করিশ্মা কাপুরের প্রাক্তন স্বামী এবং সোনা কমস্টারের চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাপুর গত জুনে মাত্র ৫৩ বছর বয়সে হৃদরোগে মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর থেকে পারিবারিক ব্যবসা এবং উত্তরাধিকারের জেরে শুরু হয়েছে তীব্র টানাপোড়েন। সঞ্জয়ের বোন মন্দিরা কাপুর অভিযোগ করেছেন, তাঁর শোকার্ত মাকে বন্ধ ঘরের আড়ালে একাধিকবার কাগজপত্রে সই করানো হয়েছে, যেখানে সঞ্জয়ের স্ত্রী প্রিয়া সচদেবও ছিলেন। মন্দিরার কথায়, “মাত্র ১৩ দিনের মধ্যে কোন কোন কাগজে সই করানো হল, তা আমাদের অজানা। আমি দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে মরিয়া হয়ে ধাক্কা দিচ্ছিলাম, আর মা তখন শোকে ভেঙে পড়েছিলেন।”

তিনি আরও বলেন, “ওই ঘরে আসলে দু’টো দরজা ছিল—একটা ভিতরে, একটা বাইরে। তাই আমার মা আমার আওয়াজ শুনতেই পাননি। শেষ কথা হল, শোকের মাঝেই তাঁকে কিছু কাগজে সই করানো হয়েছে। গভীর দুঃখে ভেঙে পড়া অবস্থায় তিনি পরে আমাকে এসে বলেন, ‘আমি জানিই না ঠিক কী কাগজে সই করেছি।’ সেই থেকে আমরা বারবার জানতে চাইছি, কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি। তাহলে আমাদের থেকে কী আড়াল করা হচ্ছে? আমার বিশ্বাস, একদিন না একদিন সব প্রকাশ পাবে, আর সত্যিটাই সামনে আসবে।”

মন্দিরা জানান, তিনি নিজে প্রিয়ার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেননি, তবে তাঁর মা কাগজপত্র দেখতে চেয়ে প্রিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। প্রিয়া সেগুলি পাঠিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনও পর্যন্ত মা–মেয়ে কিছুই পাননি। সঞ্জয়ের বোনের অভিযোগ, “আমরা যাদের কাছে কাগজপত্র চেয়ে লিখেছি, তারা বলছে, মায়ের ইমেল নাকি হ্যাকড হয়েছে, তাই কিছু পাঠানো সম্ভব নয়।” উল্লেখ্য, প্রিয়া সচদেব বর্তমানে সোনা কমস্টারের নন–এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর।
মন্দিরা এবং সঞ্জয়ের সম্পর্ক একসময় তিক্ত হয়ে উঠেছিল। এখন তিনি মায়ের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি বলেন, “হ্যাঁ, ভাই–বোনের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে তো একসঙ্গে কাটানো চল্লিশ বছরের সম্পর্ক মুছে যায় না। আমি তো ড. কাপুরের মেয়ে। তবে কেন আমি আমার মায়ের জন্য লড়ব না? আর এরা কারা, যারা হঠাৎ এসে দাবি জানাচ্ছে?”

মন্দিরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—তাঁর ফিরে আসার উদ্দেশ্য উত্তরাধিকারের দাবি নয়, কিংবা ব্যবসায়িক ব্যর্থতা ঢাকাও নয়। তিনি বললেন, “কে বলেছে আমার ব্যবসা ভাল চলছে না? এ ঘটনার পর প্রতিদিনই আমার সম্পর্কে নতুন নতুন গল্প বানানো হচ্ছে। আমি সম্পত্তির জন্য লড়ছি না, লড়ছি উত্তরাধিকার রক্ষার জন্য। যে কিছু গড়ে তোলে, সে-ই জানে তার প্রকৃত মূল্য। বাইরে থেকে শুধু টাকার অঙ্কটাই চোখে পড়ে। কিন্তু আমাদের কাছে এই ব্র্যান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে আছে আবেগ, স্মৃতি আর আত্মার টান।”