পেয়ারা শুধু স্বাদে নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও অত্যন্ত উপকারী বলে ধরা হয়। এতে এমন অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে, যা শরীরকে নানাভাবে উপকার দিতে পারে। তবে শর্ত হল-এটি সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। কারণ অতিরিক্ত পেয়ারা খাওয়া শরীরের ক্ষতিও করতে পারে। এখন প্রশ্ন হল, পেয়ারায়. কী কী পুষ্টিগুণ থাকে? অতিরিক্ত পেয়ারা খেলে কী কী ক্ষতি হতে পারে? কারা বেশি পেয়ারা খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন? আসুন জেনে নিই।
পেয়ারায় থাকা পুষ্টিগুণ
পেয়ারায় প্রচুর ভিটামিন সি, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস রয়েছে, যা ডায়রিয়া, পিরিয়ড ক্র্যাম্প, মাড়ির রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, হাঁটুর ব্যথা, হৃদরোগ, স্থূলতা-এমনকি ত্বক ও চুলের জন্যও উপকারী। এছাড়াও এতে ভিটামিন এ ও ই রয়েছে, যা চোখের জন্য অত্যন্ত ভাল। পাশাপাশি পেয়ারায় থাকা লাইকোপেন নামের ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস শরীরকে ক্যানসার এবং টিউমারের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করে। তাছাড়া, এতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন ত্বকের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
পেট ও হজমের সমস্যা
পেয়ারায় প্রচুর ফাইবার থাকে, যা সাধারণত হজমে সাহায্য করে। কিন্তু বেশি খেলে ইরিটেবল বাউল সিনড্রোম (IBS), গ্যাস, পেট ফোলা, ডায়রিয়া বা পেট খারাপের সমস্যা বাড়তে পারে।
অ্যালার্জি
কিছু মানুষের পেয়ারা খেলে অ্যালার্জি হতে পারে। যেমন-চুলকানি, মুখ বা গলায় ফোলা, শ্বাস নিতে কষ্ট ইত্যাদি। যাদের ফল খেলে অ্যালার্জি হয়, তাদের অবশ্যই খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
কিডনির রোগী
পেয়ারায় প্রাকৃতিকভাবে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে, যা হৃদযন্ত্র ও পেশীর জন্য ভালো। কিন্তু কিডনি রোগীদের জন্য অতিরিক্ত পটাশিয়াম ক্ষতিকর, কারণ শরীর সেটি ঠিকমতো প্রক্রিয়াজাত করতে পারে না। ফলে শরীরে ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। তাই কিডনি সমস্যা থাকলে বেশি পেয়ারা খাওয়া উচিত নয়।
গর্ভাবস্থা ও স্তন্যদানকালীন সময়
গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মায়েদের পেয়ারা খাওয়া নিয়ে সতর্ক থাকা দরকার। বিশেষ করে পেয়ারা পাতা দিয়ে তৈরি চা বা নিয়মিত খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের অনুমতি নিতে হবে।
ঠান্ডা ও সর্দি-কাশি
পেয়ারা ঠান্ডা প্রকৃতির। তাই যাদের সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট বা ঠান্ডার সমস্যা বেশি, তাদের জন্য এটি সমস্যা বাড়াতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগী
পেয়ারা রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের বেশি পেয়ারা না খাওয়াই ভাল।
পেয়ারা নিঃসন্দেহে এক সুপারফুড—এতে আছে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার, যা শরীরকে নানাভাবে উপকার করে। তবে মনে রাখতে হবে, যে কোনও ভাল জিনিসেরও একটি সীমা আছে। সঠিক পরিমাণে পেয়ারা খেলে এটি হজম, হৃদযন্ত্র, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ত্বক-চুল সবকিছুর জন্য উপকারী। কিন্তু অতিরিক্ত খাওয়া কিংবা বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যায় (যেমন কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, অ্যালার্জি বা গর্ভাবস্থা) সতর্ক থাকা জরুরি। তাই শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমিত পরিমাণে পেয়ারা খাওয়াই হলআ সুস্থ থাকার মূলমন্ত্র।
