আজকাল ওয়েবডেস্ক: আইএফএ-র তরফে কল্যাণীতে ডার্বি দেওয়ার পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল আদৌ কি ‘যুবভারতীর মতো কল্যাণীতে ডার্বি আয়োজনের পর্যাপ্ত পরিকাঠামো আছে’? কল্যাণী ডার্বি আয়োজনে পাশ করল সেটা বলতে গেলেও এখনও একদিন অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু আয়োজনে যে কোনও ত্রুটি নেই তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কলকাতা ডার্বিকে কেন্দ্র করে নতুন ভাবে সেজে উঠছে কল্যাণী। স্টেডিয়াম চত্বরে সমর্থকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে একাধিক ব্যবস্থা। দু’দলের সমর্থকদের জন্য দুটি ভিন্ন দিকে ঢোকার গেট করা হয়েছে। এদিন দফায় দফায় স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব নবাব ভট্টাচার্য।
তিনি জানান, ‘নিরাপত্তার দিকে আমাদের নজর রয়েছে। এসপির সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। কল্যাণী থানার আইসিও যথেষ্ট সাহায্য করছেন। ব্যাপারটা হচ্ছে, মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গলের পুরো ব্যাপারটাই আলাদা আলাদা করা হয়েছে। একদিকে মোহনবাগান, সম্পূর্ণ অন্যদিকে ইস্টবেঙ্গল। কারওর সঙ্গে কারওর দেখা না হওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি। স্টেশনে গিয়ে দু’দলের সমর্থকদের দেখা হবে। তার আগে কোনও দেখা হওয়ার চান্স নেই’। তবে ডার্বিকে ঘিরে উত্তেজনার কোনও খামতি নেই কল্যাণী জুড়ে। সচরাচর যুবভারতীতে ডার্বি পড়লে অনেকেই আসতে পারেন না। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেককেই ম্যাচের আগের দিন স্টেডিয়ামের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে দেখা গেল। অনেকে আবার টিকিটের খোঁজে ঘুরে গেলেন স্টেডিয়াম চত্বর।
নবাব ভট্টাচার্যও জানালেন, ‘টিকিটের এত চাপ, এত লোকের চাহিদা। ম্যাচের আগের দিন প্রচুর মানুষ টিকিটের খোঁজে এসেছেন। পুলিশ অনুমতি দেয়নি সে কারণে সীমিত দর্শকেই ডার্বি করতে হচ্ছে। নইলে আরও দু-চার হাজার মানুষ তো এমনিই হত। তবে অনুমতি না দিলে তো কিছু করার নেই, আইন মেনে চলতে হবে। এই মুহূর্তে মাঠ পুরো রেডি, আশেপাশের পরিবেশও রেডি, এখন অপেক্ষা শুধু ম্যাচ শুরুর। তবে টিকিটের যা চাহিদা, শুধু কল্যাণীর মানুষই পুরো মাঠ ভরিয়ে দেবেন’। আশেপাশের ব্যবসায়ীরা ডার্বির কথা মাথায় রেখে বেশি করে মালপত্র তুলে রেখেছেন, বিশেষ করে জলের বোতল এবং খুচরো খাবার। মাঠের ভিতর খাবারের ব্যবস্থা থাকলেও বাইরেও প্রচুর ভিড় হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সে কারণেই কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না কেউই। কল্যাণী স্টেডিয়ামে যে কোনওদিন মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল হবে সেটা কেউই ভাবতে পারেনি। নবাব ভট্টাচার্যও একই কথা জানালেন। বললেন, ‘কল্যাণী স্টেডিয়ামে ডার্বি হবে এটা সত্যিই কোনওদিন আশা করিনি। যখন প্রথম দিকে আমি কল্যাণী স্টেডিয়ামে আসি তখন এটা সম্পূর্ণ অন্যরকম ছিল। আমার মনে হয় এটা পুরোপুরি নীলিমেশ রায়চৌধুরীর কৃতিত্ব যে কারণে এখানে কলকাতা ডার্বি কল্যাণীতে হচ্ছে। অবশ্যই, আইএফএ সচিবও অনেক সাহায্য করেছেন। কিন্তু কৃতিত্বটা নীলিমেশ রায়চৌধুরীর, উনি একটা স্বপ্ন দেখতেন যে কল্যাণীতে ডার্বি করবেন, সেটা অবশেষে হচ্ছে’।
কলকাতা ডার্বির আগে কল্যাণী স্টেডিয়ামে ঢোকার মুখে লাগানো হয়েছে অস্থায়ী কোলাপসিবল গেট। গেটের বাইরে এবং স্টেডিয়ামের অন্যান্য অংশ জুড়ে ৩৬টি সিসিটিভি লাগানো হয়েছে। সমর্থকদের জন্য গ্যালারির পাশে মোট তিনটি অস্থায়ী মেডিক্যাল সেন্টার থাকছে। থাকছে ফুড স্টল, জলের কাউন্টার। ব্রডকাস্টারদের ক্যামেরা রাখার টাওয়ার ও ব্যারিকেডের কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। শেষ মুহূর্তের কিছু কাজ শুক্রবার শেষ করা হচ্ছে। গ্যালারির দু’ধারে ফেনসিং বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আলোর যাতে ঘাটতি নাহয় সেই জন্য গ্যালারিতেও বাড়তি আলোর ব্যবস্থা থাকছে।
