সান বাংলায় রমরমিয়ে চলছে 'বৃন্দাবন বিলাসিনী' ধারাবাহিক। এই ধারাবাহিকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র 'মোহিনী মা'। প্রথমে এই চরিত্রে তুলিকা বসুকে দেখা গেলেও বর্তমানে এই শো-এর সঙ্গে আর কোনওভাবে জড়িত নেই তিনি। এই চরিত্রেই এবার দেখা যাবে আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ইতিমধ্যেই এই ধারাবাহিকের প্রোমো শুট সেরে ফেলেছেন তিনি। জানা গিয়েছে, সেরে ফেলা হয়েছে কয়েকটি দৃশ্যের শুটিংও।

'হীরাম্মা'র পর এবার 'মোহিনী মা'? শোনামাত্রই উদাত্ত গলায় হেসে, আজকাল ডট ইন-কে সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, "আমি কৃতজ্ঞ 'মা' শেষ হওয়ার বছর দশেক পরেও দর্শক আমার অভিনীত ওই চরিত্রকে মনে রেখে দিয়েছেন। 'হীরাম্মা'র সঙ্গে 'মোহিনী মা'-এর কোনও মিল নেই। বরং 'ফুলকি' ধারাবাহিকে যে চরিত্রটিতে অভিনয় করছি, তার লুকের সঙ্গে খানিক মিল রয়েছে 'হীরাম্মা'র। যাক্, ফিরি 'বৃন্দাবন বিলাসিনী'র কথায়। প্রথমেই বলি, তুলিকা বসুর মতো একজন শক্তিশালী অভিনেত্রী যে চরিত্রে অভিনয় করতেন, সেই চরিত্রটিকেই দর্শকের সামনে নতুনভাবে ফুটিয়ে তোলা কিন্তু ভীষণ চ্যালেঞ্জিং। এরপর এই ইউনিটে আমি নতুন। যত দ্রুত সম্ভব মিলেমিশে যেতে হবে, নইলে সেই রসায়নের ফাঁকটা পর্দায় ধরা পড়বে। সবমিলিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করছি।"
অভিনেত্রীর উদ্দেশ্য প্রশ্ন ছিল, তাঁর 'মোহিনী মা' চরিত্রটি কি ধূসর না কি পুরোপুরি খলনায়িকা? এক নিঃশ্বাসে জবাব এল, " আউট অ্যান্ড আউট ব্ল্যাক। সমাজের চোখে 'মোহিনী মা' একজন কালীভক্ত, সাধিকা। অনেকে বিশ্বাস করেন, তাঁর অলৌকিক কিছু শক্তি আছে। কিন্তু আদতে এই মহিলা পুরোপুরি ভণ্ড! পাক্কা বুজরুক। স্রেফ বুদ্ধির মারপ্যাঁচ ও ধর্মকে হাতিয়ার করে মুনাফা করছে নিজের। মানুষের ভক্তিকে পুঁজি করে দু'হাতে অর্থ উপার্জন করছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে পুলিশমহলের কর্তা- সবার সঙ্গেই দারুণ দহরম মহরম এই 'মোহিনী মা'-এর। ফলে, বুঝতেই পারছেন, সাধারণ মানুষ তাঁকে ভয়-ভক্তি দু'টোই করে।"
সাধারণ মানুষ না হয় জানেন না, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী অথবা পুলিশকর্তারা এই 'মোহিনী মা'কে এত খাতির করেন কেন? অভিনেত্রীর সহাস্য জবাব, " বুজরুকি ছাড়াও 'মোহিনী মা'-এর নানান ব্যাপারে, নানান জায়গায়, সমাজের সব স্তরে পরিচিত ও কাজের লোক আছে। তাদের দিয়ে সে মন্ত্রীমহল এবং পুলিশমহলের কাজে লাগায়।" কথাশেষে সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংযোজন, " এ তো গেল বাইরের কথা। মোহিনী মায়ের বাড়ির অন্দরমহলটা কিন্তু খানিক আলাদা। পরিবারের সব সদস্যই তাঁর ভয়ে সন্ত্রস্ত। তবে নিজের ছেলে মোহিনীর অন্তঃপ্রাণ। পরিবারও।
এই পরিবারের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সেইজন্য সদা সতর্ক থাকে মোহিনী। পরিবারকে বাঁচাতে যা খুশি তাই করতে পারে সে। এবার, তাঁর ছেলের যে স্ত্রী সে আবার পরম কৃষ্ণভক্ত। এক ছাদের তলায় এক কৃষ্ণ ভক্তের সঙ্গে কালীভক্তের যে দ্বন্দ্ব তা ফুটে উঠবে এই ধারাবাহিকে। আবার, এও ঠিক একমাত্র ছেলের বউয়ের কাছেই খানিক শায়েস্তা হন মোহিনী মা। সুতরাং, তথাকথিত শাশুড়ি-বউমার 'মা-মেয়ে'র ব্যাপার কিন্তু নেই এখানে। তবে ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না..." ইঙ্গিতপূর্ণ হাসি হেসে বাকি কথা আর শেষ করলেন না সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শটের জন্য ডাক পড়েছে যে!
