সংবাদ সংস্থা মুম্বই: সিনেমার পর্দায় সাহসী আর সংবেদনশীল চরিত্রে যাকে দেখা যায়, বাস্তব জীবনেও তিনি ঠিক ততটাই সোজাসাপটা আর অনড়। অভিনেত্রী সায়ামি খের। সম্প্রতি জানালেন এমনই এক অভিজ্ঞতার কথা, যা তাঁকে নড়িয়ে দিয়েছিল কিশোরী বয়সেই।
‘ঘুমর’ এবং ‘চোকড’-এর মতো প্রশংসিত ছবিতে অভিনয় করে ইতিমধ্যেই নিজের আলাদা জায়গা তৈরি করেছেন সায়ামি। কিন্তু এই সফরটা আদৌ সহজ ছিল না। এক সাক্ষাৎকারে তিনি ফাঁস করলেন নিজের প্রথম দিককার এক চাঞ্চল্যকর অভিজ্ঞতা— স্ট্রাগলিং পিরিয়ডে কাস্টিং কাউচের সমস্যায় পড়তে হয়েছিল তাঁকে! যখন মাত্র ১৯ বছর বয়সে তাঁকে ‘কম্প্রোমাইজ’ করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল এক দক্ষিণী ছবির প্রস্তাব দেওয়ার সময়।
সায়ামি বলেন, “আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে আমার কেরিয়ারে বেশিরভাগ সময়েই সম্মানজনক অফার পেয়েছি। কিন্তু একবার এক মহিলা কাস্টিং এজেন্ট আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, ‘তোমাকে কিছু কম্প্রোমাইজ করতে হবে।’ আমি ভেবেছিলাম, একজন মহিলা আরেকজন মহিলাকে এটা বলছেন— ব্যাপারটা আমার ভিতরটা নাড়িয়ে দেয়।”
তিনি আরও বলেন,“আমি তখন বারবার বলছিলাম, ‘ম্যাম, আমি বুঝতে পারছি না আপনি কী বলতে চাইছেন।’ আমি ওঁর প্রতিক্রিয়া বুঝতে চাইছিলাম। শেষে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘দেখো, বুঝে নিতে হবে তোমায়।’ তখন আমি বলেছিলাম, ‘দুঃখিত, আপনি হয়তো ভাবছেন আমি এমন কেউ, যে এই পথে হাঁটতে রাজি। কিন্তু আমার জীবনে কিছু সীমা আছে, যেটা আমি কখনও পার করিনি।’ এটা জীবনে একবারই হয়েছিল। আর সেটাও একটা মহিলার তরফেই এসেছিল।”
বলিউডে সায়ামির পথচলা শুরু হয়েছিল রাকেশ ওমপ্রকাশ মেহরার 'মির্জিয়া' দিয়ে, যেখানে তাঁর সঙ্গে অভিষেক ঘটেছিল অনিল কাপুরের ছেলে হর্ষবর্ধন কাপুরেরও। যদিও ছবিটি বক্স অফিসে চলেনি, সাইয়ামীর অভিনয় নজর কেড়েছিল অনেকের। এরপর একে একে তিনি কাজ করেছেন অনুরাগ কাশ্যপের ‘চোকড’, ‘আনপজড’, দক্ষিণী ছবি ‘হাইওয়ে’, নাগার্জুনার ‘ওয়াইল্ড ডগ’-এর মতো ছবিতে।
তবে সায়ামির অভিনয়ের প্রভূত প্রশংসা আসে আর বালকির স্পোর্টস ড্রামা 'ঘুমর'-এর মাধ্যমে, যেখানে তিনি এক বিশেষ সক্ষম ক্রিকেটারের ভূমিকায় অভিনয় করেন। সঙ্গে ছিলেন অভিষেক বচ্চন। এই ছবিতে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয় সমালোচক থেকে দর্শক— সকলের কাছেই।সম্প্রতি সায়ামিকে দেখা গেছে সানি দেওল ও রণদীপ হুডা অভিনীত অ্যাকশন ছবি 'জাঠ'-এ, যেখানে তিনি এক গুরুত্বপূর্ণ সহ-চরিত্রে ছিলেন। ছবিটি পরিচালনা করেছেন গোপীচাঁদ মালিনেনি, আর বিশ্বব্যাপী ₹১১৮.৩৬ কোটির ব্যবসা করেছে।
তবে সব সাফল্যের মাঝেও সাইয়ামীর এই সাহসী স্বীকারোক্তি এক নতুন আলো ফেলছে ইন্ডাস্ট্রির অন্ধকার কোণে। বিশেষ করে যখন একজন মহিলা নিজেই আরেক মহিলার কাছে এমন প্রস্তাব রাখেন, তখন প্রশ্ন ওঠে— এই শোষণ আর দুর্নীতির চক্র কোথায় গিয়ে শেষ হবে?
