় দেখানোর কৌশল, যা তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত।” পুলিশের অভিযানে ধরা পড়া ওই দুই অভিযুক্ত—রবিন্দর এবং অরুণ।

সম্প্রতি দিশার বাবা জগদীশ পাটানি মেয়ের পক্ষে কথা বলেছেন এবং জানিয়েছেন যে তাঁর মন্তব্যকে বিকৃত করে উপস্থাপন করা হয়েছে।
জগদীশ পটানি বলেন, “…খুশবুকে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রেমানন্দ জি মহারাজের প্রসঙ্গে তার নাম টেনে আনা হয়েছে। আমরা সনাতনী, আমরা সাধু-সন্তদের সম্মান করি। কেউ যদি তার বক্তব্যকে বিকৃত করে দেখায়, তবে সেটি আমাদের অপমান করার ষড়যন্ত্র।”