বলিউড অভিনেতা শাহরুখ খান এবং দীপিকা পাড়ুকোন ভোক্তাদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগে দায়ের হওয়া একটি মামলায় রাজস্থান হাই কোর্ট থেকে অন্তর্বর্তীকালীন রিলিফ পেয়েছেন। ভরতপুরে দায়ের হওয়া ওই অভিযোগে, নামী এক কোম্পানির একটি গাড়িতে ত্রুটির অভিযোগ তুলে দুই অভিনেতার পাশাপাশি কোম্পানির কর্মকর্তাদেরও অভিযুক্ত করা হয়েছিল এবং তাদের এই ব্র্যান্ডের প্রচারে অংশগ্রহণের জন্য দায়ী করা হয়েছিল।
কীর্তি সিং নামক স্থানীয়, যিনি ওই গাড়ি কিনেছিলেন. চলতি মাসের শুরুর দিকে একটি এফআইআর দায়ের করেন। তাঁর দাবি, তিনি একটি গাড়ি কেনার পর আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন, কারণ সেটিতে বিভিন্ন ত্রুটি দেখা দেয়। অভিযোগে বলা হয়েছে, শাহরুখ খান এবং দীপিকা পাড়ুকোনের প্রচারের প্রভাবেই তিনি গাড়িটি কেনার সিদ্ধান্ত নেন। এফআইআরে কোম্পানির ছ’জন কর্মকর্তার নামও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
 
 তারকাদের পক্ষ থেকে প্রতিরক্ষা
 
 
 অভিযোগ ওঠার পরপরই দুই অভিনেতা রাজস্থান হাই কোর্টে আবেদন জানান এফআইআরটি বাতিল করার জন্য। শাহরুখের পক্ষে উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবী কপিল সিব্বল যুক্তি দেন যে, এই অভিযোগের সঙ্গে তাঁর কোনও সরাসরি সম্পর্ক নেই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, “কোনও তারকা কোনও ব্র্যান্ডের প্রচার করলেই, সেটির উৎপাদন মানের জন্য তাকে দায়ী করা যায় না।”
দীপিকার পক্ষে আইনজীবী মাধব মিত্রও যুক্তি দেন যে, তাঁর সম্পূর্ণ ভূমিকা শুধুমাত্র ব্র্যান্ড প্রচারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, উৎপাদন বা মান নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই।
 
 
 ডিফেন্স পক্ষ উল্লেখ করে যে, অভিযোগকারী কীর্তি সিং প্রায় তিন বছর ধরে গাড়িটি ব্যবহার করেছেন এবং অভিযোগ দায়ের করার আগে সেটি দিয়ে ৬৭ হাজারের কিলোমিটারেরও বেশি পথ অতিক্রম করেছেন। তাঁদের দাবি ছিল, যদি সত্যিই ত্রুটি থাকত, তাহলে কনসিউমার কোর্টে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত পদক্ষেপ হত।
 
 যোধপুর বেঞ্চের বিচারপতি সুধেশ বানসাল শুনানিতে মন্তব্য করেন যে, এফআইআরের কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। আদালত শাহরুখ খান, দীপিকা পাড়ুকোন এবং কোম্পানির ছ’জন কর্মকর্তাসহ সব অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর স্থগিত রাখেন। মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
 
 শাহরুখ ১৯৯৮ সাল থেকে ওই কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর, যা তাকে কোম্পানির সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি এবং পরিচিত মুখগুলির একটি করে তুলেছে। দীপিকা ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে এই ব্র্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত হন এবং গত বছর শাহরুখের সঙ্গে মিলে একটি বিজ্ঞাপন প্রচারণাতেও অংশ নেন। এই ক্ষেত্রে মামলা নথিভুক্ত হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কারণ এটি সরাসরি তারকা ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরদের দায়বদ্ধতার প্রশ্ন তুলছে—যা নিয়ে ২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রচারকদের বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের জন্য দায়ী করেছে।
 
 এখনও পর্যন্ত শাহরুখ বা দীপিকা, কেউই প্রকাশ্যে এই অভিযোগ বা তাঁদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
