দিব্যি সুস্থ–সবলভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন , তেমন কোনও শারীরিক সমস্যা নেই, হঠাৎ একদিন শোনা গেল, হার্ট ফেলিওর হয়েছে সেই ব্যক্তির। আজকাল অল্প বয়সিদের মধ্যেও এমন ঘটনা নজরে আসে। নেপথ্যে শরীরচর্চা না করা, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস ও অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন সহ আরও অনেক কারণ। শরীরে হার্ট ফেলিওরের বেশ কিছু লক্ষণ আগেই জানান দেয়। যা সময় মতো না বুঝলে ঘটতে পারে বড় বিপদ। হার্ট ফেইলিওর বা হৃদযন্ত্রের অক্ষমতা প্রাথমিক পর্যায়ে এমন লক্ষণ দেখায়, যা প্রায়ই মানুষ এড়িয়ে যায় বা ভুলভাবে অন্য সমস্যার সঙ্গে মিশিয়ে ফেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই লক্ষণগুলো চিহ্নিত করা এবং সময়মতো চিকিৎসা শুরু করা খুব জরুরি।
চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী, বিভিন্ন কারণে হৃদযন্ত্রের পেশি দুর্বল হয়ে গিয়ে পাম্প করার ক্ষমতা কমে যায়। ফলে রক্ত চলাচল ব্যহত হয়। তখন অক্সিজেনের ঘাটতিতে শরীরে যে বিভিন্ন সমস্যা শুরু হয় তাই হার্ট ফেলিওর। হার্ট অ্যাটাক আর হার্ট ফেলিওর কিন্তু এক নয়। হৃৎপিণ্ডের রক্তবাহী ধমনীতে চর্বির প্রলেপ জমে রক্ত চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে অক্সিজেনের অভাবে হার্টের পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। দ্রুত চিকিৎসা না করালে হৃৎপিণ্ডের পেশির বিভিন্ন অংশগুলি ধীরে ধীরে ধ্বংস হতে শুরু করে।
আরও পড়ুনঃ হাত-পা সবসময়ে ঠান্ডা থাকে? সাবধান! শরীরে লুকিয়ে থাকতে পারে এই সব মারাত্মক রোগের ইঙ্গিত
১. শ্বাসকষ্ট: সামান্য পরিশ্রম বা শুয়ে থাকার সময় শ্বাসকষ্ট অনুভূত হওয়া।
২. অস্বাভাবিক ক্লান্তি: দৈনন্দিন কাজের সময় আগের মতো শক্তি না থাকা বা দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়া।
৩. পা ও পেটে ফোলাভাব: বিশেষ করে পায়ের গোড়ালি ফোলা, যা শরীরে অতিরিক্ত তরল জমার কারণে হতে পারে। বিছানায় শুয়ে যদি পা এবং পায়ের পাতা ফুলে গেছে লক্ষ্য করে তাহলে তাঁর কারণ হার্ট ফেলিওর হতে পারে। পেটেও ফোলাভাব অনুভূত হতে পারে।
৪. হৃদস্পন্দনের অস্বাভাবিকতা: পা ও গোড়ালি ফুলে গেলেও সতর্ক হন। বিছানায় শুয়ে যদি পা এবং পায়ের পাতা ফুলে গেছে লক্ষ্য করে তাহলে তাঁর কারণ হার্ট ফেলিওর হতে পারে। পেটেও ফোলাভাব অনুভূত হতে পারে।

৫. হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি: শরীরে অতিরিক্ত তরল জমার কারণে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি হয়। তাই আচমকা ওজন বেড়ে গেলে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
৬. রাতের শ্বাসকষ্ট: ঘুমের সময় মাঝেমধ্যে যদি শ্বাস নিতে কষ্ট হয় তা হলে কিন্তু সেই উপসর্গকে কখনওই অবহেলা করা উচিত নয়। কারণ হার্ট ফেলিওরের ক্ষেত্রে অনেক সময় রোগীর বিছানায় শুয়ে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
৭. হজমের সমস্যা: অস্বাভাবিক পেট ফোলা, বমি ভাব বা খাবারের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়াও হার্ট ফেলিওরের লক্ষণ হতে পারে।
শরীরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, পারিবারিক ইতিহাস থাকলে, ধূমপান ও অতিরিক্ত মদ্যপান করলে, কিছু কেমোথেরাপি ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ঝুঁকি বাড়তে পারে।
হার্ট ফেলিওর প্রতিরোধ করতে নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করুন। স্বাস্থ্যকর, লবণ কমযুক্ত খাদ্যাভ্যাস রাখুন। ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করুন। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাও জরুরি।
