সারাদিন পর বাড়ি ফিরে গায়ে জল ঢাললে আরাম অনুভব হয়। অনেকেই তাই রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে স্নান করেন। এবার প্রশ্ন হল, রাতে গরম জলে স্নান করা উচিত না ঠান্ডা জলে? আয়ুর্বেদ কী বলছে জেনে নেওয়া যাক।

আয়ুর্বেদের মতে, রাতে বাতে আক্রান্ত হওয়া এবং ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেশি থাকে। তাই শরীর বুঝে স্নানের জন নেওয়া উচিত। তাই ক্লান্ত লাগলে, শরীর স্টিফ হয়ে থাকলে গরম জলে স্নান করা ভাল। রাতে গরম জল দিয়ে স্নান করলে শরীরের পেশী শিথিল হয়, চাপ কমায় এবং রক্ত প্রবাহ উন্নত হয়। বিশেষ করে শীতকালে এটি খুবই উপকারী। গরম জল ত্বকের ছিদ্র খুলে দেয়, যা ময়লা এবং বিষাক্ত পদার্থ দূর করে। এ ছাড়া, এটি ঠান্ডা এবং কাশির মতো সমস্যা থেকেও মুক্তি দেয়।

গরম জল দিয়ে স্নানের অনেক উপকারিতা আছে, কিন্তু যদি আবহাওয়া গরম থাকে এবং শরীরে বেশি তাপ অনুভব করেন, তাহলে ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করাই ভাল। এটি শরীরকে ঠান্ডা করে, বিপাক বৃদ্ধি করে এবং মানসিক সতেজতা দেয়। ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করলে স্নায়ুতন্ত্র সক্রিয় হয় এবং ক্লান্তি কম হয়। তবে এটি সকলের জন্য উপকারী নয়।  আপনার যদি হাঁপানি, ঠান্ডা লাগা, জয়েন্টে ব্যথা বা রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কম হয়, তাহলে ঠান্ডা জল দিয়ে স্নান করা ক্ষতিকর হতে পারে। সেক্ষেত্রে গরম বা হালকা গরম জল দিয়ে স্নান। রাতে হালকা গরম জল দিয়ে স্নান করা শিশু এবং বয়স্কদের জন্যও নিরাপদ বিকল্প হিসাবে বিবেচিত হয়।

আয়ুর্বেদের মতে, রাতে স্নানের জন্য জলের তাপমাত্রা আপনার শরীরের প্রকৃতি, আবহাওয়া এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা অনুসারে নেওয়া উচিত। গ্রীষ্মকালে ঠান্ডা জল এবং শীতকালে গরম জল উপযুক্ত। তবে, যদি আপনি কোনও রোগে ভোগেন বা শরীরে ব্যথা অনুভব করছেন, তাহলে গরম জল দিয়ে স্নান করা বেশি উপকারী হবে। স্নানের পরপরই ঠান্ডা হাওয়া বা এসির সংস্পর্শে আসবেন না, এটি শরীরের ক্ষতি করতে পারে।

জ্বরের সময় শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে যায়।  দুর্বলতা, ঠান্ডা লাগা, মাথাব্যথা এবং ঘাম হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। ওষুধ ধীরে ধীরে জ্বর কমাতে সাহায্য করে। জ্বরের সময় হালকা গরম জল দিয়ে স্নান করা যেতে পারে। এটি ঘাম এবং ব্যাকটেরিয়া ধুয়ে ফেলে, ত্বক পরিষ্কার রাখে এবং সতেজ বোধ করতে সাহায্য করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে জ্বরের সময় যদি আপনার স্নান করতে খুব দুর্বলতা থাকে, তাহলে হালকা গরম জলে ভিজিয়ে রাখা নরম তোয়ালে দিয়ে শরীর মুছে ফেলা একটি ভাল বিকল্প। এটি স্পঞ্জ বাথ নামে পরিচিত। এটি শিশু, বয়স্ক বা জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিশেষভাবে কার্যকর। এটি শরীরকে ঠান্ডা করে এবং অস্বস্তি কমায়।