প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে ডিম এমন নাম, যা সহজেই মাথায় আসে। ফিটনেসপ্রেমী থেকে সাধারণ ঘরোয়া মানুষ, সকলের কাছেই ডিম পুষ্টিকর আহারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। তবে দীর্ঘদিন ধরে একটি বিতর্ক চলে আসছে। প্রশ্ন ওঠে, ডিম খাওয়া উচিত কাঁচা নাকি সেদ্ধ?
 
 
 কিছু মানুষ মনে করেন যে, কাঁচা ডিমে বেশি প্রোটিন থাকে। অনেক ফিটনেসপ্রেমী মানুষই বেশি পুষ্টি পাওয়ার আশায় চোখ-নাক বুজে কাঁচা ডিম খেয়ে ফেলেন। কিন্তু গবেষণা বলছে সেদ্ধ ডিম বেশি নিরাপদ এবং পুষ্টিগুণও বেশি দেয়। মূল পার্থক্য হল প্রোটিনের শোষণ ক্ষমতা এবং নিরাপত্তা। 
ডিমকে প্রায়ই ‘প্রোটিনের খনি’ বলা হয়। কারণ এতে সব প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে। তবে আপনার দেহ কতটা প্রোটিন শোষণ করতে পারে তা ডিমটি কী ভাবে খাচ্ছেন, তার উপর নির্ভর করে। হেলথলাইন-এর একটি প্রতিবেদনের মতে, কাঁচা ডিমের প্রায় ৫১% প্রোটিনই দেহ শোষণ করতে পারে। অথচ সেদ্ধ ডিম প্রায় ৯১% প্রোটিন শোষণযোগ্য, অর্থাৎ সেদ্ধ ডিম প্রায় দ্বিগুণ উপকার দেয়।
কম প্রোটিন শোষণ
 
 
 কাঁচা ডিমে অ্যাভিডিন নামক একটি প্রোটিন থাকে, যা বায়োটিন (ভিটামিন বি৭) শোষণকে বাধা দেয়। বায়োটিন আমাদের চুল, ত্বক এবং স্নায়ুতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ডিম রান্না করলে অ্যাভিডিন নিরপেক্ষ হয়ে যায়, এবং দেহ পূর্ণ পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে।
 
 
 ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
 
 
 কাঁচা বা আধা সেদ্ধ ডিমে স্যালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া থাকার সম্ভাবনা থাকে, যা ফুড পয়জনিং সৃষ্টি করতে পারে। এর ফলে পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, জ্বর ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডিম সেদ্ধ করলে এই ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয় এবং ডিম নিরাপদে খাওয়া যায়।
বেশি প্রোটিন শোষণ
 
 
 সেদ্ধ ডিম কাঁচা ডিমের প্রায় দ্বিগুণ প্রোটিন প্রদান করে। এটি শরীরের শক্তি, এনার্জি এবং সামগ্রিক ফিটনেস বজায় রাখতে সাহায্য করে।
 
 
 নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর
 
 
 সঠিকভাবে সেদ্ধ করা ডিম স্যালমোনেলা-এর মতো ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে, তাই এটি সব বয়সের মানুষের জন্য নিরাপদ।
 
 
 সুবিধাজনক
 
  
 
 সেদ্ধ ডিম যে কোনও জায়গায় নিয়ে যাওয়া সহজ এবং দ্রুত খাওয়ার স্ন্যাক্স হিসাবে কাজ করে। অফিস, স্কুল বা ভ্রমণের সময় এগুলি টিফিন বক্সে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। এতে অতিরিক্ত কোনও উপাদান লাগে না এবং প্রস্তুত করতেও খুব কম সময় লাগে।
পরিশেষে বলা যায়, ডিম হল একটি চমৎকার প্রোটিনের উৎস, যা শরীরের শক্তি, পেশী গঠন এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। কাঁচা ডিমের তুলনায় সেদ্ধ ডিম বেশি নিরাপদ ও পুষ্টিকর, কারণ এটি প্রোটিন শোষণ বৃদ্ধি করে এবং ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াকে দূর করে। সহজে প্রস্তুত এবং বহনযোগ্য হওয়ায় সেদ্ধ ডিম দৈনন্দিন খাবারের একটি সুবিধাজনক অংশ হতে পারে। তাই, স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং পুষ্টি নিশ্চিত করতে সেদ্ধ ডিমকে ডায়েটে নিয়মিত অন্তর্ভুক্ত করাই শ্রেয়।
