শারীরিক এবং মানসিক নানা চাপের কারণে পুরুষদের মধ্যে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে। সঠিক জীবনযাপন এবং খাওয়াদাওয়ার মাধ্যমে এই সমস্যা অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়। বিশেষ কিছু খাবার শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য উপকারী। নিয়ম করে সেগুলি পাতে রাখলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। সেগুলি কী কী, জেনে নেওয়া যাক।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রচুর পরিমাণে পালং শাক, কেল, বেরি, কমলা, টমেটো এবং অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত ডায়েটে করুন। এই জাতীয় খাবারগুলি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে, যা শুক্রাণুর গুণমানকে প্রভাবিত করতে পারে। শুক্রাণুর গুণমান উন্নত করতে আরও বেশি করে মৌসুমী ফল এবং শাকসবজি খান।

এগুলির পাশাপাশি বাদাম এবং সিডস বেশ স্বাস্থ্যকর। কারণ এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে হেলদি ফ্যাট, প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে বাদাম, আখরোট, কুমড়োর বীজ এবং সূর্যমুখী বীজ অন্তর্ভুক্ত করুন। আপনি এগুলি কাঁচা খেতে পারেন অথবা আপনার স্মুদি বা স্যালাডে যোগ করতে পারেন।

অতীতে একটি ক্লিনিকাল ট্রায়ালের ফলাফলে দেখা গিয়েছে, যাঁরা সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের জন্য নিয়মিত ৬০ গ্রাম বাদামযুক্ত খাবার গ্রহণ শুক্রাণুর গুণমান, পরিমাণ এবং গতিশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে উন্নত করতে পারে।

আরও পড়ুন: ক্যানসার শুরু থেকেই জানান দেয় উপস্থিতি! অবহেলা করলেই বিপদ! কী কী লক্ষণ দেখে বুঝবেন শরীরে বাসা বেঁধেছে মারণরোগ

বাদাম খাওয়ার ফলে শুক্রাণুর ডিএনএ ফ্র্যাগমেন্টেশনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে - যা পুরুষ বন্ধ্যাত্বের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।

মাছে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে বলে জানা যায়। এই দু'টি খনিজ পদার্থ প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। প্রচুর পরিমাণে স্যামন, ক্যাটফিশ এবং সার্ডিন খান কারণ এগুলিতে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড বেশি থাকে এবং শুক্রাণুর স্বাস্থ্যের জন্যও চমৎকার।

ওটস, রেড রাইস এবং কিনোয়াতে ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবার থাকে। এই খাবারগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে এবং প্রজনন স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে। এই গোটা শস্য শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হরমোনগুলির ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করে।

ছোলা, রাজমা এবং মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, ফোলেট এবং জিঙ্ক থাকে। শুক্রাণুর গুণমান বৃদ্ধির জন্য ফোলেট প্রয়োজন এবং শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য জিঙ্ক প্রয়োজন। তাই, আপনার খাদ্যতালিকায় ডাল অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না। এগুলি খেলে শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।

আরও পড়ুন: সঙ্গীর যৌনমিলনে একেবারেই অরুচি? বিছানায় ঘনিষ্ঠ হতে চান না? নেপথ্যে থাকতে পারে বড় কারণ

মুরগি এবং ডিমের মতো পাতলা প্রোটিনযুক্ত খাবার শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিডে ভরপুর। শুক্রাণু উৎপাদনের জন্য এই প্রোটিনগুলি প্রয়োজনীয়। তাই  দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় এই ধরনের প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করুন।

ডার্ক চকোলেটে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড শুক্রাণুর গুণমান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এগুলি অক্সিডেটিভ ক্ষতি থেকে শুক্রাণুকে রক্ষা করার জন্য পরিচিত। তাই কোনও চিন্তা ছাড়াই ডার্ক চকোলেট খেতে পারেন।

শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি তখনই পাবে, যখন মানসিক চাপ কমিয়ে ফেলা যাবে। একই সঙ্গে শারীরিক ব্যায়াম করাও গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনও ধরনের নেশা থেকে দূরে থাকাই সমীচীন।