বলিউডে ফের শিরোনামে কাপুর পরিবার। প্রয়াত শিল্পপতি ও সোনা কমস্টারের চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাপুরের মৃত্যু-পরবর্তী সম্পত্তি নিয়ে এবার দিল্লি হাইকোর্টে হাজির হয়েছেন করিশ্মা কাপুরের দুই সন্তান, কিয়ান রাজ কাপুর ও সামাইরা কাপুর।

 

বার অ্যান্ড বেঞ্চের রিপোর্ট অনুযায়ী, কিয়ান–সামাইরার অভিযোগ—তাঁদের সৎমা প্রিয়া কাপুর (সঞ্জয়ের তৃতীয় পক্ষের স্ত্রী) একটি জাল উইল তৈরি করেছেন, যাতে তিনি পুরো সম্পত্তির দখল নিতে পারেন। শুধু তাই নয়, প্রিয়া নাকি আরও দুই সহযোগী—দীনেশ আগরওয়াল ও নীতিন শর্মার সঙ্গে মিলে উইল সাত সপ্তাহ গোপন রেখে পরে ৩০ জুলাই ২০২৫-এ এক পারিবারিক বৈঠকে তা উপস্থাপন করেন।

 

তাদের দাবি—“যে তথাকথিত উইল আমাদের বাবার নামে তৈরি দেখানো হয়েছে, তা আসলে আইনি বৈধ নথি নয়। এটি জাল, কৃত্রিম এবং সন্দেহজনক পরিস্থিতিতে তৈরি।”

 

 

কিয়ান ও সামাইরা আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন, তাঁদের ক্লাস ওয়ান লিগ্যাল হেয়ার হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক এবং বাবার বিশাল সম্পত্তি পাঁচ ভাগে ভাগ করা হোক। তাঁরা দাবি, প্রত্যেকের প্রাপ্য মোট সম্পত্তির এক-পঞ্চমাংশ করে।

 

সন্তানদের অভিযোগ, প্রিয়া কাপুর প্রথমে দাবি করেছিলেন, কোনও উইল নেই এবং সব সম্পত্তি রয়েছে আর.কে. ফ্যামিলি ট্রাস্টের অধীনে। কিন্তু পরে হঠাৎই তিনি ২১ মার্চ ২০২৫-তারিখের একটি উইল পেশ করেন, যা নিয়েই সন্দেহ তৈরি হয়েছে।

 

কিয়ান ও সামাইরার আইনজীবীদের বক্তব্য—সঞ্জয় মৃত্যুর আগে তাঁদের আর্থিক নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে একাধিক প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ব্যবসা শুরু করেছিলেন তাঁদের নামে, সম্পত্তি কিনেছিলেন তাঁদের স্বার্থে, এমনকী পারিবারিক ট্রাস্টেও তাঁদের উপভোক্তা হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন।

 

 

২০২৫ সালের ১২ জুন পোলো খেলতে গিয়ে হঠাৎ মৃত্যু হয় সঞ্জয় কপূরের। এরপর ১৯ জুন লোধি শ্মশান ঘাটে ছেলের হাতে বাবার চিতায় অগ্নিসংস্কার হয়। কিন্তু তারপর থেকেই শুরু হয় পারিবারিক দ্বন্দ্ব। অভিযোগ, প্রিয়া তাঁদের ট্রাস্ট সম্পর্কিত নথি ও আর্থিক খাতার কাগজপত্রে প্রবেশাধিকার সীমিত করতে থাকেন।

 

এমনকী, সোনা কমস্টারের কর্পোরেট মিটিংয়েও তাঁদের ডাকা হয়, আইনি নথিতে স্বাক্ষর করতে চাপ দেওয়া হয়, কিন্তু সম্পূর্ণ তথ্য গোপন রাখা হয়।

 

 

 কারা কারা মামলার পক্ষভুক্ত?

 

বাদীপক্ষ: করিশ্মা কাপুরের সন্তান কিয়ান ও সামাইরা (মায়ের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব করছেন)।

 

প্রথম ও দ্বিতীয় বিবাদী: প্রিয়া কাপুর (সঞ্জয়ের বিধবা স্ত্রী) ও তাঁর নাবালক সন্তান।

 

তৃতীয় বিবাদী: সঞ্জয়ের মা।

 

চতুর্থ বিবাদী: স্বঘোষিত উইল এক্সিকিউটর।

 

 

 একদিকে বাবার দেওয়া প্রতিশ্রুতির দাবি, অন্যদিকে সৎমায়ের হাতে উইলের কাগজ—সঞ্জয় কাপুরের মৃত্যুর পর সম্পত্তি নিয়ে এই আইনি লড়াই এখন বলিউডের আঙিনা ছাড়িয়ে শিল্প-বাণিজ্যের দুনিয়াতেও তোলপাড় ফেলে দিয়েছে।