অভিনেত্রী সোহা আলি খান এক এমন তারকাখচিত পরিবারের অংশ, যাঁদের আলাদা করে পরিচয় দেওয়ার প্রয়োজন নেই। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই পরিবার সিনেমা দুনিয়াকে উপহার দিয়েছে অসাধারণ শিল্পী, আর দর্শকদের বিনোদনের ধারাও আজও অব্যাহত। তৃতীয় প্রজন্মের হাত ধরে সেই উত্তরাধিকার আরও উজ্জ্বল হতে চলেছে। সম্প্রতি এক আলাপচারিতায় সোহার কণ্ঠে ভেসে উঠল মায়ের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা—প্রখ্যাত অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরের কথা—এবং বৌদি করিনা কাপুর খানের প্রতি অকপট প্রশংসা।

শুধু তাই নয়, সোহার স্মৃতিচারণে উঠে এসেছে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিকও। তিনি জানান, তাঁদের বাবা মনসুর আলি খান পটৌদি এক সময় ধনী রাজপরিবার থেকে এসেছিলেন। এবং ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্রিকেটার। তবুও সংসারের মূল আয়-রোজগারের দায়ভার কাঁধে নিয়েছিলেন তাঁর মা, শর্মিলা।

এক সাক্ষাৎকারে সোহা স্মৃতির পাতা উল্টে বললেন, কীভাবে তাঁর মা শর্মিলা সংসারের আর্থিক দায়িত্ব সামলাতেন। অভিনেত্রী বলেন, “মা ছিলেন তিন বোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং দীর্ঘদিন ধরেই তিনিই পরিবারের রোজগারের মূল ভরসা ছিলেন। বিয়ের পরেও সংসারের আয় তিনিই করতেন। বাবা যদিও উত্তরাধিকারসূত্রে সম্পদ পেয়েছিলেন এবং ক্রিকেট খেলতেন, কিন্তু সেই সময় ক্রিকেটে তেমন আর্থিক উপার্জন ছিল না।”

সোহা তাঁর মায়ের কাজের প্রতি নিষ্ঠা আর দায়িত্ববোধকে ভীষণভাবে শ্রদ্ধা করেন। তাঁর কথায়, “মা কখনওই নিজের মতামত লুকিয়ে রাখেন না। তিনি যা ভাবেন, সেটাই সোজাসুজি বলে দেন। অনেক সময় কথাগুলো কঠিন বা কড়া মনে হতে পারে, কিন্তু আসলে তাতে সবসময় ভালবাসা থাকে। মা চান আমরা বাস্তবতাকে যেমন আছে তেমনভাবে মেনে নেই এবং সেই অনুযায়ী চলতে শিখি।”

তিনি আরও বলেন, শর্মিলা শুধু পরিবারের আর্থিক দায়িত্বই সামলাননি, বরং সন্তানদের বড় করতেও শৃঙ্খলা আর কঠোর পরিশ্রমকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর এই কঠোর কিন্তু ভালবাসা মিশ্রিত স্বভাবই সন্তানদের জীবনে বাস্তব শিক্ষা দিয়েছে এবং তাঁদের শক্ত ভিত গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে।

বৌদি করিনা কাপুর খানেরও প্রশংসা করতেও ভোলেননি সোহা। করিনাকে তিনি আজকের অতিরিক্ত সাজানো-গোছানো, ফিল্টার-ভরা দুনিয়ায় নিজেকে সত্যিকারভাবে তুলে ধরার সাহসী উদাহরণ বলে উল্লেখ করেন। সোহা বলেন,
“তিনি একজন বিশাল সুপারস্টার হয়েও নিজের মতো করে থাকতে স্বচ্ছন্দ। তিনি যা সকলের সঙ্গে যা ভাগ করে নেন, সেটাই বাস্তব আর সত্যি, আর আজকের এই অতিরিক্ত ফিল্টার করা জগতে আমি সেটা ভীষণভাবে শ্রদ্ধা করি।”

সোহার কথায় স্পষ্ট—তিনি পরিবারের নারীদের শক্তি, কর্মনিষ্ঠা আর আত্মবিশ্বাসকে গভীরভাবে শ্রদ্ধা করেন। মায়ের মতো দৃঢ়তা হোক বা বৌদির মতো সহজ অথচ সত্যিকারের আত্মপ্রকাশ—এই দু’দিক থেকেই তিনি অনুপ্রাণিত। নিজের অভিনয়জীবন নিয়েও সমানভাবে সক্রিয় সোহা প্রমাণ করছেন, পারিবারিক ঐতিহ্যকে সম্মান জানিয়েও কীভাবে স্বকীয় পথ তৈরি করা যায়।

অভিনয়ের প্রসঙ্গেও সোহা আলোচনায় আসেন। তিনি সম্প্রতি অভিনয় করেছেন বিশাল ফুরিয়ার হরর-থ্রিলার ‘ছোড়ি ২’ ছবিতে, যেখানে তাঁকে নেতিবাচক চরিত্রে দেখা গিয়েছে।