সম্পূর্ণা চক্রবর্তী: কলকাতায় পরপর জোড়া ডুরান্ড জয়। ব্যাক টু ব্যাক সর্বোচ্চ গোলদাতা। এবার জোড়া পুরস্কারের মালিক। সোনার বল এবং সোনার বুট। কলকাতায় এত সাফল্যের রহস্য কী? আলাদিন‌ আজারাই জানিয়ে দিলেন, কলকাতা তাঁর পয়া মাঠ। তাহলে কি ভবিষ্যতে কলকাতায় খেলতে দেখা যাবে দেশের সেরা বিদেশিকে? আজারাই বলেন, 'এই স্টেডিয়াম আমাদের জন্য খুবই পয়া। আমি জানি না। আমার নিজের দলের সঙ্গে চুক্তি আছে। আমি নিজেকে এবং দলকে সম্মান করি। আমি এই দলটাকে খুব ভালবাসি। তাই আমি জানি না ভবিষ্যতে কী হবে। শুধু ভগবানই জানে। দেখব পরে কী হয়।' 

যুবভারতী থেকে বেরোনোর সময় সমর্থকদের সেলফির আবদারে ঘেরাও হয়ে যান আজারাই। নর্থ ইস্টের তারকা প্লেয়ারকে নিয়ে মেতেছে কলকাতা। টানা দু'বছর ধরে সাফল্যের শিখরে। এই সাফল্যের রহস্য কী? আজারাই বলেন, 'আমি জানি না সাফল্যের রহস্য কী। ভগবানকে ধন্যবাদ জানাব।' ম্যাচের সেরা আলাদিন। টুর্নামেন্টে সোনার বল এবং সোনার বুটও পান। কাকে উৎসর্গ করবেন? আজারাই বলেন, 'এই পুরস্কার আমার মেয়ে সোফিয়াকে উৎসর্গ করতে চাই।' 

সাংবাদিক সম্মেলন চলাকালীন এক অভিনব দৃশ্যের সাক্ষী থাকল যুবভারতী। মনে করিয়ে দেয় ২০১৮ সালে ফ্রান্সের বিশ্বকাপ জয়কে। তখন সবে সাংবাদিক সম্মেলন শুরু করেছেন জুয়ান পেদ্রো বেনালি। পাশে বসে জাবাকো। আচমকা ছুটে এসে পেছন থেকে দু'জনকে ঘিরে ধরে দলের বাকি ফুটবলাররা। শ্যাম্পেনের বদলে জল দিয়েই চলে সেলিব্রেশন। কোচ এবং অধিনায়কের গায়ে জল ছিটিয়ে দেওয়া হয়। দু'জনেই অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে। কিন্তু সেলিব্রেশন উপভোগ করেন। ডায়মন্ড হারবারকে ছয় গোলের মালা পরানো সত্ত্বেও, কিবু ভিকুনার দলের প্রশংসা করেন নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের কোচ। জানান, কলকাতার দলকে ভবিষ্যতে আইএসএলে দেখতে চান। বেনালি বলেন, 'জিতে ভাল লাগছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়া সম্মানের। তবে ওদের দলের মান অনুযায়ী, রেজাল্ট ৬-১ হওয়া উচিত হয়নি। ৩-১ হতে পারত। তবে এটাই ফুটবল। একটা দলকে জিততেই হবে। ডায়মন্ড হারবার ফাইনালে উঠেছে। খুবই ভাল দল। আশা করছি ভবিষ্যতে ওদের আইএসএলে দেখব। দিনটা ওদের ছিল না। ওদের কোচ খুবই ভাল। শক্তিশালী দল। ভাল প্লেয়ার রয়েছে। ওদের ভবিষ্যত উজ্জ্বল।' ম্যাচ শেষে যুবভারতীতে আবেগে ভাসেন জন আব্রাহাম। আগের বছর মোহনবাগানকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দিনও উপস্থিত ছিলেন। এদিন জয়ের পর দলের সঙ্গে সেলিব্রেশনের অঙ্গ হন। নর্থ ইস্টের মালিকের বিশেষ প্রশংসা করেন বেনালি। 

ম্যাচ হেরে স্বাভাবিকভাবেই হতাশ কিবু ভিকুনা। তবে এটাকে নিজের কোচিং জীবনের সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স মনে করছেন না। ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে আশাবাদী। একটা সময় পর্যন্ত লড়াইয়ে ছিল ডায়মন্ড হারবার। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষে ম্যাচ থেকে হারিয়ে যায়। ডায়মন্ড হারবার কোচ মনে করেন, দ্বিতীয় স্থানে শেষ করা কৃতিত্বের। কিবু বলেন, 'হার যন্ত্রণার। ওরা সুযোগ কাজে লাগিয়েছে, আমরা পারিনি। প্রথম গোল পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। একটা সময় পর্যন্ত খেলাটা ওপেন ছিল। তবে প্রথমবার খেলেই দ্বিতীয় স্থানে শেষ করা কৃতিত্বের।' হারের পর ভারতীয় ফুটবলের সমালোচনা করেন হায়মন্ড হারবারের কোচ। সূচি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।