আজকাল ওয়েবডেস্ক: হোসে রামিরেজ ব্যারেটোর আজ জন্মদিন। মোহনবাগান সুপারজায়ান্টের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে লেখা হয়েছে, ''শুভ জন্মদিন স্বপ্নের জাদুকর, আমাদের সবুজ তোতা, আমাদের প্রিয় - জোসে রামিরেজ ব্যারেটো।'' মোহনবাগানের নব্য বিদেশি তারকা রবসন রবিনহো সবুজ তোতাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন

আর তিনি মাধব দাস? ২০০৭-এর ডার্বিতে 'মিস্টার মোহনবাগান'-এর সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন দীঘল চেহারার প্রাক্তন ডিফেন্ডার। তিনি কী বলছেন ব্যারেটোকে? মাধবের সঙ্গে যখন যোগাযোগ করা হল, তখন তিনি সদ্য অফিস লিগে ম্যাচ খেলে উঠেছেন। ব্যারেটোর জন্মদিনের কথা শুনেই এই প্রতিবেদককে থামিয়ে বলে উঠলেন, ''ব্যারেটোকে অনেক শুভেচ্ছা। খুব ভাল থাকুক ও। আগামিদিনগুলো ভীষণ সুন্দর কাটুক। বড় ভাল ছেলে।''

আরও পড়ুন: পেয়েছিলেন কোচের বাহবা, 'তুমি মেহতাবের থেকেও বড় ফুটবলার', ইস্টবেঙ্গল ও সাদা-কালোর মিডফিল্ডারের সম্বল এখন অতীত আর আক্ষেপ

মাধব কি ভুলে গিয়েছেন সেই অধ্যায়? ইস্ট-মোহনের বারুদে ঠাসা সেই মহাম্যাচের পরে লাল-হলুদ শিবির থেকে ব্যারেটোর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বলা হয়েছিল, তিনি মাধবকে থুতু দিয়েছেন। অন্যদিকে ব্যারেটোর অভিযোগ ছিল, মাধব তাঁর পিঠে আঁচর লাগিয়েছেন

ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ডিফেন্ডার বলছেন, ''ব্যারেটোকে আমি মোটেও আঁচড় দিইনি। অন্য কোনওভাবে ওর পিঠে লেগে থাকবে। তবে আমি খেয়াল করেছিলাম, খেলার শুরু থেকেই ব্যারেটো বিরক্ত হয়ে পড়ছিল আমার কভারিংয়েশেষমেশ আমাকে থুতু দিয়ে বসে। আমার কল্পনাতেও ছিল না ব্যারেটোর মতো একজন খেলোয়াড় আমাকে থুতু দেবে। আমি অ্যালভিটোকে জানিয়েছিলাম সব।'' 

সেই ডার্বিতে মোহনবাগান ৪-৩ গোলে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। মাধব দাস ও ব্যারেটোকে নিয়ে তীব্র বিতর্ক হয়েছিল। তার পর অবশ্য কেটে গিয়েছে দীর্ঘ আঠেরো বছর। গঙ্গা দিয়েও গড়িয়ে গিয়েছে বহু জল। মাঝে কি আর ব্যারেটোর সঙ্গে সাক্ষাহয়েছিল মাধবের?

প্রাক্তন ডিফেন্ডার বলছেন, ''এই তো রামপুরহাটে আমাদের প্রাক্তনদের খেলা ছিল কয়েকদিন আগে। সেখানেই ব্যারেটোর সঙ্গে দেখা হয়েছিলব্যারেটো আমাকে দেখে জড়িয়ে ধরেছিল। সরিও বলেছিল। ও খুব ভাল ছেলে। কারওর সঙ্গে ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট করেনি কোনওদিন। আর মনের দিক থেকে বড়মাপের বলেই সরি চেয়েছিল''

সেই ডার্বি ম্যাচের পরে ময়দানে ম্যান মার্কিংয়ের পরিবর্তে নাম হয়ে গিয়েছিল 'মাধব-মার্কিং'। সম্পূর্ণ অন্য এক কারণে মাধবের নাম জড়িয়ে পড়েছিল। এহেন মাধব বলছেন, ''ওসব নিয়ে চিন্তা করি না। ইউটিউবে ম্যাচটা মাঝে মাঝে দেখি। ব্যারেটো আর আমার লড়াইটাও দেখি। আমার কোচ বলেছিলেন ব্যারেটোকে মার্কিং করতে হবে। আমি তাই করেছিলাম''

তবে মাধব যে প্রথমবার ব্যারেটোকে ম্যান মার্কিং করেছিলেন তা নয়। আগেও তিনি অনেক ফুটবলারকেই মার্কিং করেছেন। সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করে মাধব বলছেন, ''ভ্রাতৃ সংঘে খেলার সময়ে মাইক ওকোরোকে মার্কিংয়ের দায়িত্ব আমার উপরে পড়েছিলওকোরো তখন ইস্টবেঙ্গলে। পরে মহমেডানে খেলার সময়েও ফেডারেশন কাপ ফাইনালে মাহিন্দ্রার এক বিদেশিকে মার্কিংয়ের দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছিলভয়ডর আমার কমই ছিল। কোচ যা চাইতেন আমার কাছ থেকে, আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করতাম''

মাধব ও ব্যারেটোর পুরনো তিক্ততা এতদিনে ধুয়ে মুছে গিয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তন ডিফেন্ডার বলছেন, ''যতজন বিদেশি এসেছে, তাদের মধ্যে ব্যারেটো একেবারেই অন্যরকমের। ও যে দলের হয়ে খেলত, সেই দলের জন্য জীবন দিয়ে দিত। নীচে নেমে এসে সাহায্য করত ডিফেন্সকেদায়বদ্ধতার আরেক নাম কিন্তু ব্যারেটো''

একসময়ের বিতর্কিত প্রতিপক্ষ সম্পর্কে এমন দরাজ সার্টিফিকেট 'জন দিতে পারেন! সিংহহৃদয় না হলে দেওয়া সম্ভবই নয়।

আরও পড়ুন: ইরফানের বিস্ফোরণ, ধোনির হুকা মিম ছড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়