অফিসে ছুটি চাইতে গেলেই মাথায় ঘুরে যাওয়ার জোগাড়। জ্বর এসেছে, বিয়েবাড়ি আছে”, বা ঘরে কাজ চলছে— এরকম কত অজুহাতেরই না অবতারণা করতে হয়! কিন্তু সে সবের দিন বুঝি গেল। গুরুগ্রামের এক তরুণ কর্মী এমন এক খোলামেলা ই-মেল লিখেছেন ছুটির জন্য, যা পড়ে সিইও পর্যন্ত হেসে গড়াগড়ি। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় এখন সেটাই হট টপিক!

মনের ব্যথা সারাতে ছুটি নিয়েছেন এক তরুণ কর্মী। আর তা নিয়ে কোনও রাখঢাক নেই। প্রেম ভাঙার যন্ত্রণায় কী আর অফিসের কাজে মন বসে! তাই সেই শোকাতুর যুবক ১২ দিনের ছুটি চেয়ে নিয়েছেন। এমন দৃষ্টান্ত বিরল, তবে অসম্ভব যে নয়, তা আবারও প্রমাণিত।

গুরগাঁওয়ের নট ডেটিংয়ের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও জসবীর সিংহ এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ সেই ই-মেলের স্ক্রিনশট শেয়ার করে লেখেন, ‘জেন জি কোনও ফিল্টার লাগায় না’—মানে, নতুন প্রজন্ম একদমই মুখোশ পরে না। তাঁর দাবি, এটি তাঁর পাওয়া ‘সবচেয়ে সৎ ছুটির আবেদন।’

ই-মেলটিতে সেই কর্মীটি সরাসরি লিখেছেন, ‘সম্প্রতি আমার ব্রেকআপ হয়েছে। কাজের দিকে মনোযোগ দিতে পারছি না। আজ বাড়ি থেকে কাজ করছি, তবে ২৮ তারিখ থেকে ৮ তারিখ পর্যন্ত একটু ছুটি নিতে চাই।’
কর্পোরেট ই-মেলের বাঁধাধরা আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং নিখাদ আবেগ এবং সততা দিয়েই ছুটি নেওয়ার কারণ লিখেছেন তিনি। যা মুহূর্তেই ছুঁয়ে যায় নেটিজেনদের মন।
একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, ‘এইটা একদম ঠিক আছে। আরও ভালো হত, যদি কারণই না- বলত!’

আরেকজন মজা করে লিখেছেন, ‘লোকজন নিজেদের বিয়ের জন্যও এতদিনের ছুটি নেয় না।’ তাতে জবাব দিয়েছেন সিইও জসবীর নিজেই। রসিকতা করে লিখেছেন, ‘কিন্তু আমার মনে হয়, ব্রেকআপের পর বিয়ের চেয়েও বেশি ছুটি দরকার!’

জেন জি কর্মীর মনের ব্যথা বুঝে কি শেষমেশ তাঁকে ছুটি দিলেন বস? প্রশ্ন ছুড়ে দেন এক নেটিজেন। জসবীর জানান, দেরি না করে তিনি তৎক্ষণাৎ সেই ছুটির আবেদন মঞ্জুর করেছেন।

নেটিজেনরা প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন সিইওকে তাঁর মানবিক ও সহানুভূতিশীল আচরণের জন্য। অনেকেই বলছেন, এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার—নতুন প্রজন্ম কাজের মতোই মানসিক স্বাস্থ্যের মূল্যও সমানভাবে বোঝে।

এই ঘটনাই যেন নতুন যুগের কর্মসংস্কৃতির আয়না — যেখানে সততা আর আবেগ আর দুর্বলতা নয়, বরং শক্তির পরিচয়। সেই তরুণ কর্মীর খোলামেলা আবেদন আর সিইওর সহানুভূতিশীল প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে দিল, অফিস মানেই শুধু ডেডলাইন নয়, অনুভূতিরও জায়গা আছে সেখানে।