তেজপাতা এমন এক জিনিস, যা কমবেশি সকলের হেঁসেলেই থাকে। রসুনও তাই। এই দুই উপাদান শুধু রান্নার স্বাদই বাড়ায় না, শরীরের একাধিক সমস্যাও দূর করতে পারে। শুধু জানতে হবে সঠিক টোটকা।
৬০ বছরের ঊর্ধ্বে হলেও এই কম-চেনা ঘরোয়া রেসিপি আপনার জয়েন্টের ব্যথা কমাতে, চলাফেরায় স্বস্তি ফেরাতে এবং আপনাকে বয়স এক ধাক্কায় কমিয়ে দিতে সাহায্য করতে পারে।
 
 উপকরণ খুবই সহজলভ্য হলেও আসল রহস্য লুকিয়ে আছে এর প্রস্তুত প্রণালীতে।
 
 সঠিকভাবে যদি বানানো যায়, এই উপাদানগুলির মিশ্রণ প্রাকৃতিকভাবে জয়েন্টকে মজবুত করে, প্রদাহ কমায় এবং শরীরকে ভিতর থেকে পুনরুজ্জীবিত করে। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, এতে কোনও ওষুধ, ইনজেকশন বা কৃত্রিম রাসায়নিকের প্রয়োজন হয় না।
রসুনে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা জয়েন্টের ফোলা এবং ব্যথা কমাতে সহায়ক। তেজপাতা রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, হাড় এবং পেশিতে পুষ্টি পৌঁছে দেয় এবং শক্তি বাড়ায়। দু’টির সমন্বয় শরীরকে টক্সিনমুক্ত করে, মেটাবলিজম উন্নত করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে। এর ফলে হাঁটাচলা সহজ হয়ে উঠবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে শরীরের স্টিফনে, বা টান কমে যাবে। দীর্ঘদিনের জয়েন্টের ব্যথা ধীরে ধীরে হালকা হবে। শরীরে নতুন উদ্যম এবং প্রাণশক্তি আসবে।
কী করবেন?
বেশ কয়েকটি তেজপাতা এবং রসুন নেবেন। তারপর তেজপাতাগুলিকে টুকরো টুকরো করে কেটে একটি কৌটোয় রাখবেন। কুচিকুচি করে রসুনগুলি কেটে তাতে যোগ করবেন। তারপর পরিমাণ মতো অলিভ অয়েল কৌটোয় ঢেলে তার মুখটি বন্ধ করে দিন।
গ্যাসে একটি পাত্রে কিছুটা জল নিয়ে তা ফোটাতে শুরু করুন। হালকা আঁচে সেই ফুটন্ত জলের উপর সেই কৌটোটি বসিয়ে রাখুন ২০ মিনিট মতো। তারপর সেটি খুলে ছাঁকনির মাধ্যমে শুধু মাত্র তেলটি ছেঁকে নিয়ে রেখে দিন। এবং শরীরের যে সব জায়গায় ব্যথা, সেখানে লাগান। এতে গাঁটের ব্যথার উপশম হবে। হাত-পা নাড়াতে কষ্ট হবে না।
প্রকৃতির ভাণ্ডারে এমন অনেক সহজলভ্য উপাদান রয়েছে, যেগুলি নিয়মিতভাবে ব্যবহার করলে শরীর এবং মনের উপর বিস্ময়কর প্রভাব ফেলে। তেজপাতা এবং রসুনের এই বিশেষ সমন্বয় তারই এক অন্যতম উদাহরণ। আধুনিক যুগে যখন জয়েন্টের ব্যথার সমাধান বলতে সাধারণত ব্যথানাশক ওষুধ, ইনজেকশন কিংবা সার্জারির কথা ভাবা হয়, তখন এই প্রাকৃতিক উপায় মনে করিয়ে দেয়, সুস্থতার জন্য সবসময় জটিল রাস্তা বেছে নিতে হয় না। কয়েকটি ঘরোয়া টোটকাতেও মিলতে পারে সমাধান।
 
 
 এই সহজ রেসিপি শুধুমাত্র ব্যথা কমায় না, বরং ভিতর থেকে শরীরকে শক্তিশালী করে, হাড় ও পেশির স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং চলাফেরায় স্বাভাবিক স্বাচ্ছন্দ্য ফিরিয়ে আনে। সবচেয়ে বড় কথা, এর কোনও ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। নিয়মিত ব্যবহারে এটি আমাদের জীবনে নতুন উদ্যম, শক্তি এবং তারুণ্যের অনুভূতি ফিরিয়ে দিতে পারে। অথচ সেটি প্রস্তুত করতে বিশেষ সময় বা টাকা, কোনওটাই খরচ হয় না। খুব সহজে বাড়িতেই তৈরি করে নেওয়া যায়।
