টেলিভিশন থেকে বলিউড— দুই জগতেই নিজের অভিনয় দক্ষতা দিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছিলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুপূর অলঙ্কার। ১৫০-রও বেশি টেলিভিশন শো এবং একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করে তিনি যেমন সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছিলেন, তেমনই হঠাৎ একদিন সমস্ত আড়ম্বর, আলো আর গ্ল্যামারকে পিছনে ফেলে বেছে নেন সম্পূর্ণ ভিন্ন এক পথ— সন্ন্যাসের পথ।
2
6
‘শক্তিমান’, ‘স্বরাগিনী’, ‘দিয়া অউর বাতি হম’, ‘ঘর কি লক্ষ্মী বেটিয়াঁ’-র মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিক এবং ‘রাজা জি’, ‘সাওয়ারিয়া’, ‘সোনালি কেবল’-এর মতো ছবিতে নিজের ছাপ রেখে নুপূর ২০২২ সালে অভিনয় এবং পার্থিব জীবনের সব বন্ধন ছিন্ন করেন। ধ্যান, সাদামাটা জীবনযাপন আর ঈশ্বরের প্রতি ভক্তিতেই তিনি খুঁজে পান জীবনের আসল অর্থ। তাঁর এই সিদ্ধান্তে অবাক হয়ে যায় গোটা বিনোদন দুনিয়া।
3
6
মায়ের মৃত্যু হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে। সেই সময় থেকেই গভীর শূন্যতা অনুভব করেন নুপূর। তিনি জানান, তখনই বুঝেছিলেন জীবনে হারানোর আর কিছুই বাকি নেই, এবার নিজেকে সম্পূর্ণভাবে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করার সময় এসেছে। গুরু শম্ভু শরণ ঝাঁ-এর আশীর্বাদে তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করেন। ত্যাগ করেন বিলাসিতা, খ্যাতি ও সামাজিক বন্ধন। বেছে নেন ধ্যান, আত্মচিন্তা ও সরলতার জীবন।
4
6
নুপূর এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমার মন সবসময়ই আধ্যাত্মিকতার দিকে ঝুঁকেছিল। আমি বহু বছর ধরে এই পথে চলছিলাম। এখন আমি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে এই জীবনধারায় উৎসর্গ করেছি।”
5
6
এখন আর আলোকবৃত্ত বা মেকআপের জৌলুস নেই তাঁর জীবনে। প্রতিদিন ভোর শুরু হয় ধ্যান, প্রার্থনা আর সেবার মাধ্যমে। তিনি দিনে একবার খাবার খান, মাটিতে ঘুমোন এবং ভিক্ষার উপর নির্ভর করে জীবন চালান। তাঁর কথায়, “অন্তরের শান্তি আজ আলো-ঝলমলে জীবনের জায়গা নিয়েছে।”
6
6
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়— তাঁর স্বামী, অলঙ্কার শ্রীবাস্তব, এই সিদ্ধান্তকে সম্পূর্ণভাবে সম্মান করেন। তিনি স্বেচ্ছায় নুপূরকে সাংসারিক বন্ধন থেকে মুক্তি দেন, যাতে তিনি নির্ভয়ে নিজের আধ্যাত্মিক পথে এগিয়ে যেতে পারেন। টেলিভিশন দুনিয়া এখনও তাঁকে এক প্রাণবন্ত অভিনেত্রী হিসাবেই মনে রাখে। নুপূর আজ শান্ত এবং পরিতৃপ্ত। তাঁর ভাষায়, “এই ইন্ডাস্ট্রি ভণিতা আর বাহুল্যে ভরা। আমি আসল শান্তি খুঁজে পেয়েছি এর বাইরে থেকে।”