এরকম চরম বিশ্বাসঘাতকতার গল্প যেন সিনেমাকেও হার মানায়! বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা-পরিচালক ফারহান আখতারের পরিবারের এক ‘বিশ্বস্ত’ গাড়িচালক হঠাৎই পরিণত হলেন প্রতারকে। অভিযোগ, পরিবারের নামে থাকা একাধিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে তিনি প্রায় ১২ লক্ষ টাকা হাতিয়েছেন।
এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি সামনে এসেছে ফারহানের মা ও জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকার হানী ইরানির পরিবারের তরফে। অভিযুক্ত ড্রাইভার নরেশ সিং (৩৫), যিনি শুধু একাই নয়, মুম্বইয়ের বান্দ্রা এলাকার এক পেট্রোল পাম্প কর্মী অরুণ সিং (৫২)–এর সঙ্গে মিলে এই জালিয়াতি চালিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ফারহানের মায়ের আপ্তসহায়ক দিয়া ভাটিয়া উভয়ের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
তদন্তে জানা গিয়েছে, গাড়ির জ্বালানি ভরার নামে বারবার কার্ড সোয়াইপ করতেন নরেশ। কিন্তু গাড়িতে ডিজেল না ভরে, সেই টাকার একটা বড় অংশ নগদে নিজের পকেটে ঢুকিয়ে নিতেন। অরুণ প্রতিবার লেনদেনের পর প্রায় এক থেকে দেড় হাজার টাকা নিজের ভাগ রেখে বাকি টাকা নরেশকে দিতেন!
সব রহস্য ফাঁস হয় অক্টোবরের ১ তারিখে, যখন ফারহানের মায়ের আপ্তসহায়ক দিয়া ভাটিয়া হিসেবপত্র খতিয়ে দেখে সন্দেহ করেন। দেখা যায়, পরিবারের মারুতি গাড়ি, যার ডিজেল ট্যাঙ্ক ৩৫ লিটারের, সেটিতে নাকি ৬২১ লিটার ডিজেল ভরা হয়েছে বলে রেকর্ড দেখাচ্ছে! এমন সংখ্যা দেখে চোখ কপালে ওঠে দিয়ার। শুরু হয় খোঁজখবর। তদন্তে সামনে আসে আরও চমকপ্রদ তথ্য— একই ক্রেডিট কার্ড নয়, তিনটি আলাদা কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে। দেখা যায় এমন একটি গাড়ির জন্যও তেল কেনা হয়েছে, যা তাঁরা সাত বছর আগেই বিক্রি করে দিয়েছিলেন!
শেষমেশ, দিয়ার মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে নরেশ স্বীকার করে নেন সব। জানান, এই কার্ডগুলি তিনি ২০২২ সালে ফারহানের প্রাক্তন গাড়ি চালক সন্তোষ কুমার–এর কাছ থেকে পেয়েছিলেন, এবং তখন থেকেই নিয়মিতভাবে এই প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
 
 পুরো ঘটনা ফারহানের মায়ের কাছে স্বীকার করার পর চালক নরেশের নামে বান্দ্রা থানায় লিখিত অভিযোগ জানান দিয়া। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ৩১৮ (ফৌজদারি বিশ্বাস লঙ্ঘন), ৪১৮ (প্রতারণা) এবং ৩ (৫) (সাধারণ বিধান)-এর অধীনে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
