আর মাধবনের বয়স যে অনেক আগেই ৫০ পেরিয়েছে, তা অভিনেতার অনুরাগীরা মানতে চান না। তাঁদের চোখে তিনি আজও ‘রেহনা তেরে দিল মে’র সেই মিষ্টি হাসির যুবক। বা ‘থ্রি ইডিয়টস’-এর গোল চশমা পরিহিত কলেজ পড়ুয়া ফারহান। মাধবন নিজে যদিও এই ভুল ধারণা নিয়ে মোটেই বসে নেই। বয়স যে নয়-নয় করে ভালই, তা টের পাচ্ছেন বেশ!
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে মাধবন বলেন, “বয়স নিয়ে প্রথমবারের মতো আপনি অস্বস্তিতে পড়বেন তখনই, যখন আপনার সন্তানের বন্ধুরা আপনাকে কাকু বলে ডাকতে শুরু করে। এটা আপনাকে অবাক করবে। কিন্তু তারপর এর সঙ্গেই মানিয়ে নিতে হবে।”
চিত্রনাট্য বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আগাগোড়াই ওয়াকিবহাল মাধবন। বয়স তাঁর কাজের ক্ষেত্রেও নানা সিদ্ধান্তকেও প্রভাবিত করেছে। তাঁর কথায়, “একটি ছবি যখন বাছাই করা হয়, তখন কোন নায়িকার সঙ্গে কাজ করব, সেক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হয়। তাঁরা আমার সঙ্গে কাজ করতে চাইলেও মনে করা হয় আমি ফুর্তি করার জন্য ছবিটি করছেন। লোকে মনে করে, ছবি করার নামে মজা লুটছি। একটি ছবি করার সময় যদি এই অনুভূতিটাই মনে বেশি কাজ করে, তখন আর সেই চরিত্রের জন্য সম্মান থাকে না।”
মাধবন আরও বলেন, “এছাড়াও আমার শরীরের এতটা শক্তি এখন নেই যে আমি ২২ বছর বয়সিদের মতো কাজ করতে পারব। আমার জন্য বয়সের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ চরিত্র বেছে নেওয়া এবং কোন ধরনের লোকেদের সঙ্গে কাজ করছি, তা লক্ষ্য করা জরুরি। যাতে পর্দায় একটি সামঞ্জস্য বজায় থাকে এবং বিষয়টি অশালীন না দেখায়।”
আরও পড়ুন: মিথিলার সঙ্গে ছাদ আলাদা! কোন মায়ায় এখনও জড়িয়ে সৃজিত, ইঙ্গিত দিলেন নিজেই
মাধবন অভিনীত শেষ ছবিটি হল ‘আপ জ্যায়সা কোই’। সেখানে প্রেম আর রোম্যান্সের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উঠে আসে চাপা পুরুষতন্ত্র এবং সাম্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিয়ের পর কেমন হবে স্বামী-স্ত্রীর সমীকরণ? সংসারে কার ভূমিকা কী? এমন সব চিরাচরিত প্রশ্নকে ভেঙে গুড়িয়ে নতুন উত্তর খুঁজে দেয় সেই ছবি। মাধবন বলেন, “আমার মা এবং বাবার যে সম্পর্ক ছিল, তাতে ওঁরা একে অপরকে সমান এবং গভীরভাবে ভালবাসতেন। আমি মনে করি, আমি এবং আমার স্ত্রীও সেই রকমই ভালবাসা ভাগ করে নিই। কিন্তু সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমার বাবার যে সমতার অনুভূতি ছিল, তা এখন আমার যে সমতার অনুভূতি আছে, তার থেকে অনেক আলাদা। আমাদের সেই সমতার অর্থ কী, তা সংজ্ঞায়িত করতে হবে।”
আরও পড়ুন:
মাধবন ব্যাখ্যা করেন, “কখনও কখনও পুরুষের কোনও মহিলার জন্য দরজা খোলা বা দরজা আটকানোকে কেউ কেউ আপত্তিকর বলে মনে করেন। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে যে, তিনি কাউকে অখুশি বা অপমান করার জন্য কাজটি করছেন না। শিষ্টাচারের কারণে করছেন। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে একজন পুরুষের তার স্ত্রীকে কাজ করতে দেওয়াকে উদার বলে মনে করা হয়। এর থেকে 'আমি গর্বিত যে আমার স্ত্রী কাজ করছে', এমন কথা বলাই শ্রেয়।”
